যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা- ৮
যাত্রাশিল্পের প্রসার ক্রমেই বেড়েই চলেছে। এই শিল্প আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোয় খুশি চিৎপুরের যাত্রা অপেরাগুলি। তাদের বক্তব্য, বাম আমলের শেষ দিকে এই শিল্প তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। পরবর্তীকালে মা-মাটি-মানুষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর যাত্রাশিল্পে ফের চাকা ঘুরতে শুরু করে। লাভের মুখও দেখতে শুরু করে অপেরাগুলি। এই শিল্পকে ঘিরে উন্মাদনার পারদ এখন ঊর্ধ্বমুখী। এই প্রেক্ষাপটেই শুরু হল ২৩ তম যাত্রা উৎসব। শুক্রবার বারাসতের কাছারি ময়দানে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্র ও শনিবার ওই মঞ্চেই দু’টি যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হয়। তার একটি হল পৌরাণিক পালা ‘রানি রাসমণি’ এবং অন্যটি সামাজিক পালা ‘আজ প্রতিমার সিঁদুর দান’। এর রেশ ধরেই আজ রবিবার থেকে উত্তর কলকাতার বাগবাজার ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ মঞ্চে শুরু হচ্ছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একমাসব্যাপী যাত্রা উৎসব।
প্রথম দিন ‘হিসাব কষা ভালোবাসা’ যাত্রাপালার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে এই উৎসব। যাত্রা অ্যাকাডেমি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই উৎসবে চিৎপুরের যাত্রা দলগুলির সঙ্গে অংশ নেবে প্রত্যন্ত জেলার অপেরাগুলিও। প্রতিদিন যাত্রাপালা শুরু হবে বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। যাত্রা অ্যাকাডেমির সদস্য কনক ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটে ৪টে থেকে একঘণ্টা মুক্ত মঞ্চে হবে যাত্রানুরাগীদের আড্ডা। থাকবে যাত্রা উন্নয়নে আলোচনা, ক্যুইজ ও প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে যাত্রার একাল সেকাল নিয়ে নানা তথ্য ফুটে উঠবে। প্রবীণ যাত্রাশিল্পী রুমা দাশগুপ্তের কথায়, এই শিল্পের যে একটা সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে, তা সকলের জানা উচিত। এই ইতিহাসের মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক দুঃখ, অভাব, যন্ত্রণা, কষ্টের কথা। আমরা চাই স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যাত্রা দেখার পাশাপাশি ঘুরে দেখুক প্রদর্শনীও।
কলকাতা যাত্রাকর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হারাধন রায় বলেন, এবার বাগবাজারের যাত্রা উৎসব মঞ্চে যে পালাগুলি মঞ্চস্থ হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—‘জীবনের জংশনে প্রেমের ফেরিওয়ালা’, ‘দানবীর রাজা হরিশচন্দ্র’, ‘ঢপবাজ স্বামীর রংবাজ বউ’, ‘চাঁপাডাঙার বউ’, ‘দুই সতীনের ঘর’, ‘রাঙা মেয়ের ভাঙা জীবন’, ‘সখী ভালোবাসা কারে কয়’, ‘নীল আকাশে নীলাঞ্জনা’, ‘ও প্রেম যমুনার মাঝি’, ‘ বাপেরও বাপ আছে’, ‘গোধুলি লগ্নে শুভ দৃষ্টি’, ‘বুনো ওল বাঘা তেঁতুল’ প্রভৃতি। যাত্রাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীদের বক্তব্য, এই উৎসব আয়োজনের ফলে প্রতি বছরই গ্রামবাংলার নতুন নতুন মুখ সুযোগ পেয়ে থাকেন।
মুখ্যমন্ত্রী যাত্রা শিল্পকে বাঁচাতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাস। ‘মা সারদা’ এবং ‘আজ প্রতিমার সিঁদুর দান’ পালার মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন পূবালি বসু। তিনি বলেন, সব থেকে বড় কথা হল নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফি বছর নতুন নতুন শিল্পীদের সরকারি তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের যাত্রা অ্যাকাডেমির তরফ থেকে শংসাপত্রও দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে এই নবাগতরা যাত্রাপালায় অভিনয়ের সুযোগও পান। পালাকার মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়, উৎপল রায়, অনল চক্রবর্তী প্রমুখ বলেন, এই শিল্প বাঁচলে, এর সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষের জীবনও বাঁচবে। তাই মাসব্যাপী যাত্রা উৎসবের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।
‘ময়লা টাকার লক্ষ্মী’ যাত্রাপালার নায়িকা কাকলি চক্রবর্তী বলেন, ধানবাদ, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর প্রভৃতি জায়গায় পুজোর মরশুমে আমাদের যাত্রা ভালোভাবেই হয়েছে। আমাদের আশা, চলতি মরশুমে আমাদের পালা মানুষের মন জয় করবেই। ব্রহ্মময় চট্টোপাধ্যায়ের রচিত ও রাহুল গোস্বামী সম্পাদিত এবং নির্দেশিত ‘ধুলোমাটির ধন্যি মেয়ে’-তে অভিনয় করছেন শিল্পী দেবপ্রিয়া চক্রবর্তী। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে এবার পুজোয় তাঁদের দু’-একটি পালা বন্ধ হয়েছে। তবে যাত্রার ভরা মরশুমে বুকিং ভালোই হয়েছে। আশা করছি, আগামীদিনে এই সামাজিক যাত্রাপালা সাফল্যের মুখ দেখবে। সেই আশাতেই রয়েছেন আমাদের অপেরার সমস্ত শিল্পীরা। একই আশার কথা শুনিয়েছেন নটশিল্পী শ্যামল চক্রবর্তী। তাঁরই রচিত এবং নির্দেশিত ‘অ-এ অজগর আসছে তেড়ে’ যাত্রাপালা ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় সাড়া ফেলেছে। শ্যামলবাবু বলেন, পুজোর ক’দিনও ভালো সাড়া পেয়েছি। এই পালার অন্যান্য শিল্পীরা হলেন হাসি সরকার, মিস কোয়েল, কস্তুরী, সবিতা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। তাঁদের দাবি, এবার এই পালা গ্রামবাংলায় ঝড় তুলবে।
চিৎপুর যাত্রা সমিতির অন্যতম কর্তা হারাধন রায় বলেন, এবারের মরশুমে চিৎপুরের অধিকাংশ অপেরাই ভালো বায়না পেয়েছে। আশা করছি, তারা কিছুটা হলেও এবার লাভের মুখ দেখবে। পুজোর ক’দিন বিভিন্ন জেলায় অপেরাগুলি সুনামের সঙ্গে যাত্রা করেছে। মানুষ যে ফের এই লোকশিল্পকে বরণ করে নিচ্ছে, এটা ভেবে আমাদের ভালো লাগছে। এবার চিৎপুরের কয়েকটি যাত্রা ইতিমধ্যেই জনমানসে ভালো সাড়া ফেলেছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘জীবন একটা আয়না’। রচনা এবং নির্দেশনা মঞ্জিল বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও রয়েছে ‘রাতপরীর রূপকথা’, ‘সিঁথির সিঁদুরে হায়নার থাবা’, অপর্ণা ঘোষ প্রযোজিত এবং বাপি ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মফুলে কেউটের বাসা’, ‘প্রতিশোধের আগুনে পুড়ছে ভালোবাসা’, ‘জনম দুঃখিনী বিষ্ণুপ্রিয়া’, ‘শুধু স্মৃতিটুকুই থাক’, ধর্মপুত্তুর যুধিষ্ঠির’, ‘ইতি তোমার প্রিয়তমা’, ‘শুধু তুমি আর আমি’, ‘কলকাতার নাগিনী গ্রামের বাঘিনী’।
যাত্রাশিল্পীদের অনেকেরই বক্তব্য, একটা সময় এই পুজোর মরশুমেও খুব একটা বুকিং হত না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিশেষ করে এ রাজ্যে পালাবদলের পর পরিস্থিতির কিছুটা বদল এসেছে। বদল ঘটেছে চিৎপুরে যাত্রাপাড়ারও। যাত্রাপাড়ার কর্তাদের বক্তব্য, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে যাত্রাকে যাতে ফের স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা করা যায়, তার জন্য এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকার পাশে দাঁড়ানোয় যাত্রার জমি আগের থেকে অনেকটাই ‘উর্বর’ হয়েছে।
যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা- ৮
‘মা তুমি কার’
সামাজিক যাত্রাপালা
‘মা তুমি কার’ সামাজিক যাত্রাপালা সহ মমতাময়ী বাংলার বিভিন্ন যাত্রাপালা।
আনন্দবীণার পাশাপাশি শ্রীচৈতন্য অপেরার এ বছরের পালাতেও উঠে আসছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। পালার নাম ‘মা তুমি কার’। লিখেছেন অশোক দে ও ব্রহ্মতোষ চট্টোপাধ্যায়। পালার পরিচালনা ও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন রুমা দাশগুপ্ত। সাম্প্রতিক অতীতে এই রুমা দাশগুপ্তও অভিনয় করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকায়।
তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছিল দর্শকদের। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি পালায় উঠে আসতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর এই জনপ্রিয় ও বিশ্বজয়ী প্রকল্প। কোথাও পালার বিষয় কন্যাশ্রী, কোথাও আবার সামাজিক পালার ভেতরে আসছে কন্যাশ্রীর কথা। চিৎপুরের যাত্রাপাড়ায় এখন তোড়জোড় চলছে কন্যাশ্রীকে ঘিরে।
এবার বাংলার যাত্রাপালায় উঠে আসতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পরিকল্পিত ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। জানা গেছে, চিৎপুরের একাধিক দলের পালার বিষয় এবার হয়ে উঠতে চলেছে এই জনপ্রিয় প্রকল্প। সম্প্রতি বিশ্ব জয় করেছে বাংলার নিজস্ব এই প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ–এ রাষ্ট্রপুঞ্জের জনপরিষেবা দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সম্মানিত করা হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পরিকল্পিত এই কন্যাশ্রী প্রকল্পকে। ৬৩টি দেশের ৫৫২টি জনহিতকর প্রকল্পকে নিয়ে যে প্রতিযোগিতা হয় তাতে প্রথম হয় বাংলার গর্বের ‘কন্যাশ্রী’।
একটা সময় ছিল, যখন মনে করা হত কন্যাসন্তান মানেই পরিবারের বোঝা। প্রায়ই মেয়েদের লেখাপড়া থামিয়ে অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। সেই অকাল বিয়ে বন্ধ করে এই রাজ্যের কন্যাসন্তানদের জীবনে এক নতুন দিশা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শুরু করেন এই ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। বর্তমানে ৪০ লক্ষ ৩১ হাজার ছাত্রী এসেছে এই প্রকল্পের আওতায়। শুধু তাই নয়, মাত্র পাঁচ বছরেই উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মুখ দেখেছে এই প্রকল্প। শুধুই আন্তর্জাতিক আসর থেকে বিশ্বজয়ের শিরোপা আদায় করে নেওয়াই নয়, দেখা গেছে এই প্রকল্প রূপায়ণের ফলে ছাত্রীদের স্কুলছুটের সংখ্যা কমেছে ৫৫ শতাংশ, নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়ার সংখ্যা কমেছে ৩৩ শতাংশ। যে–সব পরিবারের বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম, সেই সব পরিবারের কন্যারা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীদের এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করা হয়। তারা পায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বৃত্তি ও নানান সাহায্য।
এই যুগান্তকারী প্রকল্প এ বছর হয়ে উঠেছে বাংলার যাত্রার বিষয়ও। প্রাচীনকাল থেকেই সমসাময়িক নানা সামাজিক ইস্যু বা উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে যাত্রাপালা বাঁধা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে এই যাত্রার আসরে উঠে এসেছে এই রাজ্যের রাজনৈতিক ‘পরিবর্তন’–এর বিষয়ও। সেবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রিত্বে মমতা ব্যানার্জির আগমন নিয়ে সারা বাংলা জুড়ে বাঁধা হয়েছিল অন্তত সাতটি যাত্রাপালা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন যাত্রা জগতের খ্যাতিমান অভিনেত্রীরা। এঁদের মধ্যে একদিকে যেমন ছিলেন রুমা দাশগুপ্ত, অন্যদিকে ছিলেন রুমা চক্রবর্তী।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কনক ভট্টাচার্যের ‘আনন্দবীণা’ অপেরার ‘বাংলার ক্ষমতায় এবার মমতা’। মমতার ভূমিকায় রুমা চক্রবর্তীর অনবদ্য অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। তার পরেও এই ‘আনন্দবীণা’ অপেরার প্রযোজনাতেই রুমা চক্রবর্তী আবার অভিনয় করেছিলেন ‘দিদি তোমার জবাব নেই’ পালায়। প্রথমবারের পালায় ছিল মমতা ব্যানার্জির সংগ্রামের কাহিনী এবং দ্বিতীয় পালায় ছিল মমতা ব্যানার্জির এক বছরের নানা সাফল্য। এবারও কনক ভট্টাচার্যের ‘আনন্দবীণা’ অপেরার যাত্রাপালার বিষয় হয়ে উঠছে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা সম্মেলনের সম্পাদক ও ‘আনন্দবীণা’ অপেরার কর্ণধার কনক ভট্টাচার্য বললেন, যেদিন দ্য হেগ–এ আন্তর্জাতিক আসরে বিশ্বজয় করল আমাদের গর্বের কন্যাশ্রী, সেদিন থেকেই পরিকল্পনায় ছিল যাত্রায় এই প্রকল্পকে আনা। এই প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। যাতে আরও বেশি কন্যা আসতে পারে এই প্রকল্পের আওতায়। যাতে স্কুলছুট বা নাবালিকার বিয়ে রোধ করে রাজ্যের মেয়েদের আরও বেশি করে জীবনের মূল স্রোতে নিয়ে আসা যায়। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর নানা জনহিতকর কাজকে আমরা আমাদের পালায় নিয়ে এসেছি।
এবারও যাত্রার মধ্যে দিয়েই চলবে জনস্বার্থে আমাদের এই লড়াই। বললেন, নতুন এই পালা লিখছেন যাত্রার জনপ্রিয় পালাকার মঞ্জিল ব্যানার্জি। তবে পালার নাম কী হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। ঠিক হয়নি এই পালার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কারা অভিনয় করবেন তাঁদের নামও। তবে কনক ভট্টাচার্য আভাস দিলেন, এই পালায় ফের মমতা ব্যানার্জির ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেন রুমা চক্রবর্তী। জানালেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের পাশাপাশি এই পালায় উঠে আসবে রাজ্য সরকারের অন্যান্য জনহিতকর প্রকল্পের কথাও। জানালেন, ১৫ আগস্টের মধ্যেই মাঠে নামবে এই নতুন যাত্রাপালা।
আনন্দবীণার পাশাপাশি শ্রীচৈতন্য অপেরার এ বছরের পালাতেও উঠে আসছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। পালার নাম ‘মা তুমি কার’। লিখেছেন অশোক দে ও ব্রহ্মতোষ চট্টোপাধ্যায়। পালার পরিচালনা ও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন রুমা দাশগুপ্ত। সাম্প্রতিক অতীতে এই রুমা দাশগুপ্তও অভিনয় করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকায়।
তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছিল দর্শকদের। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি পালায় উঠে আসতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর এই জনপ্রিয় ও বিশ্বজয়ী প্রকল্প। কোথাও পালার বিষয় কন্যাশ্রী, কোথাও আবার সামাজিক পালার ভেতরে আসছে কন্যাশ্রীর কথা। চিৎপুরের যাত্রাপাড়ায় এখন তোড়জোড় চলছে কন্যাশ্রীকে ঘিরে।
loading...
loading...
পোস্ট শেয়ার করার জন্যও প্রয়োজন হয় মেধাশক্তি, নিজস্ব রুচি এবং তথ্য সংগ্রহ। সর্বোপরি পোস্টের সার্থকতা সেখানেই যদি পাঠক সেটিকে আন্তরিকতায় গ্রহণ করেন। শুভেচ্ছা মি. ভাণ্ডারী।
আমার একটি তথ্য দরকার কবি। আপনার ব্লগিং জীবনের শুরু এবং কয়টি ব্লগে সংযুক্তি রয়েছে এই অভিজ্ঞতাটি আমাদের সাথে শেয়ার করলে খুশি হবো। ধন্যবাদ।
loading...
যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালার শেষ পর্ব আগামীকাল প্রকাশ দেব। পরবর্তী বিভাগ শুরু হবে পালা কীর্তন ও বাউলগান বিভাগ নিয়ে। আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আপনি অনুমতি প্রদান করলেই আগামী সোমবার থেকেই উক্ত বিভাগ শুরু হবে।
প্রসঙ্গত: বলে রাখি, আমার ব্লগিং জীবনের শুরু কখন থেকে তা সঠিক বলতে পারবো না। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা প্রকাশ করার সাথে সাথে সবার অজান্তে কখন ব্লগিং শুরু করেছি তা বলতে পারবো না তবে ব্লগিং করা আপাততঃ পঞ্চম বর্ষে পদার্পন করলো। আমার প্রথম নিজস্ব ব্লগ, Get Bengali Status. এতে আমার লেখা কবিতার সাথে সাথে বাঙালী জীবনের সত্ত্বাকে একাত্তীকরণ করা হয়েছে। বহু চিত্র সহযোগে আমার এই ব্লগটি পাঠকের কাছে হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠেছে।
আমার অন্যান্য ব্লগগুলি হল কবিতার আসর কাব্যমেলা, আমার কবিতা, আমার প্রাণের ঠাকুর, লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর কবিতা ইত্যাদি। যাত্রা বিষয়ক দুটি ব্লগ আছে “যাত্রার আসর নাচ ও গান” আর “যাত্রামঞ্চ নাচ গান ও অভিনয়” ব্লগ।
সাথে থাকার জন্য ও আন্তরিকতায় আপ্লুত হলাম।
আমার সশ্রদ্ধ অভিবাদন গ্রহণ করুন।
জয়গুরু!
loading...
প্রসঙ্গ : পালা কীর্তন ও বাউলগান। কনসেপ্ট হিসেবে ভালোই হবে।
loading...
আন্তরিকতায় আপ্লুত হলাম। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
সাথে থাকুন সতত ও নিরন্তর।
জয়গুরু!
loading...
শেয়ারিং দারুণ উপভোগ করলাম ভাণ্ডারী দা। পাশাপাশি আপনার ব্লগিং জীবনের কর্মযজ্ঞও পড়লাম। আপনি একজন একনিষ্ঠ মানুষ সেটা আপনার ব্লগিং এর ধরণ দেখলেই বোঝা যায়। আমার অভিনন্দন জানবেন।
loading...
সুন্দর মন্তব্যের প্রশংসা করি প্রিয়কবি।
আপনাকে আমার আরও কিছু তথ্য প্রদান করতে চাই।
আমি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী বলছি
আমার নাম লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী,
আমার দেশ ভারত
আমার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ
আমার জেলা পশ্চিম বর্ধমান
আমার মহকুমা আসানসোল
আমার ব্লক ও থানা জামুড়িয়া
আমার অঞ্চল ও ডাক হিজলগড়া
আমার গ্রাম পাথরচুড়
বর্তমান অবস্থান নারায়না বিহার- নতুন দিল্লি
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর উল্লেখযোগ্য তথ্যসমূহ:
আমি একজন বাঙালি। আমি বাঙালি হয়ে গর্বিত।আমি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন হিন্দু সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী বিশ্বাস করেন বিজ্ঞান চিরন্তন:
আমি প্রকৃতিপ্রেমী এবং মনে করি একে মানুষের ক্রিয়াকলাপ থেকে রক্ষা করতে হবে।আমি বাংলার সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা ও অনুকরণ করি।
আমি মুক্ত জ্ঞানে বিশ্বাসী ও একজন স্বভাবধর্মী কবি।
আমি বাংলা, ওড়িয়া, অসমীয়া, হিন্দি, মারাঠি, গুজরাটি, পাঞ্জাবী মোটামুটিভাবে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারি।
দক্ষিণের ভাষা মালয়ালম টাইপ করতে পারি। অক্ষর পরিচয়জ্ঞান আছে।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। দেশ ও জাতির সেবায় সকলে এগিয়ে আসুন।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
loading...
যাত্রাকলা শিল্পকে ধ্বংসের হাত হতে বাঁ!চাতে হবে। এমন ধরণের আর্টিকেল যত বেশী আসবে ততোই মানুষ সচেতন হবে। অনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কবি দা।
loading...
যাত্রা বাংলাদেশের এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটি ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় লোকনাট্য ধারা। ধর্মীয় বা অন্য কোনো উৎসবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার যে রীতি সেখান থেকেই যাত্রা শব্দের উৎপত্তি । উচ্চ শব্দ, চড়া আলো, অতি নাটকীয় ভাবভঙ্গি ও দৈত্যাকার মঞ্চে উপস্থাপন- যাত্রার মূল বৈশিষ্ট্য। বাংলার কৃষক, তাঁতি, জেলে, কামার, কুমার রাতের পর রাত জেগে যাত্রার কাহিনী, অভিনয়, গানের মাধ্যমে লোকজ নীতিবোধ, শুভ-অশুভের দ্বন্দ্ব নিয়ে যাত্রা দেখেছে। ষোড়শ শতকে অভিনয় কলা হিসেবে যাত্রার উদ্ভব হলেও এর বিকাশ শুরু হয় অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি। একবিংশ শতকের গোড়ার দিকেই নানাকারণে যাত্রা শিল্পের অগ্রগতি থমকে যায়।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। প্রিয়কবিকে শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু!
loading...
নানা প্রতিকূলতার মধ্যে যাত্রাকে যাতে ফের স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা, তার জন্য এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকার পাশে দাঁড়ানোয় যাত্রার জমি আগের থেকে অনেকটাই ‘উর্বর’ হয়েছে। এটাতো অনেক আনন্দের সংবাদ।
loading...
পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যাত্রা শিল্পকে বাঁচাতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন যাত্রা অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাস। ‘মা সারদা’ এবং ‘আজ প্রতিমার সিঁদুর দান’ পালার মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন পূবালি বসু। তিনি বলেন, সব থেকে বড় কথা হল নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফি বছর নতুন নতুন শিল্পীদের সরকারি তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের যাত্রা অ্যাকাডেমির তরফ থেকে শংসাপত্রও দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে এই নবাগতরা যাত্রাপালায় অভিনয়ের সুযোগও পান। পালাকার মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়, উৎপল রায়, অনল চক্রবর্তী প্রমুখ বলেন, এই শিল্প বাঁচলে, এর সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষের জীবনও বাঁচবে। তাই মাসব্যাপী যাত্রা উৎসবের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।
সাথে থাকবেন- এটা প্রত্যাশা করি।
জয়গুরু!
loading...
বাংলাদেশে যাত্রাপালা শিল্পের দূর্দিন চলছে।
loading...
আজকাল যাত্রা করে মানুষকে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা মুশকিল৷ যাত্রার সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িয়ে থাকা এই শিল্পীর বক্তব্য, ‘‘এই প্রজন্ম যাত্রা নিয়ে তেমন আগ্রহী নয়৷ মঞ্চে যাত্রা চলাকালীন এই প্রজন্ম মোবাইলে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ করতেই ব্যস্ত থাকে৷ মন সেখানেই পড়ে থাকে৷ আবার ভালো না লাগলে তাঁদের অনেকে যাত্রা ছেড়ে বেরিয়েও যাচ্ছেন৷
যাত্রার সুদিন ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!
loading...
যাত্রাপালার সুদিন ফিরে আসুক, শুভ কামনা সতত।
loading...
সহমত। যাত্রাশিল্পের সুদিন ফিরে আসুক। আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস-যাত্রা শিল্পের সুদিন ফিরে আসবে। বর্তমানে নতুন নতুন শিল্পীদের সরকারি তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের যাত্রা অ্যাকাডেমির তরফ থেকে শংসাপত্রও দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে এই নবাগতরা যাত্রাপালায় অভিনয়ের সুযোগও পান। পালাকার মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়, উৎপল রায়, অনল চক্রবর্তী প্রমুখ বলেন, এই শিল্প বাঁচলে, এর সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষের জীবনও বাঁচবে। তাই মাসব্যাপী যাত্রা উৎসবের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।
সাথে থাকবেন- এটা প্রত্যাশা করি।
জয়গুরু!
loading...
যাত্রাপালা নিয়ে আপনার বিজ্ঞ লেখাগুলো পাঠকের দৃষ্টিআকর্ষণের দাবীদার । আপনার ব্লগিং জীবনের চমৎকার আয়োজন দেখে মুগ্ধ হলাম । শুভকামনা
loading...
যাত্রা শিল্পের নেতারা জানান ১৯৭৫ সালের পর থেকেই যাত্রাপালা আয়োজনের ওপর বিধিনিষেধ আসতে থাকে –প্রশাসন এখন যাত্রার নামই শুনতে চায় না । যাত্রা শিল্পের সাথে জড়িত শত লেখক , শিল্পীর জীবন , জীবীকাও এখন ধ্বংসের পথে।“
বর্তমানে টিকে থাকা কিছু যাত্রা দল হল যশোরের আনন্দ অপেরা , চ্যালেঞ্জার অপেরা , অগ্রগামী নাট্য সংস্থা , মাগুরার চৈতালী অপেরা , নারায়ণগঞ্জের ভোলানাথ যাত্রা সম্প্রদায় , কহিনূর অপেরা , খুলনার স্বদেশ অপেরা রাজমহল অপেরা , রঙমহল অপেরা , লক্ষীপুরের কেয়া যাত্রা প্রভৃতি । যাত্রা বাংলার লোকজ সংস্কৃতির মুল্যবান সম্পদ। তাই যাত্রাপালার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্পরুপ, জীবন-যাপন, কলা-কৌশল ইত্যাদি নিয়ে বিশদ গবেষণা ও পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
সুচিন্তিত মতামত দিয়ে অনুপ্রেরণা দেবেন, এটা প্রত্যাশা করি।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। অভিনন্দন রইলো।
জয়গুরু।
loading...
বর্তমানে টিকে থাকা কিছু যাত্রা দল হল যশোরের আনন্দ অপেরা , চ্যালেঞ্জার অপেরা , অগ্রগামী নাট্য সংস্থা , মাগুরার চৈতালী অপেরা , নারায়ণগঞ্জের ভোলানাথ যাত্রা সম্প্রদায় , কহিনূর অপেরা , খুলনার স্বদেশ অপেরা রাজমহল অপেরা , রঙমহল অপেরা , লক্ষীপুরের কেয়া যাত্রা প্রভৃতি । যাত্রা বাংলার লোকজ সংস্কৃতির মুল্যবান সম্পদ। তাই যাত্রাপালার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্পরুপ, জীবন-যাপন, কলা-কৌশল ইত্যাদি নিয়ে বিশদ গবেষণা ও পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
আগামীকাল যাত্রার আসর যাত্রমঞ্চ বিভাগে যাত্রাপালা-১০ (শেষ পর্ব) প্রকাশিত হবে।
এর পর পালা কীর্তনগান ও বাউলগান বিভাগ শুরু করার ইচ্ছা আছে।
সুচিন্তিত মতামত দিয়ে অনুপ্রেরণা দেবেন, এটা প্রত্যাশা করি।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। অভিনন্দন রইলো।
জয়গুরু।
loading...