মা, বাবা, ভাই, বোন, চাচা, ফুপু, মামা ইত্যাদি মিলিয়ে আপনার একান্নবর্তী পরিবার। এর মধ্যে এক ভাই ডাক্তার এবং ওনার দায়িত্ব হচ্ছে পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসা করা। আর দুই ভাই এর দায়িত্ব পরিবারের রক্ষণাবেক্ষণ।
এখন ফেব্রুয়ারি মাসে ওই ডাক্তার ভাইয়ের চেম্বারে লোকজন এসে বলে গেল এই বছর কিন্তু ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের প্রকোপ বেশি হবে।
যে দুই ভাই পরিবার রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্বে আছেন ওনারা শুনলেন এবং তারা জানেন যে ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বর হলে কী ওষুধপাতি লাগে। অতীতে অনেকবার এই জ্বর ওই দুই ভাইয়ের দেয়া ওষুধে পরিবারের প্রত্যেকেই সুস্থ হয়েছে যাদের ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছিলো।
ওই ডাক্তার ভাইয়ের চেম্বারের লোকজনের কথা অনুযায়ী মে মাস থেকে ওই পরিবারে জ্বর শুরু হলো। রক্ষণাবেক্ষণে থাকা দুই ভাই যে ওষুধগুলো এনে মজুদ করে রেখেছিলো সেগুলো খাওয়াতে শুরু করলো এবং নিশ্চিত যে পরিবারের ওই সদস্য সুস্থ হয়ে উঠবে অথচ অসুস্থ পরিবারের সদস্যটি ২ দিন পর মারা গেলো। তখন ওই দুই ভাই ভাবতে লাগলো বোধহয় ওষুধের ডোজ কম হয়েছিলো। ইতোমধ্যে পরিবারের ৫১ জনের মধ্যে ১০ জন ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়লো মাত্র ৩ দিনের মাথায়। দুই ভাই চিন্তিত হয়ে পড়লো। কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। কেউ বলছে ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে দাও। কেউ বলছে আমড়া, কামরাঙা, আনারস, জলপাই, চালতা, করমচা নিয়ে এসো। ওষুধের ডোজ বাড়িয়ে খাওয়ানো হলো কয়েকজন কে কিন্তু অসুস্থদের কেউ চেয়ার থেকে হঠাত মেঝেতে পড়ে গিয়ে মারা গেলো, কেউ আকস্মিক বমি করতে করতে মারা গেলো, কারও কারও মুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে এসে মারা গেল।
ওই দুই ভাই এবং ডাক্তার ভাইয়ের মাথা কাজ করছে না। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ক্ষেপে গিয়েছে। দুই ভাই এবং ডাক্তার ভাই এমন অপ্রস্তুত এবং ভয়ানক পরিস্থিতিতে কী বলতে কী বলছে কিছুই বুঝতে পারছে না।
আশেপাশের পরিবারের একই অবস্থা।
একটু দূরের একটি পরিবার ইতোমধ্যেই মহামারি ঘোষণা করেছে কারণ সেটাও একান্নবর্তী পরিবার কিন্তু ওই পরিবারের অলরেডি ১৫ জন মারা গেছে।
এমতাবস্থায় একটি বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেলো, ইনফ্লুয়েঞ্জা এখন আর আগের ওষুধে ভালো হবে না।
কেন?
– ইনফ্লুয়েঞ্জা নিজেই তার চরিত্র পালটে বিপজ্জনক একটি ভাইরাসে পরিনত হয়েছে।
সবাই থমকে গেল, বললো এমন কথাতো আগে শুনিনি, এমনকি চিন্তা ভাবনাতেও আসেনি।
– তাহলে কী করবো?
– প্রথম কাজ হচ্ছে এই ভয়ংকর ভাইরাস নিধনের জন্য কার্যকরী কী ওষুধ আছে তা নির্ণয় করতে হবে।
– তারপর?
– পরিবারের সবাইকে আতংকিত না হওয়ার জন্য অভয় দিন।
– আর?
– ওইসব ওষুধ আর না দিয়ে বিশ্রামে থাকতে বলুন।
– আর কী করবো?
– দ্রুত কার্যকরী ওষুধ নিয়ে আসুন।
এরপর দুইভাই কোথায় কার্যকরী ওষুধ পাওয়া যাবে তা খুঁজতে লাগলো এবং পেয়েও গেলো কিন্তু এখন ভয় কাজ করছে অন্য জায়গায় আর সেটা হচ্ছে যেহেতু এটা নতুন ওষুধ তাই এর কার্যকারিতা এবং ডোজ পরীক্ষা করে না দিলে যদি পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়? তাই ওই দুই ভাই আবার সেই বিশ্বস্ত সূত্রের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে, এখন কী করবো?
– ওষুধের কার্যকারিতা এবং ডোজ পরীক্ষা করুন।
– তারপর?
– কার্যকারিতা এবং ডোজ এর ফলাফল ইতিবাচক হলে ওষুধ প্রয়োগ করুন।
– জ্বী ঠিক আছে।
– আর একটি কথা শুনে রাখুন।
– জ্বী বলুন।
– ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে দ্রুত একটি গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রস্তুত করুন।
– কেন?
– পরের বছর ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাস আরও ভয়ানক হয়ে আসতে পারে, ব্ল্যাক ভাইরাস, ইয়োলো ভাইরাস, লাল-কালো ডোরাকাটা ভাইরাস, এক ঘন্টায় খেল খতম।
– ও মাই গড! কেন এমন হচ্ছে ভাই?
– প্রকৃতির কিছু কিছু বিষয়ের কোনও ব্যাখ্যা নেই।
– ও
– তবে দ্রুত গবেষণায় নেমে পড়ুন।
– জ্বী, ঠিক আছে।
loading...
loading...
এই বুদ্ধি নিদেনপক্ষে একেবারে মন্দ নয়। গবেষণায় আমাদের সংযুক্তি দরকার।
loading...
খুব পরিচিত দৃশ্য ভাবনা আর সম্ভবত আমাদেরই যাপিত জীবনের অণুমর্ম এটি।
loading...
কল্পগল্প পড়লাম মনে হলো কবি ইলহাম দা।
loading...
দারুণ আইডিয়া। আপনি কিন্তু বেশ লিখেন কোন সন্দেহ নাই কবি ইলহাম।
loading...
loading...
পড়লাম ভাই।
loading...
পড়লাম
loading...