মহা- শিবরাত্রি ব্রত

মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। মহাশিবরাত্রি হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহা রাত্রি’। অন্ধকার আর অজ্ঞতা দূর করার জন্য এই ব্রত পালিত হয়। কুমারীগণ এইদিন সারাদিন উপবাসী থেকে শিবলিঙ্গে গঙ্গাজল, দুধ, বেলপাতা, ফুল দিয়ে পূজা করে থাকে।

শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে প্রচুর জীবহত্যা করত। একদিন শিকারে বেরিয়ে তার খুব দেরী হওয়ার ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হিংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয় । কোনো শিকার না পেয়ে সে হতাশ হয়ে গাছ থেকে একটা করে পাতা ছিঁড়ে নীচে ফেলতে থাকে । সেই গাছটি ছিল বেলগাছ । আর সেই বেলগাছের নীচে একটি শিবলিঙ্গ ছিল। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ বাড়ী ফিরে এলে তার খাবার সে এক অতিথিকে দিয়ে দেয়। এতে তার ব্রতের পারণ ফল লাভ হয়।

এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে যমদূতরা তাকে নিতে আসে। কিন্তু শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হেতু শিবদূতরা এসে যুদ্ধ করে যমদূতদের হারিয়ে ব্যাধকে নিয়ে যায়। যমরাজ তখন শিকার করেন যে শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে এবং শিব বা বিষ্ণুর ভক্ত যেই জন, তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকেনা। সে মুক্তিলাভ করে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।

কথিত আছে, আজ এই চতুর্দশী রাত্রে শিবের বিবাহ হয় পার্বতীর সাথে। তাই এই দিনে কুমারী মেয়েরা উপবাসী থেকে বিল্বপত্র, ধুতুরা, আকন্দ ও বেল শিবলিঙ্গে চাপিয়ে দুধ, ঘৃত, মধু আর গঙ্গাজল দিলে শিব সম পতি লাভ করে ।

বাংলা কবিতা আসরের সকলকে জানাই পূণ্য মহা-শিবরাত্রির শুভেচ্ছা।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

মহা- শিবরাত্রি ব্রত
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শিব চতুর্দশী আজি পূণ্য শুভক্ষণ,
ফুলে ফুলে সুসজ্জিত মন্দির প্রাঙ্গণ।
মন্দিরেতে শিবলিঙ্গ শোভে মনোহর,
বিল্বপত্র ফুলমালা তাহার উপর।

ঘৃত মধু গঙ্গাজল গাভীদুগ্ধ লয়ে,
চলিছে কুমারী সব আজি দেবালয়ে।
পূত ঘৃত রসে দীপ জ্বলিছে চৌদিকে,
সুগন্ধি চন্দন ধূপ পুড়িছে সম্মুখে।

ঔঁ নমঃ শিবায়ঃ বলি গঙ্গাজল দিলে
নিশ্চয় জানিহ শিব সম পতি মিলে।
উপবাসী থাকে তাই কুমারী সকলে,
শিব সম পতি লভে বহু পূণ্য ফলে।

শিবের বিবাহ আজি মহা-শিবরাত্রি,
আনন্দেতে উঠে মেতে বিশাল ধরিত্রী।
শিবরাত্রি ব্রতকথা শুনে সর্বজন,
কবিতায় লিখে কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৫ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৫ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০৪-০৩-২০১৯ | ১৯:০০ |

    মহাশিবরাত্রি'র ইতিহাসট আমার কাছে বিশেষ ধারণার মধ্যে ছিলো না। আপনার প্রাকঃকথনে অনেকটা পরিস্কার হলো। মানব সভ্যতায় প্রতিটি জাতির বা ধর্মীয়দের নিজস্ব বিশ্বাস এবং আস্থা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। শিবের বিবাহ আজি মহা-শিবরাত্রি, আনন্দেতে উঠে মেতে বিশাল ধরিত্রী।

    সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বি মানুষদের প্রতি আজকের এই মহিমার আলো ছড়িয়ে পড়ুক।

    GD Star Rating
    loading...
  2. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ০৪-০৩-২০১৯ | ১৯:২১ |

    ঔঁ নমঃ শিবায়ঃ বলি গঙ্গাজল দিলে নিশ্চয় জানিহ শিব সম পতি মিলে।
    উপবাসী থাকে তাই কুমারী সকলে, শিব সম পতি লভে বহু পূণ্য ফলে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    GD Star Rating
    loading...
  3. রিয়া রিয়া : ০৪-০৩-২০১৯ | ১৯:৪৬ |

    শিব চতুর্দশী আজি পূণ্য শুভক্ষণ,
    ফুলে ফুলে সুসজ্জিত মন্দির প্রাঙ্গণ।
    মন্দিরেতে শিবলিঙ্গ শোভে মনোহর,
    বিল্বপত্র ফুলমালা তাহার উপর।

    ঔঁ নমঃ শিবায়ঃ ঔঁ নমঃ শিবায়ঃ।

    GD Star Rating
    loading...
  4. সাজিয়া আফরিন : ০৪-০৩-২০১৯ | ২০:৫৭ |

    হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহা রাত্রি’র শুভেচ্ছা।

    GD Star Rating
    loading...
  5. নিতাই বাবু : ০৬-০৩-২০১৯ | ৩:৫৫ |

    ওঁ নমঃ শিবায়
    প্রণামমন্ত্র: ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হেতবে। নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতি পরমেশ্বর।।

    GD Star Rating
    loading...