তবুও থামিনি আমি
”””””””””””””””””””’
তোমার যাত্রা শুভ হক
এ কথা কেউ আমাকে বলেনি
আমি কবিতা লিখতে বসলাম।
পকেটে ময়লা মন
তবু আমার যাত্রার শুভক্ষণ
হঠাৎ গাড়ী নষ্ট হল
নামলাম হাটলাম অনেকদূর
তবুও থামিনি
তোমার যাত্রা শুভ হক
এ কথা কেউ আমাকে বলেনি ।
আমার কিনে দেওয়া খাবার কেউ খেতে চাচ্ছে না
—————
সেদিন নামাজ পড়তে গিয়ে খুব অপরিচিত দরিদ্র এক বৃদ্ধকে
বললমা –দাদা আপনার কি কি খেতে ভাল লাগে?
দাদা বলল-এই বয়সে দাঁত পড়ে গেছে
কিছুই খেতে পারি না
আমার দুটো পয়সা হয়েছে হয়ত
দুখি মানুষকে খুব খাওয়াতে ইচ্ছে করে
সেদিন অসহায় এক পথ
আমাকে কবি বললে লজ্জা পাই!
—————-
এই মধ্য বয়সে এসে হঠাৎ কবিতা লিখছি
সেজন্যে আমাকে মাঝে মাঝেই কথা শুনতে হয়
হঠাৎ প্রতিভার বিকাশ! প্রেম করেছিলেন নাকি?
মধ্য বয়সে বধি জ্ঞান লাভ! হঠাৎ লিখছেন! ইত্যাদি
মোট কথা, কবি বললে আমার খুব লজ্জা লাগে
আমার কবিতাগুলো আদও কবিতা কিনা জানিনা
সাহিত্য জ্ঞানও আমার কম
যা
সেদিন আমার এক বন্ধু বলল যে
তোরতো আর কাজ নেই ,কি সব লিখিস!
ওগুলোতো কবিতা না, পাগলামি
ভাবলাম তর্ক করে আর কি হবে
সময় নষ্ট ,কথা না বলে অন্য কাজ করিগে
বউ বলল তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবন নষ্ট
আমিও উল্টো বলতে গিয়ে থেমে গেলাম
ভাবলাম তর্ক করে কি হবে ,সময়
আমার মধ্যে আছে এক স্পষ্ট দরিদ্রতার ছায়া
————————–
খুব ভাল ও সুন্দর একটি শার্ট পরে ভাইভাই গেলাম
গিয়ে দেখলাম অন্যদের চাইতে আমার শার্টটা নরমাল
ঈদের নামাজ পড়তে গেলাম সুন্দর একটা পাঞ্জাবী পরে
গিয়ে দেখি এলাকার সব চেয়ে দরিদ্র লোকটি আমার
অনুরুপ পাঞ্জাবি পরে নামাজে এসেছে
সবাই বলে আমি নাকি আনস্মার্ট
আমার
পড়াশুনা করে যে দরিদ্র ছেলেটি চাকরি পায়নি
আমার কবিতা তার ভাললাগবে না
যে গার্মেন্টস শ্রমিকের শরীরের অর্ধেক পুড়ে গিয়েছে
তারও আমার কবিতা ভাললাগবে না
যে কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পায়নি
তারও আমার কবিতা ভাললাগবে না
যে নারী গণ ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে
তাও আমার কবিতা ভাল লাগবে না
আমার কবিতার দুটো সান্ত্বনা বাক্য
গার্মেন্ট
হে প্রতিদিন আমি অন্যায় করি
——————-
প্রতিদিন আমি কিছু অন্যায় করি বলেই
আমি রোবট নয়
গাছ পালাও নয় ,অন্য কোন প্রাণী নয়
শুকনো ডাল পালা নয়
প্রতিদিন আমি অন্যায় করি
আফসোস করি, প্রায়শ্চিত্ত করি
খোদার কাছে ক্ষমা চাই
ফলে আমার নিজেকে শুকনো বস্তু
প্রাণহীন সত্ত্বা মনে হয় না
প্রতিদিন আমি জেনে না জেনে
অন্যায়
ধন্যবাদ খোদাকে
————–
বন্ধু একটি বই উপহার দিয়েছিল
তার জন্যে তাকে ধন্যবাদ দিলাম
স্ত্রীর ভাল রান্নার জন্যে স্ত্রীকে বারবার
ধন্যবাদ দিই
জীবনে চলার পথে কেউ কিছু দিলে
অমনি একটি ধন্যবাদ ছুড়ে দিই
আচ্ছা এমন কেউ কি আছে
যার যথাযোগ্য প্রশংসা করা হয়নি?
যার দানের মূল্যায়ন করা হয়নি?
যাকে যথার্থ ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি?
হে তিনি খোদা,
গায়ে লাগে না
————————–
এক আত্মীয়র বাড়ী গিয়েছিলাম দুপুর বেলায়
কথা বার্তা শেষে দুপুর বেলায় প্রস্থান করব
আত্মীয় বলল এই তপ্ত দুপুরে না গিয়ে বিকেলে যান
আমি বললাম- রৌদ্র কোথায়? জীবনে কোন দিন আমার গায়ে
রৌদ্র লাগেনি
প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়তে গিয়েছিলাম
প্রচণ্ড বৃষ্টি মাথায়, স্যার বলল
এই বৃষ্টি মাথায় পড়তে এসেছ?
আমি
দেশের যুব সমাজ ধ্বংসের অস্ত্র মাদক। মাদক কেনা বেচা আমাদের দেশে প্রকাশ্যে হয়। এরকম আরো বড় বড় সমস্যা রেখে হেফাজতের কোথায় ? একটি ভাস্কর্য আছে তা নিয়ে চুলকানি। মাদক নিষিদ্ধ হক এ বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই। তাই লড়তেই যদি হয় মাদক, ট্রাফিক জ্যাম, চাকরির
আমার সাধারণ পাপ ও সাধারণ পূণ্য
———————-
প্রতিদিন আমি কিছু পাপ করি
ইচ্ছায় ,অনিচ্ছায়,কিংবা আমার ভাগ্যে লেখা ছিল বলে
রাস্তায় হাটব –বেগানা নারীদের দিকে তাকাব
এ পাপটা না করলেও আমার কোন ক্ষতি হবে না
কিছু মিথ্যে কথা না বললেও আমার
লাভ ক্ষতির কোন প্রশ্ন নেই
জীবনের প্রয়োজনের নামে ঘুষ দেব খাব
কোন
আমার চটপট স্বভাব
——————–
খুব তাড়াতাড়িই লেখাপড়া শেষ করলাম
এক্বেবারে তাড়াতাড়ি চাকরি হল
তাড়াতাড়ি বিয়ে, বছর না পেরতেয় বাবা হলাম
মানে আমার সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি
চটপট বাজার করে ঘরে ফিরি
চটপট অফিসের কাজ সারি
চটপট পেপার পড়ি,ঘুরি ফিরি
মানুষও আমাকে চিনে ফেলেছে
মানে আমি ইজি কাজে বিজি
ভাবছি চটপট -তাড়াতাড়ি মরে যাব না তো?
সব-ই যদি
ইশ্বর যখন আমাকে বলবেন
তুমি কি এনেছ?
ইশ্বরকে বলব-এক বুক নিশ্বঙ্গতার
কষ্ট নিয়ে হাসি মুখে বেঁচে ছিলাম
তুমি কি খুশি নও –ইশ্বর!
ইশ্বর আমি বেঁচে ছিলাম
এটাই ছিল আমার ইবাদত
তোমাকে বিশ্বাস করে বেঁচে থাকাটাই ছিল
আমার একমাত্র ইবাদত।