পরিবার, দায়বদ্ধতা ও অন্যান্য।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক রিক্সাচালক বাবা তার মেয়েকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে–। ছিঃ কেমন বিশ্রী কথা ও কেমন বিশ্রী বাবা। নিজের মেয়ে তার লালসার স্বীকার। পেপার পত্রিকায় প্রায় দেখি এমন বাবাদের খবর, চাচাদের খবর, মামাদের খবর কিংবা ভাইদের খবর। কিন্তু কেনো এই বিকৃত পুরুষত্বের স্বীকার মেয়েরা। এখন হতে ভাবতে হবে সমাজ বিজ্ঞানীদের, না হয় এইটি মহামারী আকার ধারণ করবে এবং সমাজে ভদ্রতা নষ্ট হবে, সভ্যতা নষ্ট হবে, সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়বে। একটা মানুষের জন্য ঘরটাই সবচেয়ে নিরাপদ অথচ সেই ঘরে বাবা, চাচা, ভাইরূপি জানোয়ারদের বাস। তাহলে একটা মেয়ে কাকে বিশ্বাস করবে, কোথায় নিরাপদ থাকবে। কথায় কথায় আমরা বলি পৃথিবীতে বহু খারাপ লোক আছে কিন্তু একটা খারাপ বাবাও নাই। কথাটা আজ মিথ্যায় পরিণত হতে চলেছে। তাই মেয়ের মা’দেরকে সচেতন হতে হবে, বিচক্ষণ হতে হবে। মেয়ের সাথে বন্ধুভাব রাখতে হবে যাতে কেউ কিছু বললে কিংবা করলে মাকে বলতে দ্বিধা না করে। প্রত্যেককে কয়েকটি বিষয় মেনে এবং খারাপ বিষয় পরিহার করে চলতে হবে।
ধর্মীয় ও পারিবারিক শিক্ষাঃ
সাধারণত পুরুষ হতে মেয়েরা বেশী ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে। তাই মেয়েকেও ধর্ম মেনে চলতে বাধ্য করে। কিন্তু অনেক বাবাই ধর্ম হতে অনেকটা দূরে থাকে কারণ পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য রোজগারে ব্যস্ত থাকার অজুহাত। তাই প্রত্যক স্ত্রীর উচিত উনার স্বামীকেও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করা। যাতে স্বামীর মনে আল্লাহর ভয় থাকে, সমাজের ভয় থাকে। মেয়েদেরকে আবার শাসনের নামে মনে এমন ভয় দেওয়া যাবে না যাতে সে সহজ কথাও বলতে ভয় পায়। নিজেরা সত্য কথা বলতে হবে এবং সন্তানদের সত্য কথা বলতে বাধ্য করতে হবে। যৌথ পরিবার হলে সন্তানকে পরিবারের সবার সাথে সত্য-সুন্দর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে বাধ্য করতে হবে। আশেপাশে কারো আচরণ কিংবা নজর কুরুচিকর হলে সন্তানদের তাদের হতে দূরে রাখতে হবে।
রাজনীতি ও মাদকঃ
আমার মনে হয় সমাজের এবং পরিবারের সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণটা এখন রাজনীতি ও মাদক। ইয়াবা এখন গ্রাম মহল্লায় অতি সহজে পাওয়া যায় আর এর যোগান দাতা রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী। সন্তান দশম শ্রেণী কিংবা দ্বাদশ শ্রেণীতে উঠলে তার দিকে সতর্ক নজর দেওয়া দরকার। কারণ তখন তাদের কাছে সব কিছু রঙ্গীন রঙ্গীন মনে হয়। মোবাইল, বাইক, একা রুম এবং ক্ষমতা তাদের কাছে আকর্ষণীয় লাগে। বন্ধুদের সাথে ঘুরলে রাজনীতি করতে হয় আর রাজনীতি করলে মোবাইল ও বাইক লাগবেই। এইসব থাকলে রাজনীতি তাকে ক্ষমতাবান করবেই আর ক্ষমতা থাকলে টাকা আসবেই টাকা আসলে মাদক গ্রহণ করবেই। মেয়েদের মনে রাখা উচিত ছেলেদের বেশীর ভাগ প্রতারক হয়। সেটা ভালোবাসার, সেটা ক্ষমতার, সেটা কথার, সেটা অন্যান্যও বটে। তাই মুখে মিষ্টি অন্তরে অনিষ্ট অতএব সাবধান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমঃ
মাঝে মাঝে সন্তানদের মোবাইল চেক করে দেখা উচিত। কারণ মদ, জুয়া, বাটপারি, চিটিংবাজি সব এখন মোবাইলে হয়। একা রুমে কী করে দেখা উচিত, সন্দেহ হলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ফেসবুক, টুইটার নেশাগ্রস্ত হলে দ্রুত পরিহার করতে হবে কারণ এইসব মাদক হতেও ভয়ংকর। কোনোমতেই মোবাইল গেইম খেলতে দেওয়া উচিত নয়। গেইমে আসক্ত হলে কঠিন শাসনের আওতায় আনতে হবে। টিকটক এবং লাইকি কোনোমতেই করতে দেওয়া যাবে না। শত শত নারী পাচার হয়েছে এবং সংসার হারা হয়েছে এই টিকটক এবং লাইকির কারণে। যেইসব নারী এইসবে অভ্যস্ত ওরা বিকারগ্রস্ত মানুষ। ভারতের ব্যাঙ্গালোরে এক নারীর উলঙ্গ ছবি ভাইরাল এই টিকটকের কারণে। বাংলাদেশ হতে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে শত শত নারী যৌন ব্যবসায় বাধ্য হয়েছে এই টিকটকের নেশায় পড়ে। সরকারকে অচিরে এইসব বন্ধ করা উচিত।
পরিশেষে বলবো সবাইর জীবন সুন্দর হোক। মেয়েরা নিরাপদ হোক ঘরে, হাটে, বাজারে ও শহরে। অতিরিক্ত ভালোবাসার কারণে সন্তান বখাটে হওয়া কাম্য নয়। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপে সন্তান জীবনহারা হোক কাম্য নয়। বৃদ্ধ মা-বাবা ঘর ছাড়া হোক কাম্য নয়। পরিবার হোক যৌথ আর যৌথ পরিবার হোক স্বর্গ। রাজনীতি হোক কল্যাণময়।
loading...
loading...
ভালো পোস্ট।
চলুক।
loading...
Thank you dear brother
loading...
পারিবারিক ভাবে সন্তানদের সাথে বন্ধুভাব রাখতে হবে; যাতে কেউ কিছু বললে কিংবা করলে বাবা মাকে বলতে দ্বিধা না করে। প্রত্যেককে কয়েকটি বিষয় মেনে এবং খারাপ বিষয় পরিহার করে ধৈর্য্য সহকারে আমাদের সবাইকে চলতে হবে।
loading...
Thank you dear brother for comment
loading...