বাড়ি থেকে ফিরছি। বেশ কয়েকদিন খোলা আকাশের ক্যানভাসের কাপড় পরে, শান্ত গাঙের অথৈজলের শিহরণে শিহরিত হয়ে, খেজুর রসের পায়েসে ভেসে ভেসে ঢেউ খেলেছি। এ যেন মাতৃত্বের টান, শিকড়ের টানে নীড়ে ফেরার তাগিদ। মেঠোপথের দুপাশে রশি বেঁধে পিছুপিছু হেঁটে হেঁটে কাশফুল, কচুরিপানায় দুচোখ বন্ধ করে সুদীর্ঘ নিশ্বাস নেওয়া।
হিমু বেশ কয়েকবার কল দিয়েছিল। কবে আসছি, কবে আসছি ঘ্যানঘ্যান শব্দের অন্তরালে সময়গুলো কিছুটা বিষন্ন ভগ্নহৃদয়ে ভুগলেও যখন নৌকার পাল তোলা মেঘ উড়ে উড়ে অচেনা অতিথি হয়ে আমার কাছে থেমে যেতো তখন এই ভগ্নদশা ভগ্নদেহটুকুও কিঞ্চিৎ ফটোসেশানে ফুরফুরে নিয়ন বাতির আলোয় জ্বলে জ্বলে পুলকিত করে তুলতো। আর তখন শহরের বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা কিংবা ল্যাম্পপোস্টের ঘোলটে আলো অথবা রিক্সার ছাউনি তুলে প্রিয়তমার সাথে ঘুরাঘুরিও বিবর্ণ হয়ে যেতো।
সাদা কালো ডায়েরির পৃষ্ঠার প্রতিটি লাইনে কথাগুলো লিখতে লিখতে কখন যে ঘুমের শহরে নেতিয়ে পরেছিলাম সে সমন্ধে সন্ধিক্ষণের সন্ধানে ভুগে ভুগে সময়ক্ষেপণ না করাটাই শ্রেয়। কিন্তু এই অল্পস্বল্প ঘুমের বাড়ির উঠানে অবস্থানে সবেমাত্র প্রিয়তমার হাত ধরে প্রিয় কিছু শব্দের অণুগল্প রচনা করেছি, প্রিয়তমার মুখোমুখি, চোখে চোখ রেখে সবেমাত্র ঠোঁটের উষ্ণ আবরণের ছোঁয়াচে রোগে শীতল হবো ঠিকই বাসের হর্ণ এবং হঠাৎ করে থেমে যাওয়া স্বপ্নটাকে বিনষ্ট করে দিলো। চোখ খুলে দেখি গন্তব্যে পৌঁছে গেছি।
হিমুকে দেখেই একঘেয়েমি অনুভূতির জীবন শুরু হলো। ঢাকা শহরে এরথেকে বেশি কিছু আশা করা বৈধ নয়। শুধুমাত্র প্রেমিকার প্রাক্তনের বেলায় অন্যরকম। এ-শহরে কে কয়টা রমনীর টিকেট হাতে নিয়ে ঘুরতে পারে সেটাই হয়তো মূখ্য।
হিমু বললো – তারাতাড়ি চল।
– কেন? হঠাৎ এতো তারাতাড়ি কেন?
হিমু – না, তেমন কিছু না। ওই আরকি।
– ওই আরকি? কোন কাজ আছে নাকি?
হিমু – হুমম, সেরকমই।
– তাহলে খুলে বললেই হয়।
হিমু – কি আর খুলে বলবো? রুপার সাথে…।
– হুমম, বুঝতে পেড়েছি। আর বলতে হবে না।
হিমুকে একটু অন্যরকম লাগছে। অনেকটা ফর্সা আর উজ্জ্বল চাহনি। পুরোদমে ফুরফুরে মেজাজ আর ফ্যাশন-সচেতনে। হিমু দাঁড়িয়ে আছে। কাছাকাছি যেতেই বলে উঠলো চায়ে চুমুক দে। এ শীতে চায়ের গরম ঘামে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলে কোন ক্ষতি নেই। বরং প্রিয়তমা নরম ঠোঁটের সৌন্দর্য দেখে খুশিই হবে।
হিমু চা খাচ্ছে আর মাফলার দিয়ে ঠোঁট মুছে মুছে কথা বলছে। ব্যাপারটা আমার কাছে একটু অস্বস্তিকর লাগছে। এই অস্বস্তি নিয়ে হিমুকে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক মন পাড়ায় উঁকি দিলো – কি ব্যাপার! হিমু কাঁধে মাফলার? হিমুর তো এটা খুবই অপছন্দের। তারপরও আবার নীল রঙের মাফলার।
হিমু বলে উঠলো – কি এতো বিড়বিড় করছিস? নিশ্চয়ই আমার নীল রঙের মাফলার নিয়ে। তাই নয় কি?
– হুম, একদম ঠিক।
হিমু – রুপা আজকে দিলো।
– তোর না এটা অপছন্দের ছিলো।
হিমু – সবসময় নিজের পছন্দের দাম দিতে নেই। কিছু কিছু সময় প্রিয় প্রিয়তমেষু প্রিয়তমার ছায়াতলে নির্বাচিত কাকপক্ষী গল্পের নায়ক হওয়ায় ভালো।
– আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি।
loading...
loading...
হিমু কাহিনী পড়লে জীবনের অনেকটা কাল পেছনে ফিরে যেতে হয়। সেই ঢাউস বইগুলোন আর পড়া হয় না। পড়ার সুযোগই বা কই। আমরা সবাই যন্ত্রমানব হয়ে পড়েছি।
আপনার প্রয়াশ আমার কাছে বেশ লাগছে। চালিয়ে যান মি. নৃ মাসুদ রানা।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবিবর, এভাবেই পাশে থাকুন পাশে রাখুন।
loading...
অণুগল্পের জন্য অভিনন্দন জানালাম প্রিয় সতীর্থ।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় মানুষ।
loading...
হিমু সংযোজন পড়তে আমার কাছে ভালোই লাগছে। শুভেচ্ছা নেবেন।
loading...
ধন্যবাদ কবিবর। আরও পাবেন।
loading...
ভালো লাগলো
loading...
খুশি হলাম।
loading...
কোলকাতাবাসী হলেও হুমায়ূন আহমেদ বা হিমুর সাথে পরিচয় আছে।
loading...
জেনে খুবই খুশি হলাম। হিমু নিয়ে আরও দুটি গল্প আছে আমার পেজে। পড়ে অবশ্যই মন্তব্য জানাবেন।
loading...
একবুক ভালোবাসা প্রিয় নৃ ভাই।
loading...
ধন্যবাদ কবিবর, ভালো লাগলো। এভাবেই পাশে রাখুন।
loading...
হিমুর হাতে নীল রঙের মাফলার।
loading...
হিমুর হাতে আরও কিছু আছে।
loading...
সুন্দর।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবিবর।
loading...
– আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি।
* চমৎকার…
loading...
ধন্যবাদ প্রিয়, উৎসাহ পেলা।।
loading...