বসন্ত এলো আজি…….. নব বসন্তের গান
গীতি কবিতা – ৮ অষ্টম পর্ব।
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
চঞ্চল মনের আবেগের বিহ্বলতায় ছড়িয়ে প্রতি বছর বসন্ত আসে ভালবাসার ডাক ছড়িয়ে দেওয়া কোকিলের কুহুতানে। এরই মধ্যে প্রকৃতিতে বসন্তের রং লেগেছে, তবে দিনপঞ্জির হিসেবে তার অভিষেক আজকের নতুন সূর্যের পিছু ধরে।
বাংলার নিসর্গ প্রকৃতিতে লেগেছে ফাগুনের হাওয়া। ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে সবুজ প্রান্তর। তীব্রভাবে মনের মধ্যে আকুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে যেন রবীন্দ্রনাথের গান— ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/আমার আপনহারা প্রাণ/আমার বাঁধনছেঁড়া প্রাণ/তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/তোমাকে অশোকে-কিংশুকে/অলক্ষ্যে রং লাগল আমার অকারণে সুখ…।’
ঋতুরাজ বসন্ত বাঙালি আর বাংলাদেশের মানুষের জীবনে নিয়ে আসে প্রেম ও বিদ্রোহের যুগল আবাহন। এমনই এক বসন্তে ব্রিটিশ সাম্যরাজ্যবাদীরা কারাগারে ‘ধূমকেতু’ প্রকাশের কারণে দেশদ্রোহের অভিযোগে আটকে রেখেছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন ‘বসন্ত’ নামক গ্রন্থটি তাকে উৎসর্গ করে প্রকাশের মাধ্যমে নজরুলের সঙ্গে নিজের একাত্ম প্রকাশ করেছিলেন।
মহান গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব অসহযোগ আন্দোলনও দানা বেঁধেছিল বসন্ত ঋতুতে। স্বাধীন বাংলাদেশেও গণতন্ত্রের দাবিতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বার বার পথ খুঁজে পেয়েছে বসন্তকালে। বসন্ত তাই বাঙালির জীবনে বাঁধনহারা হয়ে সৃষ্টির উল্লাসে প্রেমের তরঙ্গে ভাসার সময়। তাই নজরুলের কলম থেকে বেরিয়ে আসে, ‘এল খুনমাখা তূণ নিয়ে/খুনেরা ফাগুন …।’ রবিঠাকুরও লেখেন, ‘হাসির আঘাতে তার/মৌন রহে না আর,/কেঁপে কেঁপে ওঠে খনে খনে।’
মায়াময় বসন্ত সবাইকে কেড়ে নেয় নিজের ভালবাসার মোহে। যেন প্রেমিকা তার প্রেমিককে মায়া বন্ধনী দিয়ে আবদ্ধ করে রাখে, তেমনি নব ফাগুন সবাইকে নিজের মায়ামন্ত্রে আচ্ছন্ন করে রাখে। নব বসন্ত বাঙালির প্রাণে নতুনত্বে প্রাণ সঞ্চার করুক এটাই হোক বসন্ত বরণের অভিপ্রায়। আসুন, আমরা সবাই নব বসন্তের রঙে রাঙিয়ে তুলি নিজেদের। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
নব বসন্তের গান – ৮
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
শীত হল অন্ত আসিল বসন্ত
বসন্তের আগমন,
আম্র তরুশাখে কোকিলেরা ডাকে
প্রাণ মন উচাটন।
রাঙাপথ বাঁকে আম্র তরুশাখে
কোকিলের কুহু স্বর,
কুসুম কাননে মধু আহরণে
ধেয়ে আসে মধুকর।
অজয়ের চরে পাখা মেলে উড়ে
আসে বলাকার সারি,
রাঙাপথ ধরে ছুটিছে মন্থরে
গ্রামের গরুর গাড়ি।
পলাশের বনে রং লাগে মনে
আসে শালিকের দল,
সারাদিন ধরে ওরা খেলা করে
করে কত কোলাহল।
দিবা অবসানে পশ্চিমের পানে
সূর্য যবে অস্ত যায়,
তুলসীর তলে ধূপদীপ জ্বলে
বধূরা শঙ্খ বাজায়।
সাঁঝের সানাই বেজে উঠে দূরে
সাঁঝ নামে মোর গাঁয়,
রাতের আকাশে চাঁদ তারা হাসে
ফুটফুটে জোছনায়।
loading...
loading...
অসাধারণ লেখা। ভালো লাগলো।
loading...
সাঁঝের সানাই বেজে উঠে দূরে
সাঁঝ নামে মোর গাঁয়,
রাতের আকাশে চাঁদ তারা হাসে
ফুটফুটে জোছনায়।
loading...
ভালো লাগলো্
loading...