বঙ্গবাসীর পুস্তক প্রীতি

সকল বঙ্গবাসী কবি বলিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সহিত নিজেদের পরিচিত করিয়াছেন এমনকি তাহাদের কেও কেও কবিদের কাকের সহিত গণনা করিতেও কুণ্ঠা বোধ করেন নাই। তবে একথা সত্য যে এই বঙ্গ কবিই একদিন বিশ্বখ্যাত নোবেল পুরস্কার আয়ত্ত করিয়া সকল বঙ্গবাসীকে কবির আসনে বসাইয়া দিয়াছেন। ইহাতে সকলের মনে কবি হইবার বাসনা অত্যন্ত প্রকট রূপে দেখা দিয়াছে এমন করিয়া ভাবিলে দোষের কিছু দেখা যায় না।
একজন কবি বা লেখক কিংবা ঔপন্যাসিক যাহাই বলেন না কেন তিনি লিখতে বসিবার পূর্বে বহুকাল ধরিয়া ভাবিতে থাকেন। ভাবনার বৃক্ষ যখন কিছুটা বিস্তৃত হয় তখন তিনি হাতে কলম ধরিয়া কাগজ পত্র লইয়া বসেন। আজকাল অবশ্য কাওকে কালি কলম বা কাগজের বোঝা বহন করিতে হয় না কেবল একখানা কম্পিউটার হইলেই কর্ম সম্পাদন করা অতি সহজ। ইহা যশবান বৈজ্ঞানিক বৃন্দের কর্মফল বলিয়া তাহাদের অন্তত এক কুড়ি ধন্যবাদ জানান উচিত।
আচ্ছা ঠিক আছে ধন্যবাদ ইত্যাদি পরে দিলেও তেমন ক্ষতি হইবে না এই সময় যাহা বলিতেছিলাম, লেখক মহাশয় লিখিতে বসিলেন। ঘণ্টা, দিন মাস, বছর ব্যাপিয়া লিখিয়া এবং অন্তত দুই কুড়ি দফায় পাঠ করিয়া (এডিট) অবশেষে একখানা গ্রন্থ রচনা করিলেন এবং যেহেতু আজকালের পুস্তক প্রকাশক অত্যন্ত বুদ্ধিমান বলিয়া নিজের টাকা খরচ করিয়া লেখকের হাবিজাবি লেখা প্রকাশ করিতে চাহেন না বলিয়া শতেক পুস্তক প্রকাশকের দুয়ারে ঘুরিয়া ঘর্মাক্ত হইয়া নিজ গাঁইটের টাকা খরচ করিয়া সত্যি সত্যি এক খানা গ্রন্থ ছাপাইয়া ফেলিলেন। নিজের লেখা গ্রন্থখানা সুন্দর ছবিওলা মলাটের ভিতরে ছাপার অক্ষরে দেখিয়া যারপরনাই পুলকিত হইলেন।
লেখক মহাশয় পুলকিত হইলে কি হইবে তাহার পুস্তকের প্রতি কাহারো কোন আগ্রহ নাই কারণ সকলেই জানে এই গদাধর মিয়া বা মশাই আবার কি লিখিতে জানে? ইহার লেখা মূল্য দিয়া ক্রয় করা মানেই হইল স্বেচ্ছায় নিজ পকেটের টাকা গঙ্গায় ফেলিয়া দেওয়া। আচ্ছা বলুন তো আজকাল কি আর এইরূপ আহাম্মক দেখা যায়?
লেখক মিয়া একে বলে ওকে বলে জান আমার লেখা একটি বই ছাপা হইয়াছে, দেখ কি সুন্দর তাই না?
বাহ! বেশ সুন্দরতো আমাকে একটা সৌজন্য কপি দিয়ে দাও তাহলে! তুমি একান্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুজন তাই একটা সৌজন্য কপি আমার অধিকার!
ইহা শুনিয়া লেখকের লেখার ইচ্ছা কর্পূরের মত সপ্ত আকাশে উড়িয়া গেল কিন্তু বন্ধু জনের সৌজন্য কপি না দেয়ার মত ক্ষমতা অবশিষ্ট রহিল না। ওদিকে বন্ধু জন উক্ত সৌজন্য কপি বগলদাবা করিয়া বাড়িতে লইয়া গেল এবং যথারীতি বসার ঘরের তাকে সাজাইয়া রাখিল। কিছুদিন পর লেখক বন্ধু জিজ্ঞাসা করিল
ওহে বন্ধু আমার পুস্তক খানা পাঠ করিয়া তোমার অনুভূতি কেমন হইল?
হা হা আমি অত্যন্ত মনযোগ দিয়াই পাঠ করিয়াছি কিন্তু বন্ধু তোমার হাত এখনও ঠাকুর মশাইর মত পাকিয়া উঠেনি!

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ১টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২৬-০৭-২০১৮ | ২২:৩৩ |

    শুধু অদ্যকাল নহে … বহুকাল হইতেই পুস্তক লইয়া এমর কাণ্ডকারখানা চলিতেছে জনাব। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_mail.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • মোঃ খালিদ উমর : ২৬-০৭-২০১৮ | ২২:৪০ |

      ইহাই আমাদের বিষেষ বৈশিষ্ঠ!

      কিন্তু কি আর করিব ভাই এই লইয়াই চলিতে হইবে।https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

      GD Star Rating
      loading...
    • মুরুব্বী : ২৭-০৭-২০১৮ | ৮:২০ |

      সঠিক বলিয়াছেন জনাব। বাকি জীবন এই ভাবেই চলিতে হইবে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Razz.gif.gif

      GD Star Rating
      loading...
  2. মুহাম্মদ দিলওয়ার হুসাইন : ২৭-০৭-২০১৮ | ২৩:২৪ |

    * সহমত…

    GD Star Rating
    loading...
  3. ইলহাম : ২৮-০৭-২০১৮ | ০:৩৯ |

    "হা হা আমি অত্যন্ত মনযোগ দিয়াই পাঠ করিয়াছি কিন্তু বন্ধু তোমার হাত এখনও ঠাকুর মশাইর মত পাকিয়া উঠেনি"https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...
  4. রিয়া রিয়া : ২৮-০৭-২০১৮ | ১২:৩২ |

    ঠিক বলেছেন। অনেকদিন পর আপনার দেখা পেলাম। কেমন আছেন। Smile

    GD Star Rating
    loading...