একদিন মাঝরাতে
গতকাল মাঝরাতে আকস্মিক এক তীব্র ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে যায়
পাশে তাকিয়ে দেখি একটি বাঁশি
এই ধরুন আট দশ ইঞ্চি লম্বা।
রঙ?
সিয়ান ম্যাজেন্টা সাদা কমলা নীল হলুদ বেগুনীর আর গোলাপি রঙের
এম এল সমান ১-১০ লিকার রেশিওতে যে রঙ হয়।
ম্যাটেরিরেল?
দস্তা লোহা তামা ইস্পাত রূপা স্টিল এলুমিনিয়াম আর বাইশ ক্যারেট সোনা এর
সমহারের সংমিশ্রণে যে ধাতু হয়।
সেখানে ফুঁ দেয়ার দুটি নল আছে
কিন্তু বের হওয়ার নল একটি।
আর ঘুম এলো না সেই রাতে
উঠে গিয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকালাম
রাতের আকাশ পুরোটা তারায় তারায় জ্বলে আছে
আমি একটি নল দিয়ে আকাশের দিকে ফুঁ দিতেই আট-দশটা তারা খসে পড়লো
নৈশব্দিক এক তীব্র ঝাঁকুনিতে শরীর কেঁপে ওঠে
এবার অন্য একটি নল দিয়ে ফুঁ দিলাম
সাথে সাথে খসে পড়া তারাগুলো আবার ফিরে এলো।
আশ্চর্য তো?
এটা কিসের বাঁশি?
সূর শব্দ তরঙ্গ কিছুই যে নেই?
আছে শুধু ধ্বংস আর পুনরূদ্ধারের এক মহাশক্তি।
এটা কি হ্যামেলিনের বাঁশি?
না, ওটাতো ঠগবাজদের শায়েস্তা করার একটা গল্প।
তাহলে কি এটা সাপের বীণ?
ওটাতো তাবিজ বিক্রি করার কৌশল
যে প্রাণীর কান নেই – চেরা জিভ দিয়ে শব্দ শোনে
তাও ইন্দ্রিয় শক্তি অতিব দূর্বল
সেই প্রাণী বীণের শব্দে পাগল হবে কি করে?
তাহলে কি আমি এই রাতে ইস্রাফিল এর শিঙা পেলাম?
না, তাহলে প্রথম ফুঁতেই কেয়ামত শুরু হয়ে যেতো।
আপনারা এ বাঁশি নিয়ে যার যা খুশি ভাবতে থাকুন – তাতে কিছুই যায় আসে না
না, মাফ করবেন, আপনারা না, ঐ যে! ওনারা।
একদিন মাঝরাতে আমি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবো ওনাদের
সকল পৃথক পৃথক কবিতার সংগঠন।
কবি কংগ্রেস-পার্টি?
কবি লেবার-পার্টি?
ডেমোক্রেটিক কবি-পার্টি?
রিপাবলিকান কবি-পার্টি?
কবি গ্রীন-পার্টি?
কবি আই এস পার্টি?
কবি কমিউনিস্ট পার্টি?
কবি সোসিয়ালিস্ট পার্টি?
কবিদল, কবিলীগ, কবি জনতা পার্টি?
কবিজোট, কবি-ফোরাম, তেল মারা কবি-পার্টি?
এম আর আই এ কবি পার্টি?
হিযবুত তাহরীর কবি পার্টি?
আর সমস্ত কবি জঙ্গি-পার্টি।
এক ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবো
সব কবি সংগঠন আর সব কবি-পার্টি।
শুনে রাখুন – লিখে রাখুন
কবিদের কোনও দল নেই
কবিদের কোনও দেশ নেই
কবিদের কোনও নির্দিষ্ট ভাষা নেই।
সব কবির মন একটাই
সব কবির আত্মা একটাই।
সব ভাষাই সব কবির
সব দেশই সব কবির।
কবির সাথে কবির যুদ্ধ
কলমের সাথে কলমের যুদ্ধ
সাহিত্যের সাথে সাহিত্যের দ্বন্দ্ব
উপন্যাসের সাথে উপন্যাসের দ্বন্দ্ব
আলোর সাথে আলোর সংঘর্ষতা
পুরুষ্কারের সাথে পুরুষ্কারের মুমূর্ষুতা
একাডেমির সাথে একাডেমির বিরোধিতা
দেখতে দেখতে ভারাক্রান্ত মনে আজ ঘোলা হয়ে উঠেছে এই দুটি চোখ
বাঁশিটির দিকে তাকাতেই এক ক্রোধান্বিত রঙে চক চক করে ওঠে আবার এই দুটি চোখ।
এই সেই সাহিত্যের বাঁশি
যা দিয়ে এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দেয়া যায় এইসব আমর্ষ
একদিন মাঝ রাতে তীব্র বেগে কেঁপে উঠবে পৃথিবী
এই বাশির ফুঁৎকারে
খুলে যাবে ওনাদের মুখোশ দেখা যাবে চোখ মুখ বেজায় বিমর্ষ।
সব কবির একটাই প্ল্যাটফর্মঃ কবিতা, মানুষ ,বই, প্রকৃতি আর নিজের অন্তরে
সব কবিরাই আজ ইউনিফর্মঃ কবিদেরে ঐশী জ্ঞান থাকে মহাজ্ঞানীর ভাণ্ডারে।
loading...
loading...
একটি পূর্ণাঙ্গ কবিতার আদল ফুটিয়ে তুলেছেন মি. ইলহাম। গ্রেট এক্সপেরিমেন্ট।
loading...
হুম। এই না হলে কবিতা !! অভিনন্দন কবি ইলহাম ভাই। দারুণ।
loading...
কবিতায় অনেক অনুসঙ্গ যে ম্যাটার হতে পারে সেটা আপনার লেখা পড়লে বেশ বোঝা যায়।
loading...
অনবদ্য একটি কবিতা,, ,শুভেচ্ছা জানবেন
loading...