চক্র
– এই তুমি উঠলা ক্যামনে?
– আপনিতো আমার সামনেই বসে চা খাচ্ছেন
– চা খায় না পান করে?
– খাওয়া এবং পান করা এ পার্থক্য হয় লেখার সময়, আমি আর আপনিতো এখন কথা বলছি, লিখছি না।
– হুম বুঝলাম কিন্তু তুমি উঠলা ক্যামনে?
– ভাইজান সেটাইতো বলছি, আপনিও চায়ের দোকানে আমিও ওই একই চায়ের দোকানে বসে আছি
– হুদাই প্যাচাস ক্যান, কেমনে উঠলি হেইডা ক
– আরে দুইজনই বসে আছি, কেউই বিছানায় ঘুমাচ্ছি না, আমি উঠেছি ভোরে, টাইমটা মনে নাই
– তরে কী ঘুমেত্তে উডার কতা কইছি হালার পুত?
– তাহলে কীসের কথা বলছেন ভাইজান?
– মনে হইতেছে এহন কিচ্ছু বুজিস না, ফিডার খাছ? তুই বাড়ি বানাইছস কয়ডা?
– কেন ভাইজান?
– এই দেশে ৫ টা আর সেকেন্ড হোম না কি জ্যান কয় ওইডা মনে হয় দুবাই, ঠিক না?
– ও বড়লোক হয়েছি কী করে সেটা জানতে চাচ্ছেন?
– দুইডা জি প্রেমিক, একটা নিশান পেট্রোল আরেকটা কি জ্যান লেক্সি না ফ্লেক্সি জীপ কিনছস!
– লেক্সি না ওটা লেক্সাস আর জি প্রেমিক না ও দুটো জি প্রেমিও
– হেইডাইতো কইতাসি, তুই উঠলি ক্যামনে?
– ভাইজান চক্র বোঝেন?
– চা চক্র?
– না, এটা বাংলা চক্র
– এইডা আবার কী?
– এই চক্র যতদিন না চিনবেন আর এই চক্রের ভেতর যতদিন না ঢুকবেন ততদিন উঠতে পারবেন না।
– এই চক্রের সদস্য হইতে কী যোগ্যতা লাগে রে?
– ভাইজান, অগুলো এখানে বলা যাবে না, সবাই শুনে ফেলবে।
– হুম, বুচ্ছি কিন্তু এহনতো দ্যাশ ঠিক হইতাসে দেখা যায়!
– আরে রাখেন চাচাজি, এই দেশ কেউ ঠিক করতে পারবে না।
– ক্যান? একদিন ইউরোপ আমেরিকাওতো এমন ছিলো, এহন ঠিক হইছে না?
– আরে চাচা এইডা ইউরোপ আমেরিকা না এইডা বাংলাদেশ।
– বাংলাদেশ তাতে কী হইছে, ঠিক করন যাইবো না?
– না
– ক্যান?
– এই চক্র ভাংগার কোনও শক্তি নাই
– ক্যান?
– এই দেশকে ঠিক করতে হলে এই চক্র আগে ভাংতে হবে।
– ভাংতে হইলে ভাংতে হইবো!
– এই চক্র ভাংগার সাহস যারা দেখাবে, যারাই ভাংগার কাজ শুরু করবে তারাই ভেঙে যাবে।
– ক্যান?
– ইতিহাস দেখেন নাই?
– কী ইতিহাস?
– এ দেশ স্বাধীন হয়েছে তাতে সমস্যা হয় নি কিন্তু যখন তিনি এ দেশ ঠিক করতে চাইলেন তখনই…..
– আর কইতে হইবো না বুচ্ছি।
– বুঝলে চুপচাপ থাকেন চাচা, এই চক্রের ভেতর ঢুকে পড়েন, যারা দেশ ঠিক করার কথা বলছে কিছুদিন পরই দেখবেন কী হয়!
– নারে! আমিওতো এই দ্যাশের জন্য যুদ্ধ করসি ওনার কথায়, আমি ক্যামনে এতবড় বেঈমানী করুম রে!
– আরে চাচা রাখেনতো ঈমাণের কথা, এই যে আমি এই চক্রে ঢুকে কত ভালো আছি দেখছেন না?
– তরা পারবি, তরা যুদ্ধ করসনি, দ্যাখসনি, আমি যুদ্ধ করসি, আমি এই চক্রে ঢুকুম না।
– না ঢুকলে আপনার ভবিষ্যত খারাপ চাচা।
– কেউ এ দেশ ঠিক করতে না পারলে আমারে খালি একবার আমার জেলা ঠিক করার ক্ষমতা দে, দ্যাখ কী করি।
– পারবেন না চাচা, এ চক্র ভাংগার মতো কোনও শক্তি নাই।
– আরে রাখ! বাংলির চেয়ে দশগুণ খতরনাক পাকিস্তানি, ওগরে হুয়াইয়া দিসি! তুই কারে কী কস?
– আরে চাচা এই চক্র ভাংতে হলে নিজের জীবনের চেয়ে এই দেশকে বেশি ভালোবাসতে হবে আর সেই ব্যক্তি একজনই ছিলেন।
– এহনও আছে রে! তরা জানিস না, দেখবি এই দেশ ঠিক হইয়া যাইবো।
– হইলে ভালো, তখন চক্র থেকে বেরিয়ে আসবো।
– আর চক্কর ভক্কর চলবো না, এইবার ঠিক হইতেই হইবো।
– এজন্য বুকে দুর্বার অদম্য সাহসী দেশ প্রেমিক এবং সেই সাথে কৌশলী কিছু মানুষ প্রয়োজন চাচাজান।
– আছে, অরা আছে, সময় মতো অরা বাহির হইবো।
– কোথায় আছে ওরা! আমিতো দেখি না।
– তুই দ্যাখোস নাই কিন্তু অদের নাম শুইনাই ভয় পাইছস
– কৈ নাতো? ভয় পেলাম কোথায়?
– তুই এই আলাপের শুরুতে আমারে ভাইজান ডাকছস তারপর কখন চাচাজান কইতে শুরু করছস, কইতে পারবি?
– ও, না মানে “ওরা” না ” চক্র” না – না “ওরা” হ্যাঁ “ওরা” আছে, মনে হচ্ছে আছে, মনে হচ্ছে “ওরা” আছে!
loading...
loading...
জীবন আলাপন পড়লাম মি. ইলহাম। শুভ সকাল।
loading...
আপনার লিখার ধাঁচ আমার ভালো লাগে ইলহাম ভাই। আপনার লিখা আগেও পড়েছি।
loading...
কথা গুলোন পড়লাম প্রিয় কবি ইলহাম দা।
loading...
ধন্যবাদ ইলহাম ভাই। আপনার লিখা সহজপাঠ নয়; একটু জটিল লাগে আমার কাছে।
loading...
চক্র + আলাপন। চক্রালাপন। অভিনন্দন কবি ইলহাম ভাই।
loading...