যাত্রাপালার আসর- দ্বিতীয় পর্ব

যাত্রাপালার আসর- দ্বিতীয় পর্ব
তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনার কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: রাজনীতির মঞ্চ মাতাতে বরাবরই সিদ্ধহস্ত তিনি। এ বার যাত্রাশিল্পকে অক্সিজেন জোগাতে আসরে নামলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকায় অভিনয় করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিলেন দর্শকদের। কালীপুজো উপলক্ষে যাত্রার আসর বসেছিল পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে। পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত ‘গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম’ যাত্রাপালায় শ্রীকৃষ্ণের ভূমিকায় অভিনয় করেন স্বপনবাবু। গঙ্গার ভূমিকায় বিশিষ্ট অভিনেত্রী রুমা চক্রবর্তী।

থেকেই যাত্রাপ্রেমী স্বপনবাবু। আগে নিয়মিত অভিনয়ও করতেন। কিন্তু ইদানিং একে দায়িত্ব, তায় স্বাস্থ্য, এই দুইয়ের চাপে অভিনয় করা বড় একটা আর হয়ে ওঠে না। বছর দুয়েক আগে বর্ধমান উত্সষবেও মঞ্চ মাতিয়েছেন তিনি। এ বার অনেকদিন পরে আবার পালার টানে মঞ্চে উঠেছেন তিনি। তবে সামাজিক পালা নয়, স্বপনবাবুকে টানে পৌরাণিক পালাই। জানালেন, যাত্রাপালা নিয়ে গ্রামগঞ্জের মানুষের একটা আলাদা টান রয়েছে । কিন্তু নানা কারণে এখন গ্রামীণ এলাকায় যাত্রা পালা আর সে ভাবে হতে দেখা যায় না । প্রায় ষোলো বছর হল শ্রীরামপুরে কোনও যাত্রাপালাই হয়নি। তাই যাত্রাশিল্পকে নতুন করে চাঙ্গা করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ”মুখ্যমন্ত্রী যাত্রাশিল্পকে চাঙ্গা করতে অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন। একে আঁকড়ে জীবিকা নির্বাহ করেন বহু শিল্পী ও কলাকুশলী। সরকারের উদ্যোগে যাত্রা শিল্পের সুদিন যে ফিরছে তার প্রমাণ করছে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়।”

এক সময়ে গ্রামে কোনও অনুষ্ঠান মানেই বসতো যাত্রাপালার আসর। দুর্গাপুজো থেকে লক্ষীপুজো কিংবা কালীপুজোয় যাত্রা শিল্পীদের নাওয়া খাওয়ার সময় থাকতো না। সে সব এখন ইতিহাস। বদলে গেছে মানুষের রুচি। তারসঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে গত এক দশকে ছোট বড় বহু অপেরা দলের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। কাজ হারিয়েছেন শিল্পীরা। অনেকে পেটের টানে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাই গ্রাম বাংলার মানুষের একসময়ের খুব কাছের এই শিল্প এখন ধুঁকছে। বায়না নেই, কাজ নেই। চলছে চরম সংকট। মন্ত্রী অবশ্য এ বার অভিনয় করছেন চিত্পুারের শ্রীচৈতন্য অপেরায়। তাঁদেরই পালা ‘গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম’। একেধারে রাজ্যের মন্ত্রী। হাতে অনেকগুলি দফতরের দায়িত্ব। আবার জেলায় দলের দায়িত্বও তাঁর কাঁধে। এত সবের পরও যাত্রাপ্রেমিক পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বপন দেবনাথ। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যদি সুদিন ফেরানো যায় যাত্রার। সখের যাত্রা আসরেও তাঁর পেশাদারিত্বে মুগ্ধ দর্শকরা। সে তালিকায় নাম রয়েছে জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জীরও।

তথ্যসুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

২ টি মন্তব্য (লেখকের ১টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২০-০১-২০২০ | ১৪:০৩ |

    যাত্রাপালার আসর- দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ২০-০১-২০২০ | ১৫:০৭ |

      এক সময়ে গ্রামে কোনও অনুষ্ঠান মানেই বসতো যাত্রাপালার আসর। দুর্গাপুজো থেকে লক্ষীপুজো কিংবা কালীপুজোয় যাত্রা শিল্পীদের নাওয়া খাওয়ার সময় থাকতো না। সে সব এখন ইতিহাস। বদলে গেছে মানুষের রুচি। তারসঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে গত এক দশকে ছোট বড় বহু অপেরা দলের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। কাজ হারিয়েছেন শিল্পীরা। অনেকে পেটের টানে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তাই গ্রাম বাংলার মানুষের একসময়ের খুব কাছের এই শিল্প এখন ধুঁকছে। বায়না নেই, কাজ নেই। চলছে চরম সংকট।

      সুন্দর মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
      সাথে থাকুন- এটা প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...