শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
নবম পর্ব- পূজোর কবিতা-৯
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
বিশ্বসাহিত্যে শরৎ-বন্দনার অসংখ্য কবিতা পাওয়া যায়। কবি ফ্রানারজ তার ‘মাই ওটাম গার্ল’ কবিতায় লিখেন, ‘তোমার শরৎ ঠোঁট/শরৎ চুল/শরৎ চোখ/শরৎ হাসি/শরৎ গ্রীবা/আমি শরতকালে স্রষ্টাকে চুম্বন করি।’
কানাডার সাহিত্যপ্রেমীরা শরৎকে মনে করেন খানিকটা বিরতির সময়। তার মানে একটু জিরিয়ে নেয়া আরকি! আমেরিকানরা মনে করে শরৎ কিছুটা নরম ও আরামদায়ক সময়। চাইনিজরা শরতের তৃতীয় মাসের শেষ রাতে বৃষ্টির শব্দ শুনে ঘুমাতে পছন্দ করত। শরতের নিয়ে এমন অনুভব তাদের সাহিত্য চেতনাকে সমৃদ্ধ করে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঋতুর পরিবতর্ন হয়। পরিবতর্ন হয় ঋতুর বৈচিত্র্যও। এর প্রভাব পড়ে সাহিত্যেও। নাগরিক জীবনের শরৎ উদ্যাপন ও গ্রামীণ জীবনে শরৎ উদ্যাপন এক নয়। সে যাই হোক, শরৎ প্রতি বছর বাঙালির জীবনে আসে নতুন আবেদন ও আবহ নিয়ে। শরতে মুগ্ধ হয়ে কবিরা সাদা সাদা পৃষ্ঠায় অক্ষরের মালা গেঁথে লেখেন কবিতা।
এই নিস্তব্ধতা যেন কাশ-শিউলির কোমল পাপড়িকে স্বাগত জানাতে। এভাবেই শারদীয় দিন আসে, আসে শরৎ শুভ্রতার প্রতীক হয়ে। শরতের আকাশ কখনেও ধোয়ামোছা, পরিচ্ছন্ন হয় না। বর্ষার-বর্ষণমুখর অনুজ্জ্বল দিনের পর শরতের মেঘের মতো আমাদের মনও যেন হালকা হয়ে আসে। স্বপ্নের মতোই মনে হয় শরতের দিনগুলোকে।
শরতের স্নিগ্ধতাকে আরও মোহময় করে এ মৌসুমের বিচিত্র ফুলেরা। নদী কিংবা জলার ধারে ফোটে কাশ-কুশ, ঘরের আঙিনায় ফোটে শিউলি বা শেফালি, খাল-বিল-পুকুর-ডোবায় থাকে অসংখ্য জলজ ফুল, শাপলা, শালুক ইত্যাদি। সরোবরে বিকশিত হয় কুমুদ-কমল। মধুলোভে তাই ছুটে আসে অলির দল। ফুলের সুবাসে চৌদিক ভরে ওঠে। নদীতীরে কাশফুল শোভা দেয়। পূজো এসে গেল। এলো খুশির রঙে রাঙিয়ে তোলার দিন।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের কাছে শরৎ বিরহের কাল। এ ঋতুতে প্রিয় কাছে না থাকায় প্রেয়সীর যে বিরহরূপ তা তিনি কাছ থেকে অবলোকন করেছেন যেন। সে জন্যে তিনি বলতে পারেন :
‘গণিতে গণিতে শ্রাবণ কাটিল
আসিল ভাদ্রমাস,
বিরহী নারীর নয়নের জল
ভিজিল বুকের বাস।’
শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন
নবম পর্ব- পূজোর কবিতা-৯
কবি-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
শরতের আগমনে সুদূর নীল গগনে
শুভ্রমেঘ পুঞ্জে পুঞ্জে ধায়,
সবুজ তরুর শাখে পাখিসব বসে থাকে
পাখিরা মধুর গীত গায়।
সবুজ ডাঙার পরে গবাদি পশুরা চরে
রাঙাপথে চলে গরুগাড়ি,
রাঙাপথে দুইধারে তালগাছ সারে সারে
গাঁয়ের মাঝে মাটির বাড়ি।
শারদ সকাল বেলা শিউলি ফুটেছে মেলা
বেলি, জুঁই, টগর বকুল,
এ গাঁয়ের সীমানায় অজয়ের মোহনায়
নদীতীরে শোভে কাশফুল।
ক্রমে ক্রমে বাড়ে বেলা শালিকেরা করে খেলা
সারাদিন অজয়ের ঘাটে,
দিবসের অবসানে হেরি পশ্চিমের পানে
অবশেষে সূর্য বসে পাটে।
ফুটফুটে জোছনায় চাঁদ তারা হাসে গায়
দূরে বাজে সাঁঝের সানাই,
দেবীর মন্দির মাঝে ঢাকঢোল কাঁসি বাজে
এলো পূজো আর দেরি নাই।
loading...
loading...
শরতের আগমনে সুদূর নীল গগনে
শুভ্রমেঘ পুঞ্জে পুঞ্জে ধায়,
সবুজ তরুর শাখে পাখিসব বসে থাকে
পাখিরা মধুর গীত গায়।
loading...
শরতের আগমনী-পূজোর কবিতা সংকলন দশম ( শেষ পর্ব) – পূজোর কবিতা-১০ আগামীকাল প্রকাশিত হবে। এরপর আমার পরবর্তী কাব্য “ যা দেবী সর্বভূতেষু…… মহিষাসুরমর্দিনী” আগামী মহালয়ার দিবস থেকে পর্বে পর্বে প্রকাশিত হবে। বিষয়টি আপনার অনুমোদন সাপেক্ষ। সকলের সহযোগিতা কাম্য।
সাথে থাকবেন- এটা প্রত্যাশা করি। জয়গুরু!
loading...
কাশ-শিউলির কোমল পাপড়িকে স্বাগত জানাই প্রিয় কবি দা। চলুক।
loading...
শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।
loading...
আপনার পোস্ট গুণেমানে অসাধারণ। দারুণ।
loading...
শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।
loading...
অভিনন্দন জানাই কবি।
loading...
শারদীয়া অভিনন্দন জানাই। জয়গুরু।
loading...
ক্রমে ক্রমে বাড়ে বেলা শালিকেরা করে খেলা
সারাদিন অজয়ের ঘাটে,
দিবসের অবসানে হেরি পশ্চিমের পানে
অবশেষে সূর্য বসে পাটে।
ওয়াও।
loading...
শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।
loading...
অনেক সুন্দর কবি।
loading...
সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। জয়গুরু
loading...
শারদীয়া শুভেচ্ছা জানাই। জয়গুরু।
loading...