নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মান সূচক পুরস্কার হলো নোবেল। আর আমরা যারা লেখালেখির সাথে সংশ্লিষ্ট তারা সবাই সাহিত্যে নোবেলজয়ী কে হন সেই দিকে সবিশেষ নজর রেখে থাকি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সুইডেনের স্টকহোমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ২০২২ সালের সাহিত্যে নোবেল পদক পেয়েছেন ফরাসি সাহিত্যিক আনি আর্নো। আমরা তাকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানাই।
আনি আর্নোর জন্ম হয়েছে ১৯৪০ সালের ১ সেপ্টেম্বর। এখন তার বয়স ৮২ বছর। আনি আর্নোর সাহিত্য মূলত আত্মজীবনীমূলক। তিনি সমাজবিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৭তম নারী হিসেবে তিনি এই পুরস্কার জিতেছেন। এই ফরাসি সাহিত্যিক নরম্যান্ডির সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠেন। তিনি বেশি পরিচিতি পেয়েছেন ওমেন্স স্টোরি, এ মেন্স প্লেস এবং সিম্পল প্যাসনের মতোন আত্মজীবনীমূলক কর্মের জন্য।
তার সাহিত্য ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। তবে আনির এসব সাহিত্যকর্মকে ইংরেজীভাষী সমালোচক ও পাবলিশাররা মাঝে মাঝে আত্মজীবনী বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অবশ্য আনি নিজে সবসময় বলেছেন, তার কর্মগুলো কল্পকাহিনী। তার অনেক সাহিত্যকর্ম ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ২০১৯ সালে দ্য ইয়ার্স নামে বইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক বুকার অ্যাওয়ার্ডের জন্য নমিনেশন পান তিনি। বইটি সম্পর্কে অ্যাকাডেমি বলেছে, এটি তার সবচেয়ে উচ্চাকাঙক্ষী প্রকল্প, যা তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং একদল অনুসারী ও সাহিত্যিক শিষ্য এনে দিয়েছে।
তার লেখা প্রথম উপন্যাস ‘লে আরমোয়ার বিড’ ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে ‘লে আনি’ প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। এটি ২০১৭ সালে ‘দ্য ইয়ার্স’ নামে ভাষান্তরিত হয়। বইটি সম্পর্কে অ্যাকাডেমি বলেছে, এটি তার সবচেয়ে ভালো বই।
এ বছরের সম্ভাব্য প্রতিযোগীদের মধ্যে ফেভারিট তালিকায় ছিলেন আনি আর্নোসহ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি, কেনিয়ার লেখক নগুগি ওয়া থিয়ঙ্গো, জাপানের হারুকি মুরাকামি ও নরওয়ের জন ফোসের মতো লেখক ও সাহিত্যিকদের হারিয়ে পুরস্কার জিতে নিয়েছেন আর্নো।
নোবেল কমিটির স্থায়ী সদস্য ম্যাটস মাম বলেছেন, আনি এর্নো যে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন সেটি তিনি জানেন না। তবে আনি দ্রুতই এ খবর পাবেন বলে জানান ম্যাটস মাম। আনি আর্নোকে সাহিত্যে নোবেল দেওয়ার ব্যাপারে নোবেল কমিটি বলেছে, সাহস ও তীক্ষ্ণতার মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত স্মৃতির শেকড়, বিচ্ছিন্নতা ও সম্মিলিত সংযম উন্মোচন করেছেন তার জন্য সাহিত্য জগতের সর্বোচ্চ সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। তার সাহিত্যে গর্ভপাত এবং পরিবার মূল উপজীব্য বিষয়।
আবারও বলছি, সাহিত্যে নোবেল মানেই সারাবিশ্বের সমস্ত কবি-লেখকদের জন্য একটি উদ্দীপনা। একটি অনুপ্রেরণা। এটি এই বার্তা বহন করে যে, সাহিত্য হলো বিশ্বজনীন। সর্বকালের সবার। তাই বিশ্বসাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে। তবে সাহিত্য ভাণ্ডার যেমন সমৃদ্ধ হবে; তেমনি সমৃদ্ধ হব আমরা সকলে।
loading...
loading...
Congrats
loading...
সাহিত্য হলো বিশ্বজনীন। সর্বকালের সবার। বিশ্বসাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে। সাহিত্য ভাণ্ডার যেমন সমৃদ্ধ হবে; তেমনি সমৃদ্ধ হব আমরা সকলে। শুভেচ্ছা আনি আর্নো।
loading...