শহর থেকে এক কবি এসেছেন কতোদিন পরে,
— এতোদিন ধরে কবির বুকে ধুঁকে ধুঁকে জ্বলছিলো চৈতের
চিতা, আজ আর কবিকে আটকে রাখতে পারেনি
শহরের সুনন্দ ভোগাস সৌন্দর্য; ছন্দের কাঁটাতার, শতাব্দীর লৌকিক শোভাযাত্রার ঢেউ!
এসব ছেড়ে ছুঁড়ে কবি এসেছেন, এখন তাঁর দুই হাত
খালি, তবুও কবি ভুলে গেছেন সব রিক্তের বেদন!
ভুলে গেছেন রাজপথের ক্লান্তি, এগারসিন্ধুর নামীয় আন্তঃনগর লোকাল ট্রেনের ঝকঝক শব্দ..যানজটে,
ট্রেনজটে আঁটকে পড়া, নাকাল হওয়া স্পর্ধিত বর্ধিত
সময়..এই সব কিছু কবি এখন ভুলে গেছেন!
আসতে আসতে কবির মনে যতিবিহীন কতো কথা
মূর্খ আকাশকে সাক্ষী রেখে কবির কতো কী ভাবালুতা
আজ তিনি শিক্ষিত –অশিক্ষিত, আবাদী-অনাবাদী জমিতে হাঁটবেন….
কাউনের মিহি দানা আঙুলে ঘষে নাকে শুঁকবেন
দুইহাত ভরে বুনোফুল, করমচা ছিঁড়ে কোঁচর ভরবেন
ধানক্ষেতের আলপথে হাঁটতে হাঁটতে যখন ক্লান্ত হবেন
তখন বয়সী বটের ছায়ায় বসে মান্দারের কাঁটা গুনবেন
অতঃপর ঝাঁসির নদীতে যতোক্ষণ না সর্দি নামে
ততোক্ষণ একটার পর একটা পানকৌড়ি ডুব দিবেন!
তারপর গোগ্রাসে গিলে খাবেন মায়ের হাতে রান্না
একসেদ্ধ বিরই ধানের ধোঁয়াওড়া ভাত,
কাঁচা লংকার সাথে মলা-ঢেলার চর্চরী, কলমি শাক, সজনে পাতার ঝাল ফ্রাই… ইত্যাদি!
অবশেষে কবি হতাশ হলেন। কবির নলিনের বিল নেই,
দইয়ার খাল নেই শিমূলের ছায়ায় বেঁচে থাকা পোড়া
বাড়িটি নেই, বেতের কাঁটা নেই আজন্ম খেলার সাথী
মাঠ নেই, ঝোপ-ঝাড় কিছুই নেই
কেবল ছনের ঘরের বদলে কবির শহরের মতোন ইট-পাথর-সুরকি আছে….
কবির শহরের মতোন প্রাণহীন কিছু মানুষ আছে!!
loading...
loading...
ট্রেনজটে আঁটকে পড়া, নাকাল হওয়া স্পর্ধিত বর্ধিত
সময়… এই সব কিছু কবি এখন ভুলে গেছেন!
loading...