নক্ষত্রের গোধূলি-৩৭

৫২।
-এখানে লোক জন এই ভাবেই কথা বার্তা বলবে কিছু মনে করবেন না এখানে এই রকমেই চলে।
কবির মালামাল গুলি দেখিয়ে বললো-
-যখন এই সব জিনিস নিতে বলব তখন এখান থেকে নিয়ে যাবেন। আপনাকে দেখেই বুঝেছি আসলে এই কাজ তো আপনার জন্য না কিন্তু কি করবেন এসেই যখন পরেছেন করতে তো হবে। আমি আপনাকে সব দেখিয়ে দিবো আজ তো শুক্র বার আজ কোন রকমে চালিয়ে নেন। শুক্র আর শনি বার এখানে খুব বিজি হয় সবাই ব্যস্ত থাকে সবার মাথা গরম থাকে তাই কে কি বলে না বলে হুস থাকে না। এই দুই দিনেই যত ব্যস্ত সপ্তাহের অন্য দিনে কিন্তু এত ব্যস্ত থাকবেনা।
রাশেদ সাহেব এতক্ষণে শুক্র বারের মহাত্ম বুঝতে পারলেন।
-এই যে দেখে নেন এখানে কি কি আছে। আন্দাজে খোঁজা খুঁজি করবেন না, সময় নষ্ট হবে এতে সেফ বা সবার মেজাজ গরম হবে। ওই যে কিচেনের পিছনে যে স্টোর ওখানে কি থাকে এখানে কি থাকে এগুলি মনে রাখবেন বলার সাথে সাথে নিয়ে দিবেন কাজ সহজ হবে কষ্ট কম হবে সময় কম লাগবে। দেখলেন তো এখন চলেন একটু রেস্ট নিবেন ও হ্যাঁ রোজা আছেন তো? আচ্ছা তা হলে আজকে তো তিনটা তেপ্পান্ন মিনিটে ইফতার তখন নিচে চলে আসবেন ইফতারের জন্য। আর রেস্টুরেন্ট খুলবে সারে পাঁচ টায় আপনি পাঁচ টায় নিচে নেমে আসবেন তখন বলে দিব এসে কি করতে হবে। আমি আপনার কাছেই থাকব।
-ভাই আমাকে বলে দিবেন কি ভাবে কি করতে হবে বুঝতেই তো পারছেন একেবারে নতুন এর আগে তো কখনও এমন কিছু করিনি।
-ভাববেন না এরকম হয় কে আর সব কিছু শিখে আসে এদেশে এখানে এসেই সবাই শিখে আমরা দেশে কি কেও কখন এই সব কাজ করেছি? হ্যাঁ আপনার কষ্ট হবে তবে আবার সুবিধাও আছে।
-কি সুবিধা?
-না মানে আপনি তো ইংরেজি পড়তে পারেন বলতে পারেন ইংরেজি পড়তে পারলে অনেক সুবিধা। চলেন উপরে চলেন ঠিক ঠাক করে নেন আবার কিন্তু পাঁচ টায় নামবেন দেখবেন ডাকাডাকি যেন করতে না হয়।
-আচ্ছা ঠিক আছে চলেন।
উপরে এসে সেই রুমে ঢুকে দেখে সবাই শুয়ে পড়েছে।
-আপনার মাল পত্র নিয়ে চলেন আমার সাথে।
লাগেজ দুটা তখন খুলতে হয়েছিলো সেটা আবার বন্ধ করে নিয়ে কবিরের সাথে উপরে উঠে এলো। এখানে নিচের ওই মাপের আর একটা রুম তবে এটির অবস্থা ওই রকম না। প্রায় খালি আর ওই দুর্গন্ধটা নেই তবে ঘরটা ঠাণ্ডা মনে হলো। যাই হোক, এখানে দুইটা বিছানা।
-নেন এখানে এই বিছানা আপনার, ওই বেডে আমাদের এক ওয়েটার ভাই থাকে আপনি এখানে থাকবেন।
এই বলেই আচ্ছা পরে কথা হবে বলেই কবির চলে গেলো। কবির চলে যাবার পর রাশেদ সাহেব চোখ ঘুরিয়ে ঘরটা দেখে জানালার কাছে দাঁড়ালেন। বাইরেটা দেখা যাচ্ছে, যে রাস্তা দিয়ে সে এসেছেন। রাস্তার ওপাড়ে একটা লন্ড্রি, একটা পাব আর একটা রিয়েল এস্টেটের অফিস। কয়েকটা গাড়ি ডান থেকে বামে, কয়েকটা বাম থেকে ডানে চলে যেতে দেখলেন। না এভাবে দাঁড়িয়ে আমার তামাশা দেখার সময় নেই। ঘরের ভিতর একটা বড় গোল টেবিল আর একটা চেয়ার এই রয়েছে আসবাব। কোন আয়না নেই। ব্যাগ খুলে হেয়ার ব্রাশ, তামাকের প্যাকেট, লাইটার, ক্রিম লোসনের টিউব বের করে টেবিলের উপর রেখেই মনে হলো সিগারেটের ছাই ফেলার কিছু দরকার। এদিক ওদিক তাকাতেই একটা এ্যাশট্রে পেয়ে টেবিলের উপর এনে রেখে দুএকটা প্যান্ট সার্ট রাখার জায়গা খুঁজে না পেয়ে আর কিছু বের করলেন না। শুধু বিছানার ময়লা চাদর, বালিশের কভার বদলে নিলেন। মনি দিয়ে গিয়েছিলো একটা চাদর আর দুই টা বালিশের কভার তাই দিয়ে। এগুলি বদলে একটু বিছানায় বসেছে ওমনি নিচে থেকে ডাক এলো-
-নয়া ভাইছাব নিচে আসেন ইফতারের টাইম হইছে।

রাশেদ সাহেব বের হলেন। কোথায় বাথরুম টয়লেট দেখা হয়নি। দেখা দরকার। একটু চাপ বোধ হচ্ছে। সারাদিনে তো আর মনে হয়নি। রুম থেকে বের হয়ে যে পথে উপরে উঠেছি্লেন তার পাশ দিয়ে দেখে একটা প্যাসেজ। এগিয়ে যেতেই দেখলেন। নাহ, আর যাই হোক অন্তত টয়লেটটা পরিষ্কার আছে। ওখানে কাজ সেরে নিচে নেমে কিচেনে কাউকে দেখা গেল না কিন্তু পাশেই কোথাও কথার শব্দ পেয়ে বুঝল রেস্টুরেন্টের ভিতর হবে হয়ত। হ্যাঁ তাই, ওখানেই একটা বড় টেবিলে পাঁচ/ছয়জন ইফতারের আয়োজন করছে।
[রাশেদ সাহের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমা যতদিন চলবে ততদিন এই উপন্যাস চলতেই থাকবে, কবে শেষ হবে আমাদের জানা নেই।]

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১১ টি মন্তব্য (লেখকের ৫টি) | ৬ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০১-১২-২০১৯ | ১৫:২৪ |

    রাশেদ সাহের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমা কবে শেষ হবে আমাদের জানা না থাকলেও আমি পাঠক হিসেবে আছি বন্ধু। Smile

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ০২-১২-২০১৯ | ১৪:৪০ |

      দীর্ঘ পথ পরিক্রমা কবে শেষ হবে সে কি আমি নিজেই জানি বন্ধু? তিনি আর কতদিন এভাবে চলবে জেনে জানাব।

      GD Star Rating
      loading...
  2. রিয়া রিয়া : ০১-১২-২০১৯ | ২০:৫২ |

    ৩৭তম পর্ব পড়লাম। 

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ০২-১২-২০১৯ | ১৪:৪১ |

      পড়ালেখা করা ভাল। পড়তে থাকুন।

      GD Star Rating
      loading...
  3. সুমন আহমেদ : ০১-১২-২০১৯ | ২০:৫৭ |

    রাশেদ সাহের দীর্ঘ পথ পরিক্রমা। 

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ০২-১২-২০১৯ | ১৪:৪১ |

      রাশেদ সাহেবের জীবনটাই শুধু পথ চলা!

      GD Star Rating
      loading...
  4. সাজিয়া আফরিন : ০১-১২-২০১৯ | ২১:০৩ |

    আছি ভাই। শুভরাত্রি।

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ০২-১২-২০১৯ | ১৪:৪২ |

      সাথে থাকুন, একটু সাহস পাই। শুভ মধ্যাহ্ন!

      GD Star Rating
      loading...
  5. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ০১-১২-২০১৯ | ২১:৪৭ |

    চলুক বস্। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ০২-১২-২০১৯ | ১৪:৪২ |

      চলছেতো চলছেই, কবে থামবে কে জানে?

      GD Star Rating
      loading...
  6. মুহাম্মদ দিলওয়ার হুসাইন : ০২-১২-২০১৯ | ২১:৩১ |

    রাশেদ সাহের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমা যতদিন চলবে ততদিন এই উপন্যাস চলতেই থাকবে, কবে শেষ হবে আমাদের জানা নেই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...