পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (দ্বিতীয় পর্ব)

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (দ্বিতীয় পর্ব)
তথ্য-সংগ্রহ ও প্রবন্ধ রচনা- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

সংস্কৃত পন্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, জনহিতৈষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (২৬শে সেপ্টেম্বর, ১৮২০- ২৯ জুলাই, ১৮৯১) আক্ষরিক অর্থেই একজন আলোকিত মানুষ ছিলেন, আদর্শ মানব ছিলেন। বিদ্যাসাগরের জীবন কেটেছে বাংলার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তিকালে। দারিদ্র্য ও শোষণ বাঙালির সমাজজীবনকে ক্ষয় করে ফেলেছিল। শিক্ষা, ইংরেজ শাসন ও সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে রামমোহন রায় থেকে শুরু করে অনেকেই বাংলার নবজাগরণে ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন শহুরে বণিক পরিবারের। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন গ্রামের ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। সাত ভাই আর তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। মায়ের প্রতি ছিল বিদ্যাসাগরের অগাধ শ্রদ্ধা। মায়ের প্রতিটি ইচ্ছা অকাতরে পূরণ করতেন।

তাঁর মাতৃভক্তি নিয়ে অনেক জনশ্রুতিও শোনা যায়। বাংলা গদ্য সাহিত্য যার হাতে পেল গতি ও শ্রুতি তিনিই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। সাহিত্যিক হিসেবেও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের রয়েছে যথেষ্ট অবদান। তিনি সাহিত্যে সৃজনী প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি যখন অধ্যাপক ছিলেন, তখন বাংলায় উন্নত পাঠ্য পুস্তকের অভাব বোধ করেছেন। নিজের সাহিত্য প্রতিভাবলে বাংলা গদ্যের ভান্ডার শক্ত করেছেন তার জন্যই বাংলা গদ্যরীতি আপন পথ খুঁজে পায়। আর এ জন্যই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। এই তিনিই আবার বৃটিশ ভারতে বাঙালির সমস্যাসমূহ টের পেয়েছিলেন বলেই সেসব সমস্যা সমাধানে আমৃত্যু নিরন্তর কাজ করে গেছেন। জীবনে কম কষ্ট পাননি তিনি তাঁর আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে।

নিজ পরিবার, সমকালীন সমাজ এবং ওপনিবেশিক শাসকদের কাছ থেকে। অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থা থেকে অর্থনৈতিকভাবে বেশ সম্পদের অধিকারী হয়েও তিনি ব্যক্তিগত ভোগ বিলাসীতায় কখনো নিজেকে নিমজ্জিত রাখেননি। বিত্ত অর্জনে কষ্ট করেছেন কিন্তু চিত্তের উদারতায় মানব কল্যাণে ব্যয় করতে কখনো সংকোচ কিংবা দ্বিধা করেননি। ফলে সমকালেই তিনি জ্ঞানের বা বিদ্যার সাগরের পাশাপাশি করুণার সাগর হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন।

বিদ্যাসাগর উনিশ শতকে অবিভক্ত বাংলায় শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তিনি হিন্দু সমাজের বিধবা বিবাহ প্রথা চালু করেন। তার প্রচেষ্টায় ২৬ জুলাই ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়। নিজের ছেলের সাথে এক বিধবা কন্যার বিয়ে দিয়েছিলেন। যাতে অন্য হিন্দুরাও বিধবা বিবাহে উৎসাহ বোধ করে।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৪ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৪ জন মন্তব্যকারী

  1. রিয়া রিয়া : ২৮-০৯-২০২০ | ২১:২২ |

    আজকে শব্দনীড়ে অনেক গুলো লেখা পড়লাম। আশা করবো আপনিও পড়বেন প্রিয় কবি দা। আমন্ত্রণ জানালাম Smile

    GD Star Rating
    loading...
  2. ফয়জুল মহী : ২৮-০৯-২০২০ | ২১:২৩ |

     মার্জিত , সৃজনশীল  লেখা ।

    GD Star Rating
    loading...
  3. নিতাই বাবু : ২৮-০৯-২০২০ | ২৩:২২ |

    বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।        

    GD Star Rating
    loading...
  4. মুরুব্বী : ২৯-০৯-২০২০ | ৭:৫৫ |

    সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, জনহিতৈষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর প্রতি শ্রদ্ধা। পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ কবি। শুভ সকাল। 

    GD Star Rating
    loading...