"যে বসন্তে ফুল ফুটেনি" উপন্যাসের কিয়দংশ

“যে বসন্তে ফুল ফুটেনি” উপন্যাসের কিয়দংশ

পাপ নিয়ে আমার নিজস্ব একটি হাইপোথিসিস আছে। আমি মনে করি প্রতিটি মানুষ শিশু নিষ্পাপ অবস্থায় পৃথিবীর মুখ দেখে। আর এজন্যই শিশুদের ফুলের সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে। ফেরেস্তার সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে। আর এই জন্যই শিশুর শরীরের রঙ কালো হউক কিংবা ফর্সা হউক তার চেহারায় একটা পবিত্র এবং লাবণ্য সদা বিরাজমান থাকে। মূলতঃ তখন শিশুর অবয়বে সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্য জ্যোতি রূপে প্রকাশিত হয়। আমরা তখন শিশুদের আদর করে গালে হাত বুলিয়ে দিই, চুমোয় চুমোয় শিশুর গাল লাল করে দিই।

এরপর দিন যায়। মাস যায়। বছর যায়। শিশু কিশোর হয়। কিশোর যুবক হয়। যুবক পৌঢ় হয়। পৌঢ়ও একদিন বৃদ্ধ হয়। যতোদিন গড়ায় শিশুর মুখের কমনীয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একটা সময় মুখ থেকে স্বর্গীয় সেই লাবণ্য উদাও হয়ে যায়। তখন আর চুমু দিতে ইচ্ছা করে না। ভালোবাসতে মন চায়না। এটাই পৃথিবীর রীতি। এভাবেই চলে এসেছে। এভাবেই চলতে থাকবে। আমার প্রশ্ন হলো, শিশুসুলভ কোমলতা বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মুখ থেকে বিলীন হয়ে যায় কেনো? আমার ধারণা, মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার পাপের মাত্রা এবং পাপের বোঝা বড় হতে থাকে। আর সেই পাপের ছায়া ছায়াবাজির মতো আমাদের মুখের পবিত্রতার স্থানটি দখল করে নেয়। তখন মানুষকে বিশ্রী দেখায়। কুৎসিত দেখায়। যে মানুষ যতো বেশি পাপ কাজ করে, তার মুখ ততো বেশি শ্রী হীন হয়। চেহারার দিকে তাকালেই পাপী পাপী মনে হয়।।

আসলে সৃষ্টিকর্তার চাওয়া কী? আমার ধারণা এবং বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা চান তিনি মানুষকে জন্মের সময় যেমন নিষ্পাপ অবস্থায় পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, প্রতিটি মানুষ মৃত্যুর সময় তেমনি নিষ্পাপ অবস্থায় তাঁর কাছে ফিরে আসুক। এই নিষ্পাপ অবস্থায় ফিরতে পারা মানেই পরমাত্মার সাথে মিলনের একমাত্র ১০০% গ্যারান্টি। তা না হলে জেল, জরিমানা অর্থাৎ দোযখের আগুনে কোটি কোটি বছর পুড়িয়ে পুড়িয়ে আত্মাকে পবিত্র করা হবে।

অতঃপর সেই পাপী আত্মাটি পরমাত্মার সাথে মিলনের উপযুক্ত হবে। যতো দিন না সে পাপমুক্ত হবে, ততোদিন তার শাস্তি চলতেই থাকবে। চলতেই থাকবে।।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১৪-০১-২০১৯ | ১২:১৭ |

    "পাপের ছায়া ছায়াবাজির মতো আমাদের মুখের পবিত্রতার স্থানটি দখল করে নেয়। তখন মানুষকে বিশ্রী দেখায়। কুৎসিত দেখায়। যে মানুষ যতো বেশি পাপ কাজ করে, তার মুখ ততো বেশি শ্রী হীন হয়। চেহারার দিকে তাকালেই পাপী পাপী মনে হয়।"

    ভীষণ সত্য বলেছেন প্রিয় কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...
  2. রিয়া রিয়া : ১৪-০১-২০১৯ | ১৩:৪২ |

    দারুণ আত্ম বিশ্লেষণ কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    GD Star Rating
    loading...
  3. সৌমিত্র চক্রবর্তী : ১৪-০১-২০১৯ | ২০:০৫ |

    আপনার প্রকাশনাটি বের হলে পুরোটা পড়বার ইচ্ছা রাখি কবি জসীম ভাই। অভিনন্দন। Smile

    GD Star Rating
    loading...