৫৮।
হাতের কাপটা নিয়ে বাইরে থেকে শব্দ আসা জানালার পাশে দাঁড়ালেন। তখন দিনের বেলা যে পাব দেখেছিলেন সেই পাবের সামনে মহিলা পুরুষ মিলে দশ বারোজন। এর মধ্যে আবার কেও ভিতরে যাচ্ছে কেও বাইরে আসছে। এদেরই হৈ চৈ। পাবের ভিতর উচ্চ শব্দের বাজনাও শোনা যাচ্ছে। কাল পরশু ছুটি তাই আজ কাজের শেষে পানের উন্মাদনায় মেতে উঠেছে। এই জন্যই তাহলে এখানে শুক্র শনি বারে এতো ব্যস্ত! এই হলো এদের আনন্দ ফুর্তি। এরা তাহলে আনন্দের জন্য ভিড় করে পাব আর নাইট ক্লাবে? আর আমাদের দেশে এমন দুই দিন ছুটি পেলে ভিড় দেখা যায় বাস আর লঞ্চে। সবাই ছুটে যায় নিজ নিজ আপন জনের কাছে। এরা আনন্দ ভোগ করে নিজে নিজে, একা একা আর আমরা করি সবাইকে নিয়ে অন্তত আপনজনকে নিয়ে। এই জন্যেই আমাদের এতো কষ্ট। এদের আঘাত করার কেও থাকেনা আর আমরা আঘাত পাই পায়ে পায়ে। মানে আপন জনের কাছে যেমন করে যা আশা করি ঠিক তেমন করে তা পাওয়া হয়ে উঠে না একটু হয়তোবা এদিক সেদিক হয়ে যায় হয়তো আমি ঠিক যেভাবে যা চাইছি সেভাবে পাইনি তাই বলে একেবারে যে পাইনি তা নয় হয়তো বা বেশিই পেয়েছি তখন ব্যবধানটা হয়ে দাঁড়ায় শুধু অভিমানের। আর এদের বেলায় ব্যাপারটা ভিন্ন এদের তো কারো কাছ থেকে কিছুই পাবার নেই যা করছে তা নিজেই করছে নিজের কাছ থেকেই আনন্দ বা দুঃখ যাই হোক পাচ্ছে। সারা রাত পান করে নিজের অনুভব অনুভূতি হারিয়ে ফেলে ভাবছে সব পেয়েছি, কিছুই অবশিষ্ট নেই।
৫৯।
নিচে থেকে ডাকছে, দুইটা বেজে গেছে! হ্যাঁ তাইতো, ওদিকে পাবের সামনের জটলা কমে গেছে ভিতরের বাজনাও থেমে গেছে। দুই এক জন করে পাব থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। রাশেদ সাহেব নিচে নেমে এলেন সেহেরি খাবার জন্যে। দুই এক জন করে সবাই নেমে এলো। সবাই যা করছে সেফ এর পিছনের লম্বা টেবিলের মত তার নিচের সেলফে ভাত তরকারির ডেকচি ওখান থেকে যার যার মত ভাত তরকারি নিয়ে পিছনের মাইক্রোওয়েভে গরম করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই খাচ্ছে। পানি খাবার কোন গ্লাস নেই। যে কন্টেইনারে করে টেক এওয়ে নিয়ে যাবার ভাত দেয় সেটাতে করে পানি নিয়েছে সবাই। রাশেদ সাহেব গত রাতে যে গ্লাসে কোক খেয়েছিলেন সেখান থেকে একটা গ্লাস ধুয়ে তাতে পানি নিয়ে এক পাশে টেবিলের উপর ভাতের প্লেট নামিয়ে আস্তে আস্তে খেতে শুরু করলেন। কবির বললো –
-কি ভাই বাড়ির কথা মনে হইতেছে? খান না কেন?
-খাচ্ছি তো। আমি এতো তাড়াতাড়ি খেতে পারিনা একটু আস্তে আস্তেই খাই।
-ও আচ্ছা ঠিক আছে খান খাওয়া হলে এগুলি ঢেকে রেখে লাইট নিভিয়ে আসবেন। আমরা তাহলে যাই।
সেহেরি শেষ করে কবির যেভাবে বলেছে সেই ভাবে সব রেখে এক কাপ চা নিয়ে উপরে এসে বিছানার উপর বসে ওষুধের প্যাকেট বের করলেন। ওহ! পানি তো আনা হয়নি! আবার নিচে গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে এলেন। একটা জগ বা অন্তত একটা বোতল হলে পানি এনে রাখা যায়। দেখি কাল সকালে কবির বা নুরুল ইসলামকে বলে ব্যবস্থা করা যাবে। এখন এ ভাবেই চলুক। ওষুধ খেয়ে চায়ের কাপে চুমুক দিলেন। বালিশের নিচে থেকে তামাকের প্যাকেট বের করে একটা সিগারেট বানিয়ে জ্বালালেন।
বাড়িতে খুকু তার দুই বোনকে নিয়ে কি করছে? না খুকুকে নিয়ে এতো ভাবার কিছু নেই মনে হয়। খুকুর ছোট খালা আর নানুকে রেখে এসেছে তারা ভালই আছে। রাত প্রায় তিনটা বাজে। না এখন ভাবার সময় নেই। চা শেষ, সিগারেটটায় শেষ টান দিয়ে এ্যাশট্রেতে ফেলে দিয়ে শুয়ে পরলেন। কম্বলটা টেনে নিয়ে স্বভাব মত ডান দিকে কাত হয়ে শুয়ে পরলেন। এমন সময় নুরুল ইসলাম এসে বললো –
-কি ভাই ঘুমিয়ে পরেছেন?
-না এখনও ঘুমাইনি।
নুরুল ইসলাম কি যেন বলছিলো কানে ঢুকেছিলো কিন্তু জবাব দেয়া হয়নি। সারা দিনের ক্লান্তি আর অবসাদে কখন যে শ্রান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পরেছে তা আর বুঝতে পারেনি।
loading...
loading...
নক্ষত্রের গোধূলি'র ৪৩ তম পড়লাম বন্ধু। সালাম জানবেন। আশা কবেো ভালো আছেন।
loading...
আলহামদুলিল্লাহ, ভাল আছি জনাব। আপনার কি অবস্থা?
loading...
সালাম দাদা ভাই
আবার দেখা হলো নক্ষত্রের গৌধুলীতে…
বেশ ভালোই জমেছে দেখছি
।
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন…।
loading...
সালাম জনাব। নক্ষত্রের গোধূলিতে আপনাকে সুস্বাগতম।
loading...
শুভেচ্ছা জানবেন কবি খালিদ ভাই।
loading...
আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা প্রিয়।
loading...
সরল স্বীকারোক্তি। পড়ললাম ভাই।
loading...
ভাল ভাল! কেমন আছেন?
loading...
আছি খালিদ ভাই।
loading...
আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ!
loading...
অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
loading...
শুভেচ্ছা এবং সকল রকমের শুভকামনা প্রিয় দিদি। ভাল আছেন?
loading...
কয়েকটি পর্ব বোধহয় বাদ পড়ে গেছে। সময় করে পড়ে নিতে পারবো।
loading...
সারা দিনের ব্যস্ততা আর ক্লান্তিতে কিছু বাদ পরে যেতেই পারে। তবুও সঙ্গে আছেন তাই ভাল লাগে।
loading...