শরতের আগমনী ... সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসে...

শরতের আগমনী ……. সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (দশম পর্ব)

নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুল দেখলেই আমরা জেনে যাই শরৎ এসে গেছে। কাশফুল বাতাসে দোলে মোহনীয় ভঙ্গিতে। কাশফুলের মাঝখান দিয়ে স্বচ্ছ নীল আকাশ দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।

শিউলিও শরতের ফুল। রাতে ফুটে ভোরবেলায় ঝরে যায়। এ জন্য ফুটন্ত শিউলি ফুল দেখার সুযোগ কমই পাওয়া যায়। শেষরাতে শিউলির সুবাস ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত। শিউলি নিয়ে কবিদেরও মাতামাতির শেষ নেই। শরতের সকালে হালকা শিশিরভেজা সবুজ ঘাসের ওপর ছড়িয়ে থাকা শিউলি ফুল কুড়ানোর মজাই আলাদা।

শরতের আরেক ফুল কামিনী। কামিনী ফুলও সন্ধ্যায় ফুটে ভোরেই ঝরে যায়। ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ফোটে কামিনী। ফুলের গন্ধে চারদিক ভরে ওঠে।

জবা আর টগরও শরতের ফুল। শরতে পুকুর, ডোবা, হাওর, বিল সব জায়গায় ফোটে শাপলা ফুল। এ ছাড়াও জুঁই, কেয়া, মালতি, মল্লিকা, মাধবী, ছাতিম, দোলনচাঁপা, বেলী, জারুল, নয়নতারা, ধুতরা, ঝিঙে, রাধাচূড়া, পদ্ম, স্থলপদ্ম, নানা রকমের ফুলে হেসে ওঠে প্রকৃতি।

শরৎ এলেই মাঠজুড়ে দেখা দেয় নতুন ধানের সমারোহ। নতুন ফসলের আশা জাগে কৃষকের মনে। আর সেই ফসলকে ঘিরে চারদিকে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। ফুলের সুবাস আর পাখির কুজনে মুখরিত হয় পল্লীগ্রামের মাঠ-ঘাট-জনপদ।

শরৎ মানেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে শুরু হয় অপেক্ষার প্রহর। শারদীয় দুর্গাপূজার শারদীয়া শব্দের আগমনই ঘটেছে শরৎ থেকে। এই শরতেই দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা কৈলাশ ছেড়ে মর্তে আসেন আর তাই নদীর পাড়ে কাশফুল জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথেই বাতাসে যেন ছড়িয়ে পড়ে- শরৎ এসেছে, পুজো আসছে।

বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (দশম পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শরতের রং মেখে উঠে রবি পূর্ব দিকে
সাদামেঘ ভাসে দলে দলে,
অজয়ের দুইপারে কাশফুল ধারে ধারে
সোনা রোদ ঝরে নদীজলে।

মাধবী মালতীলতা, সুনীলা অপরাজিতা
কামিনী ও শিউলিরা ঝরে,
ফুটিল টগর বেলি, কেয়াফুল ও চামেলি
সৌরভে চিত্ত পাগল করে।

অজয়ের নদীবাঁকে পাখি ডাকে তরুশাখে
রাঙাপথে আমাদের গাঁয়ে।
সবুজ ধানের খেতে মেঠোপথে যেতে যেতে
ঘাসের শিশির লাগে পায়ে।

দিঘিভরা কালোজলে, ছেলেরা শালুক তুলে
ফুলে তুলে আসে নিজ ঘরে,
মরাল মরালী আসে সারাদিন জলে ভাসে
ঘাটেতে বধূরা স্নান করে।

সরোবরে প্রস্ফুটিত শতদল বিকশিত
পুঞ্জেপুঞ্জে অলি ধেয়ে আসে,
নীল আকাশের গায় শঙ্খচিল উড়ে যায়
শরতের সাদা মেঘ ভাসে।

হৃদয়ে পুলক জাগে শরতের রং লাগে
ভেসে আসে আগমনী গান,
শরতের আগমনে রং লাগে দেহে মনে
মেতে উঠে সবাকার প্রাণ।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

২ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ২ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০৩-০৯-২০২০ | ১৯:০৪ |

    হৃদয়ে পুলক জাগে শরতের রং লাগে
    ভেসে আসে আগমনী গান,
    শরতের আগমনে রং লাগে দেহে মনে
    মেতে উঠে সবাকার প্রাণ।
    https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. ফয়জুল মহী : ০৩-০৯-২০২০ | ২১:৫৪ |

     বর্ণ ও শব্দ  কমনীয় । 

    GD Star Rating
    loading...