আত্মার মাগফেরাত
মামা দুইডা ট্যাকা দেন। মামা দুইডা ট্যাকা দেন। এভাবেই বারবার বলে বলে পিছু পিছু ঘুরছে ছেলেটি। তখন আমি ওভারব্রিজ সিঁড়ির এক কোণে কোণঠাসা হয়ে বসে আছি। আর কান্ডকারখানাগ দেখছি। শেষ পর্যন্ত…।
লোকটি (যাকে মামা বলে সম্মোধন করলো) পাশের দোকান থেকে একটি স্পীড ড্রিংকস, দুটো পটেটো ক্র্যাকার্স, একটি মিঃ টুইস্ট ও একটি পানির বোতল কিনে ব্যাগের ভিতর রাখলো। তবে হাতে রাখা স্পীড ড্রিংক্সের বোতলটি খুলে পরক্ষণেই পান করতে শুরু করলেন। ততক্ষণ অবধি ছেলেটি লোকটির পিছনে পিছনে রয়েছে। আর বলছে – মামা দুইডা ট্যাকা দেন। মামা দুইডা ট্যাকা দেন।
হাত বাড়িয়ে চাইলেও কোন ফায়দা হচ্ছিল না। লোকটি বারবার ছেলেটিকে বলছিলো – টাকা হবে না। চলে যা। তবুও ছেলেটি কিছুতেই লোকটির পিছু ছাড়ছিলো না। লোকটি যেখানেই যাচ্ছিলো সেখানেই…।
আমি নিজেও ততক্ষণে উঠে তাদের পিছনে পিছনে হাঁটছি। আর দেখতে চেষ্টা করছি কি ঘটনা ঘটে?
স্পীডের বোতলটি ফেলে দিতেই ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে বোতলটি বারবার ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে খেতে চেষ্টা করছিলো। কিন্তু ফাঁকা বোতল থেকে কি আর…।
তারপর আবার ছেলেটি হাত বাড়িয়ে সামনে ঘুরাঘুরি করছিলো। কিন্তু তখনও লোকটির মন গলেনি দুটাকা দিতে। লোকটি ছেলেটিকে বললো, যাবি। নাকি মাইর খাবি।
ছেলেটির মুখভার। ফিরে আসতেই মুচকি হাসি হেসে আমার দিকে হাত বাড়ালো। পকেটে একটি পাঁচ টাকার কয়েন ছিলো। ছেলেটির হাতে দিতেই মুচকি হেসে দৌড়ে চলে গেল।
আমি তখনও লোকটির পিছনে। দেখলাম লোকটি ১২ টাকা দিয়ে সিগারেট কিনে হাঁকিয়ে টানছে।
হতভম্ব হয়ে গেলাম। গাড়ি এক্সিডেন্টে জীবন যেমন থমকে যায় তেমনি। রেলস্টেশন/এয়ারপোর্টের দোকানগুলো থেকে অনেকেই নিদিষ্ট মূল্যের চেয়ে তিন টাকা বেশি দিয়ে ড্রিংকস, দুই টাকা বেশি দিয়ে চিপস আর চার টাকা বেশি দিয়ে সিগারেট কিনে টানতে পারে। কিন্তু পকেট থেকে দুই টাকা দিয়ে অবুঝ ছেলের চোখ ভরাতে পারে না। বৃদ্ধ বয়সী দাদি – ঠাকুমার মুখে হাসি ফুটাতে পারে না।
loading...
loading...
আমাদের বেশীর ভাগ সমূহের মানবিক স্বত্তার অপমৃত্যু ঘটেছে। দিনের পর দিন আমরা রোবট হয়ে উঠছি। দয়া ময়া স্নেহের অবশিষ্টাংশও হারিয়েছি। আর কত কাল …
loading...
Excellent
loading...