যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা- ৭

যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা- ৭

শীততাপনিয়ন্ত্রিত শপিং মলগুলির ভেতরের বায়োস্কোপ আর কার্নিভালের চাপে অনেক বছর ধরেই যাত্রাপালার আসর আর বসে না শহর ও পাড়াগাঁয়ে। আর মন্দার বাজারে যাত্রার শিকেয় উঠেছে বুকিং। পুজো কেটে গেছে। আগে পুজোর সময় যাত্রার একটা চলন ছিল। যাত্রা দেখার জন্য মানুষ অপেক্ষায় থাকতেন। পুজোর সঙ্গে যাত্রাপালা নিয়ে আলাদা একটা উন্মাদনা ছিল গ্রামগঞ্জে। মুখে মুখে ফিরত পালার কথা। বহু দূর থেকে যাত্রাপ্রিয় মানুষে ছুটে আসতেন। আগে পুজো কমিটির বাজেটেও যাত্রার জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকত। এখন তা উঠেই গেছে। পুজো কমিটি সেই অর্থ খরচ করছে এখন অন্যখাতে।

দুর্গাপুর শিল্প শহর আধুনিক হচ্ছে। আগে গ্রামের রাস্তা দিয়ে শীতের মরশুমে রিকশার পেছনে ঝুলত রঙিন যাত্রাপালার পোস্টার। পেছনে ছুটত গাঁয়ের আদুল গায়ের কচিকাঁচারা। রিকশা প্রচার করতে করতে ক্রমে গ্রামের ভেতরে ঢুকে যেতে। রাস্তায় উড়ে বেড়াত লিফলেট। ঘোমটা টেনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসতেন নববধূরাও। এখন সেই দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। অশ্রুসজল সামাজিক যাত্রাপালা নিয়ে মাইকে ঘোষণা আর শোনা যায় না।

পাঁচ, ছয় বছর আগেও দুর্গাপুর, অন্ডাল, রানীগঞ্জ, আসানসোল শহর লাগোয়া গ্রামগুলিতে পুজোর সময় যাত্রা হত টানা ৭ দিন ধরে। বিভিন্ন পালা চলত। এখন তা উঠেই গেছে। এখন বাড়ির টেলিভিশনের পেছনেই গোটা পরিবার। পুজোর পরেই খোলা মাঠে টিন ঘিরে যাত্রার মঞ্চ তৈরি হত। বিকেল থেকে রাস্তায় লোকের ভিড় বাড়তে থাকত। সন্ধে নামতেই টিকিট কাউন্টারে ভিড়। সামনে বসার তাগিদে আগেভাগে যাত্রার আসরে ঢুকে পড়তেন দর্শকরা। বসে জমিয়ে গল্প, খাওয়াদাওয়া চলত। ধীরে ধীরে যাত্রা আসার ভরে উঠত। লোকের কোলাহল, বাদামভাজা নিয়ে হকারে হাঁক। এক সময় এক একে করে নিভে আসত আসরের আলো। থেমে যেত কোলাহল। শুরু হত যাত্রাপালা।

বীণা দাশগুপ্ত, শান্তিগোপাল ও স্বপন কুমার আর নেই। তাই শহর আর সব গ্রামাঞ্চল থেকে যাত্রা উধাও হয়ে গেছে। এখন চলছে ডিজে, অর্কেস্ট্রা বা ‘বুগিবুগি’ নাচ।

রানীগঞ্জের রানীসায়ের মোড়ে জেলার একমাত্র যাত্রাপালার বুকিং কাউন্টার খোলা রাখা হয়। রথের দিন থেকেই যাত্রা বুকিং শুরু হয়ে যেত। রঙচঙে পোস্টার ঘেরা থাকত বুকিং কেন্দ্রগুলি। এখন যাত্রাশিল্প প্রায় ধুঁকছে। কত আকর্ষণীয়, চোখধাঁধানো পালা রয়েছে। নামীদামী শিল্পীর, বুকিং নেই। একসময় জামুড়িয়া, বারাবনি, পান্ডবেশ্বর ব্লকে যাত্রা দেখা মানুষের নেশা ছিল।

বছরে এক দু-দিন যাত্রা দেখতেই হবে। সেইরকম দর্শকদের এখন ভীষণ অভাব। ক্লাবগুলি থেকেও আর সেরকম ডাক পায় না। টিকিট কেটে দর্শকদের ভিড় উপচে পড়ত। এখন বুকিং সংস্থার মালিকরা এই কারবার গুটিয়ে ফেলতে চাইছেন। চটকদারি বিজ্ঞাপন দিয়েও দর্শক টানা যাচ্ছে না। নতুন প্রজন্ম আধুনিক গান, নাচের দিকেই বেশি ঝুঁকছে। বুকিং কেন্দ্রের মালিক অবিনাশ সাই বলেন, বছরের মধ্যে দু-তিনটে যাত্রার বুকিং হচ্ছে না। সংসারে অভাব চলে। কেউ দেখতে চায় না অভিনয়। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে যাত্রাশিল্পের জৌলুস। সিনেমায় ভিড় বেশি।

সামাজিক যাত্রাপালা ‘মেয়েরা কবে স্বাধীন হবে?’ শেষ হয়েছে। তবু দর্শকেরা কেউ যাত্রার আসর থেকে নড়ছেন না। কারণ তাঁরা জানেন, তাঁদের সবার প্রিয় অভিনেত্রী যাত্রালক্ষ্মী বীণা দাশগুপ্তা এবার তাঁর অভিনীত পুরনো যাত্রাপালাগুলির অন্তত দুটো গান পরিবেশন করবেন। কিন্তু বীণাদেবী আসছেন কই? দর্শকদের কেউ কেউ অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। যাত্রাদলের একে ওকে তাকে বলার পর অবশেষে মঞ্চে এলেন তিনি। সমস্বরে দর্শক-আসন থেকে দাবি—

দিদি নটী বিনোদিনীর ‘যেন ঠাঁই পাই তব চরণে…’ গানটা। কেউ কেউ বলছেন, দিদি, মীরার বঁধুয়ার ‘জাত সঁপেছে কৃষ্ণপায়ে’ গানটা শোনাতেই হবে।

দিদি দুটি গানই গাইলেন। গান থামার পর আরও একই আবেদন। এবার দিদি বললেন, ‘আজ থাক, পরের বার আবার!’
অনেক বছর আগে আসানসোলের রামসায়ের ময়দানে যাত্রার আসরে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনাটি প্রমাণ করে বীণাদেবীর প্রতি হাজার হাজার মানুষের প্রত্যাশা কতটা ছিল। শুধু আসানসোলের এই একটি আসরেই নয়, গ্রাম-বাংলার সর্বত্র যেখানেই বীণা দাশগুপ্তা অভিনয় করতে গেছেন সাধারণ দর্শকদের মধ্যে এমন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যেত। গান শেষ হতেই এক বয়স্কা প্রশ্ন করলেন, ‘এমন সুরেলা হৃদয়স্পর্শী গলা আপনার বছর বছর একইরকম থাকে কীভাবে?’ কেউ বা বলছেন, ‘সুরসম্রাজ্ঞী লতা বা বাংলা গানের সন্ধ্যার মতো আপনিও কণ্ঠের মেজাজটা একইরকম রেখেছেন কোন জাদুতে?’
সামাজিক পালায় দাপটের সঙ্গে অভিনয় এবং পরে ওই দুটি ভক্তিমূলক গান পরিবেশন করেও দিব্যি তরতাজা বীণাদির অকপট উত্তর, ‘এ সবই সম্ভব করুণাময় ঈশ্বরের আশীর্বাদ এবং আপনাদের সবার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসার জন্য।’ মুহূর্তে করতালির ধ্বনিতে ভরে গেল আশপাশ।

‘যাত্রালক্ষ্মী’কে ঘিরে মানুষের এমনই প্রবল আকর্ষণ ছিল। তিনি নিজেও বলেছেন, ‘অভিনয়ই আমার জীবনের সর্বস্ব, তাই দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য আমার চেষ্টা সর্বক্ষণ থাকে একইরকম।’ অভিনয় চলাকালীন মাঝে মাঝে দর্শকদের মাঝে মিলেমিশে একাত্ম হবার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। ‘ওগো বিষ্ণুপ্রিয়া’ যাত্রাপালায় যিনি বিষ্ণুপ্রিয়া চরিত্রে সাবলীল অভিনয় ও গানে মাতিয়ে দিয়েছিলেন আসানসোলের একটি মঞ্চে, কয়েক বছর পর তিনিই আবার ওই মঞ্চেই ‘আমি নিমাই-এর মা’ পালার শচীমাতার চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন। এই পালার একেবারে শেষ দৃশ্যে শচীমাতার চরিত্রে বীণাদেবী ‘নিমাই, নিমাই….’ বলতে বলতে মঞ্চ থেকে নেমে দর্শকদের ভিড়ের মধ্যে মিশে যান আবেগে আত্মহারা হয়ে। এভাবে মঞ্চ ছেড়ে একেবারে মাটির সাধারণ দর্শকদের সামনে চলে আসার ঘটনাটি সেদিন অনেককেই অবাক করেছিল।

পরবর্তীকালে আসানসোলের এক যাত্রা আসরের গ্রিন-রুমে বসে আমায় বলেছিলেন, ‘শচীমাতার ওই আবেগকে আমি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি না। নিমাইয়ের খোঁজে যাত্রার আসরের আনাচে-কানাচে আমি তখন পাগলিনীর মতো ওইভাবে ছুটে যাই। আসলে আমি দর্শকদের সঙ্গে ওভাবেই একাত্ম হতে চাই…।’

এই শিল্পীর যাত্রার আসরের নিজস্ব গ্রিনরুমটি সর্বত্রই প্রায় একইরকম থাকত। আসানসোলের পর এই শিল্পীর সঙ্গে কথা হয় পুরুলিয়ার পুনচা থানার বাগদা গ্রামের এক যাত্রার আসরে। সেখানকার হাইস্কুল সংলগ্ন মাঠে সেবার গ্রিনরুমে ঢুকেই আমার মনে হল, আসানসোলের গ্রিনরুমটাই বোধহয় বীণাদেবীর সঙ্গে সঙ্গে এখানে চলে এসেছে। সেভাবেই পর্দা টাঙানো। সাজ-সজ্জার বিভিন্ন উপাদান একইরকমভাবে ছড়ানো আছে। সেই চেয়ার-টেবিল এমনকী পানের পিক ফেলার পাত্রটিও।
রীতিমতো বিস্ময়ের ঘোরে দিদিকে প্রশ্ন করলাম, দিদি, আপনার পানের পিক ফেলার সেই পাত্রটাই, যেটা আসানসোলে দেখেছিলাম!

হাসতে হাসতে দিদি বলেছিলেন, ‘বাঃ তুই দারুণ লক্ষ্য করিস তো! হ্যাঁ, আমার গ্রিনরুমকে ঘিরে সর্বত্রই একইরকম ব্যবস্থা থাকে। তা না হলে অভিনয়ের মেজাজটা ঠিক আসে না।’

তাঁর অভিনয়ের মেজাজটি গড়ে তুলতে সবথেকে সক্রিয় ভূমিকা ছিল বীণাদির গুরু তথা অভিনেতা স্বামী অরুণ দাশগুপ্তের। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর বিভিন্ন যাত্রা দলে অভিনয় করেছেন ‘নটী বিনোদিনী’, ‘মীরার বঁধুয়া’, ‘মা-মাটি-মানুষ’, ‘অচল পয়সা’, ‘তালপাতার সেপাই’, ‘হরেকৃষ্ণ হরেরাম’ সহ একাধিক পালায়। বাংলা যাত্রা জগতে অরুণ দাশগুপ্ত অবশ্যই একটি উল্লেখযোগ্য নাম। অভিনয় এবং পরিচালনা দুটো ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। গিরিশ ঘোষের কাছে বিনোদিনী এসে করজোড়ে বলেছিলেন, ‘আমাকে আপনি তৈরি করে নেবেন…’, এমন কী তাঁর উদ্দেশে গেয়েছিলেন সেই বিখ্যাত গানটি ‘যেন ঠাঁই পাই তব চরণে…।’ মঞ্চে যাত্রাপালায় বলা গিরিশরূপী অরুণ দাশগুপ্তকে বিনোদিনীরূপী বীণা দাশগুপ্তা বাস্তবে সেই কথা যেন বারবার বলতেন। এই প্রসঙ্গটি দিদির কাছে তোলায় হাসতে হাসতে মাথা নেড়ে সম্মতি জানান। তাঁর কথায়, ‘উনিই আমাকে ঠিকমতো তৈরি করেছেন, অভিনয়ের যেটুকু শিখেছি তাঁর কৃতিত্ব পুরোটাই ওনার (অরুণ দাশগুপ্তের)।’

শোক-সংবাদ

অরুণ দাশগুপ্ত ও বীনা দাশগুপ্তা র অমর আত্মার শান্তি কামনা করি।
তাঁদের মহাপ্রয়াণে যাত্রাজগতের যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো বর্তমান যাত্রামোদী দর্শক ও যাত্রা-অভিনেতাগণ ও অভিনেত্রীবৃন্দ তার সঠিক মূল্যায়ণ করতে সম্পূর্ণ অক্ষম।

……………….
যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা- ৭

নটী বিনোদিনী
সামাজিক যাত্রাপালা

নটী বিনোদিনী সামাজিক যাত্রাপালার সংক্ষিপ্ত কথাসার:

১৮৮৩ সালের দিকে গিরিশ ঘোষ স্টার থিয়েটার গড়ে তুলেছিলেন। কারণ গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারের মালিক ছিলেন একজন অবাঙ্গালী ব্যবসায়ী প্রতাপচাঁদ জহুরী, যিনি থিয়েটারকে ব্যবসা হিসেবেই দেখতেন। তাই তাঁর অধীনে কাজ করা গিরিশ ঘোষ এবং বিনোদিনী কারও পক্ষেই সহজ ছিল না। থিয়েটার গড়ে তোলার জন্য যে রকম টাকা পয়সা দরকার ছিল , তা গিরিশ ঘোষের ছিল না। একজন ২০-২১ বছরের ব্যবসায়ী গুরমুখ রায় অর্থ সাহায্য প্রদান করেন।

থিয়েটারের চেয়ে তার বিনোদিনীর প্রতিই বেশি আকর্ষণ ছিল। গুরমুখ রায় বিনোদিনীকে ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিতে চেয়েছিল যাতে সে অভিনয় ছেড়ে দেয়।বিনোদিনী আংশিক রাজী হন সে প্রস্তাবে কারণ তিনি অভিনয় ছাড়তে রাজী ছিলেন না। গুরমুখ রায়ের রক্ষিতা হন বিনোদিনী।

এই ঘটনায় তাঁর পূর্ববর্তী মালিক ধনী জমিদার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তিনি লাঠিয়াল দিয়ে নতুন থিয়েটার ভেঙ্গে দিতে চেষ্টা করেন।সেই ধনী জমিদার তলোয়ার হাতে বিনোদিনীর শোবার ঘরে প্রবেশ করে তাকে খুন করতে উদ্যত হন। কিন্তু বিনোদিনী উপস্থিত বুদ্ধির জোরে সে যাত্রা বেঁচে যান।

সমাজের সকল স্তরের মানুষই তাঁর অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছিলেন । তাঁর প্রশংসক দের তালিকায় ছিলেন , ফাদার লাঁফো, এডুইন আরনল্ড, কর্ণেল অলকট প্রমুখ । রামকৃষ্ণদেব তাঁর চৈতন্যলীলার অভিনয় দেখে তাঁকে গ্রীনরুমে গিয়ে চৈতন্য হোক বলে আশীর্বাদ করেছিলেন । বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর উপন্যাসের চরিত্রগুলিকে বিনোদিনীর মধ্যে দিয়ে সফলভাবে গড়ে উঠতে দেখেছিলেন । তাঁর অভিনয়ের গুরু তাঁর বহু প্রশংসা করেছিলেন । গিরিশচন্দ্রের ‘কি করিয়া বড় অভিনেত্রী হইতে হয়’ শীর্ষক প্রবন্ধের আলোচনায় বিনোদিনীর জীবনচর্চাকে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন । তৎকালীন সংবাদপত্রগুলি বিনোদিনীকে ফ্লাওয়ার অফ দি নেটিভ স্টেজ, মুন অফ স্টার কোম্পানী, প্রাইমাডোনা অফ দি বেঙ্গলী স্টেজ আখ্যা দিয়েছিল।

বিনোদিনী ধনী যুবক ৫০০০০ টাকার প্রলোভন ত্যাগ করেন । বরং বাংলা থিয়েটারের উন্নতির জন্য তিনি নতুন থিয়েটার খুলতে রাজি হন এবং গুর্মুখ রায়ের বক্ষিতা হতেও রাজি হন । বিনোদিনীর ইচ্ছা ছিল যে নতুন থিয়েটার তৈরি হবে তা বিনোদিনীর নামে বি-থিয়েটার হবে । কিন্তু কিছু মানুষের প্রতারনার শিকার তিনি হন । যাঁদের মধ্যে তাঁর নিজের অভিনয় গুরু গিরীশ ঘোষ ছিলেন । বিনোদিনীর ত্যাগ স্বীকারে যে নতুন থিয়েটার তৈরি হয় বিনোদিনীর নাম তাতে থাকেনি । এই নতুন থিয়েটারের নাম হয় স্টার থিয়েটার । এই বিশ্বাসঘাতকতায় যখন বিনোদিনী দুঃখে বেদনায় কাতর তখনই রামকৃষ্ণদেব তাঁর চৈতন্যলীলা নাটক দেখতে এসে তাঁকে আশীর্বাদ করেন । এর দুবছর পরেই 1886 খ্রীষ্টাব্দে মাত্র ২২-২৩ বছর বয়েসে তিনি রঙ্গমঞ্চ ত্যাগ করে যান । তারপর দীর্ঘদিন জীবিত থাকলেও কখনও অভিনয়ে ফিরে আসেননি । ফলে বাংলা থিয়েটার বঞ্চিত হয় এক অসামান্য অভিনেত্রীর প্রতিভা এবং অভিনয় থেকে ।

নটী বিনোদিনী যাত্রা পালায় বিনোদিনীর ভূমিকায় অভিনয় করে গেছেন যাত্রালক্ষ্মী বীনা দাশগুপ্তা। গিরীশ ঘোষের ভূমিকায় অভিনয় করে গেছেন অরুণ দাশগুপ্ত। যাত্রাপালাটি পরিবেশনা করেছিলেন নট্ট কোম্পানি।

স্মৃতি যখন বিস্মৃতির আয়নায়, তখন আবার নটী বিনোদিনী পালাটিকে পুনরায় দর্শকের দরবারে আনা হলো। এবার দু’বছর পর ভৈরব অপেরায় পালাটি মঞ্চস্থ হবে। নাম ভূমিকায় থাকছেন রেশমা ঘোষ। মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় যাত্রাপালাটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে আশা রাখি।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১২ টি মন্তব্য (লেখকের ৬টি) | ৬ জন মন্তব্যকারী

  1. শান্ত চৌধুরী : ১২-০৭-২০১৯ | ১৫:১১ |

    তথ্যবহুল লিখা, শুভ কামনা সতত…   

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১২-০৭-২০১৯ | ১৫:৫৬ |

      পালাগান বা যাত্রপালা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। একদিন যাত্রাশিল্পের রমরমা বাজার ছিল এখন তা বিলীন হবার জোগাড়। তবু দেখে ভালো লাগে আমার গ্রামে এই পালাগানের আসর দেখে।

      সাথে থাকবেন এটা আশা রাখি।
      জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...
  2. মুরুব্বী : ১২-০৭-২০১৯ | ১৯:১২ |

    যাত্রার আসর যাত্রামঞ্চ যাত্রাপালা শীর্ষক লিখাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১৩-০৭-২০১৯ | ১৩:০৫ |

      রানীগঞ্জের রানীসায়ের মোড়ে জেলার একমাত্র যাত্রাপালার বুকিং কাউন্টার খোলা রাখা হয়। রথের দিন থেকেই যাত্রা বুকিং শুরু হয়ে যেত। রঙচঙে পোস্টার ঘেরা থাকত বুকিং কেন্দ্রগুলি। এখন যাত্রাশিল্প প্রায় ধুঁকছে। কত আকর্ষণীয়, চোখধাঁধানো পালা রয়েছে। নামীদামী শিল্পীর, বুকিং নেই। একসময় জামুড়িয়া, বারাবনি, পান্ডবেশ্বর ব্লকে যাত্রা দেখা মানুষের নেশা ছিল।

      সাথে থাকবেন এটা প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...
  3. সুমন আহমেদ : ১২-০৭-২০১৯ | ১৯:৪১ |

    নেপথ্যের এই ইতিহাস ক'জনাই বা মনে রেখেছে অথবা রাখে আজকাল। দৃষ্টান্ত হয়ে থাক আপনার পোস্ট। ধন্যবাদ কবি।  

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১৩-০৭-২০১৯ | ১৩:০৭ |

      বছরে এক দু-দিন যাত্রা দেখতেই হবে। সেইরকম দর্শকদের এখন ভীষণ অভাব। ক্লাবগুলি থেকেও আর সেরকম ডাক পায় না। টিকিট কেটে দর্শকদের ভিড় উপচে পড়ত। এখন বুকিং সংস্থার মালিকরা এই কারবার গুটিয়ে ফেলতে চাইছেন। চটকদারি বিজ্ঞাপন দিয়েও দর্শক টানা যাচ্ছে না। নতুন প্রজন্ম আধুনিক গান, নাচের দিকেই বেশি ঝুঁকছে। বুকিং কেন্দ্রের মালিক অবিনাশ সাই বলেন, বছরের মধ্যে দু-তিনটে যাত্রার বুকিং হচ্ছে না। সংসারে অভাব চলে। কেউ দেখতে চায় না অভিনয়। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে যাত্রাশিল্পের জৌলুস। সিনেমায় ভিড় বেশি।

      মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানাই।
      সাথে থাকবেন এটা প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...
  4. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ১২-০৭-২০১৯ | ১৯:৫৮ |

    আমাদের যাত্রামঞ্চের যাত্রাপালা আমাদের মাঝে আর নেই। Frown

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১৩-০৭-২০১৯ | ১৩:১২ |

      পালাগান বা যাত্রপালা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। একদিন যাত্রাশিল্পের রমরমা বাজার ছিল এখন তা বিলীন হবার জোগাড়। তবু দেখে ভালো লাগে আমার গ্রামে এই পালাগানের আসর দেখে।

      আন্তরিকতায় পাশে রাখুন। প্রীতি আর শুভেচ্ছা রইলো।
      সাথে থাকুন সতত, নিরন্তর। ধন্যবাদ। জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...
  5. রিয়া রিয়া : ১২-০৭-২০১৯ | ২০:২০ |

    পড়লাম কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১৩-০৭-২০১৯ | ১৩:১৪ |

      অভিনয়, আলোকসজ্জা, মেকআপ এবং আবহসঙ্গীত সবটাতেই এখনও সেই আপন আপন ছোঁয়া রয়ে গেছে। কোনোটাই বাজার চলতি জিনিস কেনা নয়। আবহসঙ্গীত নিজের হাতে পরিবেশন করা হয় স্টেজের পাশ থেকে। পাশের ফাঁকা জায়গা থেকে অভিনেতারা উঠে আসেন। সবথেকে উল্লেখ্য হচ্ছে গান। পালাগানের অন্যতম শর্ত হচ্ছে গানের মাধ্যমে সবটুকু কাহিনী ব্যক্ত করা, সংলাপের অংশ এখানে তুলনায় কম থাকে। অভিনেতারা যথেষ্ট সাবলীল এবং দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করে যান। তাদের এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।

      আন্তরিকতায় পাশে রাখুন। প্রীতি আর শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় কবিবোন।
      সাথে থাকুন সতত, নিরন্তর। ধন্যবাদ। জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...
  6. আবু সাঈদ আহমেদ : ১২-০৭-২০১৯ | ২০:৫১ |

    শেয়ারড পোস্টে ধন্যবাদ।

    GD Star Rating
    loading...
    • লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী : ১৩-০৭-২০১৯ | ১৩:১৫ |

      স্মৃতি যখন বিস্মৃতির আয়নায়, তখন আবার নটী বিনোদিনী পালাটিকে পুনরায় দর্শকের দরবারে আনা হলো এবার দু’বছর পর ভৈরব অপেরায় পালাটি মঞ্চস্থ হবে নাম ভূমিকায় রেশমা ঘোষ মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় যাত্রাপালাটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে আশা রাখি

      আন্তরিকতায় পাশে রাখুন। প্রীতি আর শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় কবি।
      সাথে থাকুন সতত, নিরন্তর। ধন্যবাদ। জয়গুরু!

      GD Star Rating
      loading...