অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (ষষ্ঠ পর্ব)
তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মানব জীবনের মতোই নদীরও শিশুকাল থাকে, যৌবন ও বার্দ্ধক্য আসে, জরা গ্রাস করে। পাড় ভাঙে, গতিপথ পাল্টায়, পলিস্তর নদীর বুক ভরাট করে। নদী নাব্যতা হারায়। বহমান নদীতে সেচবাঁধ দেওয়ায় নদীর গতিপথ বাধা পায়, বন্যার প্রকোপ বাড়ে। অজয় নদীও এর ব্যতিক্রম নয়। এইসব নানা কারণে অজয় বারবার প্রবাহিত হয়েছে আপন বেগে।
অজয় নদী আজ আর ভাল নেই। ক্রমেই শুকিয়ে আসছে নদীখাত। নদীর গতিপথে বহু জায়গায় স্থায়ী বালির চর পড়েছে। শান্ত অজয় যখন বর্ষায় বন্যা ডেকে আনে, তাতে বালি জমে নদীবুক আরও অগভীর হয়। আর বাকি সময় শুকনো ধূ-ধূ বালিতে ছোট বড় পাথরের চাঁই বুকে নিয়ে নিঃশব্দে পড়ে থাকে। তখন এর অস্তিত্ব ছোট নালা বা খালের মতো।
অজয়ের চরে আসে শালিক, বনটিয়া কভু ফিঙে কভু বা ঘুঘু পাখির দল। নদীর পাড়ে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। শান্ত পরিবেশে এখানে আসে গাঁয়ের বাউলের দল। হাতে থাকে একতারা। মধুর সুরে গেয়ে ওঠে বাংলার গান, বাউলের গান, মাটির গান।
অজয় নদীর জলধারা…….বয়ে চলে বারো মাস
অজয় নদীর কবিতা-৬ (ষষ্ঠ পর্ব)
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
অজয়ের নদীচরে সোনা রোদ হাসে,
রাতের শিশির ঝরে কচি দূর্বা ঘাসে।
নদীধারে দুই পারে ছোট গ্রাম আছে,
প্রভাত পাখিরা গীত গায় গাছে গাছে।
নদীঘাটে বক বসে আসে ফিঙে পাখি,
জল নিতে আসে বধূ লাজে মুখ ঢাকি।
নদীধারে মাঠে মাঠে চাষী কাটে ধান,
ঘরে ফিরে আসে দিন হলে অবসান।
অজয়ের ঘাটে নামে সাঁঝের আঁধার,
মাঝরাতে চাঁদ ওঠে আকাশ মাঝার।
মিটি মিটি তারা জ্বলে সারারাত ধরি,
অজয়ের নদীঘাটে বাঁধা আছে তরী।
পূব আকাশের কোণ হয়ে আসে লাল,
রবি হাসে নিয়ে আসে নতুন সকাল।
অজয় নদীর পাড়ে রোদ হাসুক, শিশির ঝরুক! বেঁচে থাকুক অজয় নদী যুগযুগ ধরে, এই আশাই করি।
আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
সাথে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
জয়গুরু।