পৌষমাসে টুসু পূজা…….. টুসুর বন্দনা লোকগান
দ্বিতীয় খণ্ড- তৃতীয় পর্ব।
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা আর সম্পাদকীয় কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাসন্তীঃ- টুসু পূজোর আর এক নাম লক্ষী পূজো, ভূমি বা মাটি পূজা। এই পূজো কে অনেকে আবার ভারত মায়ের পূজো বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। অনেক জায়গায় বাঁশের ডউল তৈরী করেন। আবার দুই ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবন এলাকার আদিবাসীরা টুসু ঠাকুর পটুয়ার কাছ থেকে তৈরী করে তা পূজোর স্থানে এনে পূজো করেন।
এই পূজোয় সরিষার তেল, প্রদীপ ধূপ ধূনা সিঁদুর সলতে, পেঁপে ফলমূল সহ নানান উপকরণ এই পূজোর প্রধান দ্রব্য। এ পূজোয় বাড়ীতে ছেলে মেয়েদের দল কিংবা পাড়াপ্রতিবেশীরা সকলেই মিলে একত্রিত হয়ে পূজো করে থাকে। পূজার দিন পৌষ মাসের শেষের রাত্রি পৌষ মাসের সংক্রান্তির দিন। পৌষ সংক্রান্তিতে প্রতি বাড়ীতে পিঠে-পুলি তৈরী হয়ে থাকে। শীতকালে নতুন গুড় দিয়ে পিঠে খেতে কার না ভালো লাগে।
একদিকে গঙ্গাসাগর মেলা ও স্নানযাত্রা। প্রত্যেকেই কাজের অবসর পায়।ছেলে বা মেয়ে যে কেউ করতে পারে এই টুসু পূজো।যিনি পূজোর কর্তা হন তিনি সাধারণত পূজো করেন। আদিবাসীদের পূজায় কোন ব্রাহ্মণের প্রয়োজন হয় না। যে পূজোয় পূজারী লাগে সে পূজোয় আদীবাসীদের পূজারী বা “পাহান” থাকে।
পূজোর সন্ধ্যায় পূজার মেরাপে টুসু ঠাকুর আনা হয়। বেদীতে ঠাকুর বসিয়ে ফুল পাতা দিয়ে সাজানো হয়। সন্ধ্যার প্রথম প্রহরে পূজোর মালিক থালায় করে পূজোর সামগ্রী নিয়ে এসে ঘটস্থাপন, সিঁদুর লেপন, ফল মিষ্টি খই পেঁপে চিড়া সামনে রেখে পূজো শুরু করেন। পূজোর সময় শাঁখ বাজানো হয়। পূজো হয়ে গেলে পেঁপে বলি দেওয়া হয়। এই হল প্রথম প্রহরের পূজো।
পূজোর পর ছেলে মেয়ের দল আলাদা আলাদা ভাবে দুই দলে বিভক্ত হয়ে টুসু গান করেন। সাংস্কৃতির আসরও বসে। একদল গান গেয়ে অপর দলকে গান চাপান দেয় । এভাবেই এক এক সময় একটি দল এসে টুসু ঠাকুরের সামনে গান গায়।
দ্বিতীয় প্রহরের পূজোয়ও পেঁপে বলি হয়। পুজোর পর শুরু হয় টুসু গান ও ঢোল বাজনা। দ্বিতীয় প্রহর প্রায় প্রথম প্রহরের মতো। আসে তৃতীয় ও চতুর্থ প্রহর প্রায় একই। চতুর্থ পূজোয় ভোর হয়ে আসে। এক টুসুর কর্মকর্তা, অন্য টুসুর কর্মকর্তার পূজোয় হাজির হয়ে মিতালী পাতায়। ছেলে হলে ছেলে, মেয়ে হলে মেয়ে টুসু সই পাতায় চতুর্থ প্রহর গানবাজনা চলে। একটা পূজোর দল আর একটা পূজোয় উপস্থিত হয়ে টুসু গান গেয়ে মনোরঞ্জন করেন।
সুন্দরবনের বাসন্তী, ক্যানিং, গোসাবা, কুলতলী, নলিয়াখালী, জয়রামখালি, ছোটদুমকী তে একাধিক টুসু পূজো হয়। তাই একে অপরের সঙ্গে শত দুঃখের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নেন। বর্তমানে আদিবাসীদের অর্থনৈতিক অবস্থা পঙ্গু হয়ে পড়ায় আগের মতো র ধূমধাম নেই তা স্বত্বেও আদিবাসীরা তাঁদের সম্প্রদায়ের রীতি রেওয়াজ কে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছে।
রাত কেটে প্রভাত হয় ।প্রভাতের পর সকাল বেলায় গান গাইতে গাইতে কাঁসার ঘন্টা,বাজনা,শাঁখ বাজাতে বাজাতে বাড়ী বাড়ী টুসু ঠাকুর নিয়ে ভ্রমণে বের হন। বাড়ীর মহিলারা ধান, দুর্বা, প্রদীপ নিয়ে টুসু ঠাকুর বরণ করেন। বেলা হলে পাড়ার সকল লোক একত্রিত হয়ে টুসু ঠাকুর নিয়ে একস্থানে জোট করেন। একটা টুসুর কর্তার সাথে আরেক জন মোকর পাতায়। গানবাজনা চলে। এরপর দুঃখের মধ্য দিয়ে পুকুরে টুসু ঠাকুর বিসর্জন করেন। বিকালে বা তারপরের দিন বাড়ী বাড়ী গিয়ে প্রীতি, প্রণাম, শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন। এরপর আবার চলে একটি বছরের প্রহর গোনার অপেক্ষায়।
তথ্য সহায়তায়: Daily Hunt
loading...
loading...
অসাধারণ স্মৃতিচারণ! সুন্দরবনের বাসন্তী, ক্যানিং, গোসাবা, কুলতলী, নলিয়াখালী, জয়রামখালি, ছোটদুমকী তে একাধিক টুসু পূজো হয়। তাই একে অপরের সঙ্গে শত দুঃখের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নেন। এসব মুহুর্ত ও আনন্দ আমাদের জীবনে ছুঁয়ে যাক সর্বময়।
loading...
আজ আঘন সাঁকরাইত,মানভূমের সবথেক্যে বড় পরব টুসুর আনুষ্ঠানিক সূচনা। মাঈ মসি পিসি কাকী খুড়ী দিদি বহিনেরা সব সিনান কইরে মাটির সরায় গুঁড়ি,সিঁদূর,কাজল লেপ্যে, বাঁদুফুল, ধান- দুব্বা, গেঁদাফুল, সরষ্যা ফুল, কাঁইচ বীচ, গোবর ঢেলা রাখ্যে কুলুঙ্গিতে নাহল্যে ফুলপিঁঢ়ার কাছে সের-পাই, ধান, গোবর, কাঁইচ বীচ তুপ্যে 'টুসু পাতা'বেক। গটা পোষমাস জুইড়ে …. টুসুর পূজা হবেক। আঞ্চলিক লোকভাষায় লেখা হলো। এটাই আমাদের দেশজ ভাষা-সংস্কৃতি।
সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম কবিবর।
আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।
loading...
The TUSU PUJA festival is mainly about the collection of songs sung by the unmarried girls during the nights, throughout the month of Poush. As Sadhan Mahato says in his interview taken during the project, ‘Every day the women start praising the goddess by singing Tusu songs . . . the Tusu is prepared and worshipped at homes by chaste virgin girls. Married women do not worship Tusu'. In a personal interview with the author, independent researcher and folk singer Kiriti Mahato says:
All celebrations in our culture are related to singing and dancing and Tusu has a significant role in it . . . We can see only one Pada songs in the Jawa festival and two Pada songs or Doha in Tusu. In those two Padas it reflects all the feelings, ‘বল মা আমার মন কেমন করে/ যেমন শোল মাছে উফাল মারে.’ (‘O mother, do you know the state of my mind/It is like the thrust of the Shol fish.&rsquo
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
নিরন্তর শুভেচ্ছা জানবেন কবি।
loading...
There are popular local music videos which follow the Tusu’s tune and these are also called Tusu songs. Apart from the tune and rhythm, these songs do not have any other resemblance with the ‘traditional’ Tusu songs. A few such songs are—‘মনে পড়ে তোর মুখের হাঁসি, তোকে ধনী ফাঁকা যদি পাই’ ('Mone Pode tor Mukher Haansi'
by Birochon Mahato and Anima Mardi; ‘টুরকু ছঁড়াই তোকে ভুলাইল’ ('Turku Chhodai toke Bhulailo'
by Rohin Mahato and Mrityunjoy Mahato; ‘মকর পরব আসছে ঢেউ মাইরে’ ('Makar Parba Aaschhe Dheu Maire'
by Paresh Mahato and Anjana Mahato.
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
ঠিক কতটা মনে থাকছে বা থাকবে জানি না; তবে পড়ে চলেছি।
loading...
‘টুসু’ নামকরণের পিছনে কোল (Austro Asiatic) গোষ্ঠীর ‘টুসা’ (টুসাউ) শব্দটির প্রভাব থাকতে পারে। কোল ভাষায় এর অর্থ হল—ফুলের গুচ্ছ। এই অভিমতের অন্যতম প্রবক্তা ডঃ সুহৃদকুমার ভৌমিক। তিনি Bulletin of the Cultural Research Institute-এর ‘Tusu Songs’-এ বলেছেন, “Perhaps ‘tusu’ is a non-Aryan word coming from Austro-Asiatic Kol origin, to mean flower, bunch of flowers, bud etc. In Santali ‘bahatusu’ means a bunch of flowers, ‘tusa’ means simply bud, a leaf of bud-a symbol of youth and beauty.
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
শীতকালে নতুন গুড় দিয়ে পিঠে খেতে কার না ভালো লাগে।
loading...
A few such songs are—‘মনে পড়ে তোর মুখের হাঁসি, তোকে ধনী ফাঁকা যদি পাই’ ('Mone Pode tor Mukher Haansi'
by Birochon Mahato and Anima Mardi; ‘টুরকু ছঁড়াই তোকে ভুলাইল’ ('Turku Chhodai toke Bhulailo'
by Rohin Mahato and Mrityunjoy Mahato; ‘মকর পরব আসছে ঢেউ মাইরে’ ('Makar Parba Aaschhe Dheu Maire'
by Paresh Mahato and Anjana Mahato.
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
loading...
Tusu is prepared and worshipped at homes by chaste virgin girls. Married women do not worship Tusu'. In a personal interview with the author, independent researcher and folk singer Kiriti Mahato says:
All celebrations in our culture are related to singing and dancing and Tusu has a significant role in it . . . We can see only one Pada songs in the Jawa festival and two Pada songs or Doha in Tusu. In those two Padas it reflects all the feelings, ‘বল মা আমার মন কেমন করে/ যেমন শোল মাছে উফাল মারে.’ (‘O mother, do you know the state of my mind/It is like the thrust of the Shol fish.&rsquo
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...