সাল ১৯৭৮ (আমার অদেখা)
ঢাকা মেডিকেলের যৌতুকলোভী ও চরিত্রহীন ডাক্তার ইকবালকে কাজের মেয়ের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে স্ত্রী সালেহা।
ফলাফল – ইকবাল ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে সালেহাকে। বলে আত্মহত্যা। অস্থায়ী বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ইকবালের পরিবারের। সালেহার পরিবার বলে হত্যা। সালেহার পক্ষে দেশবাসী। ঐ সময় জেলা শহরগুলিতে পত্রিকা পৌঁছাতো একদিন পরে।
কম্পিউটারের প্রচলন ছিল না।
– প্রথম ও দ্বিতীয় দফা ময়না তদন্ত রিপোর্টে বলা হয় আত্মহত্যা।দেশবাসী মেনে নেয়নি। তৃতীয় দফায় কবর থেকে লাশ তুলে আবার ময়না তদন্ত। এবার কোথায়? নেয়া হয় সলিমুল্লাহ মেডিকেলে।
ফলাফল – হত্যা।
ইকবালের ফাঁসির আদেশ।
পুলিশ
কিভাবে প্রমাণ করেছিল জানেন?
সালেহার দেহে ব্লেড টানার ধরণ দেখে মত দেয় – এটি কোন বাম হাতি অর্থ্যাৎ ন্যাটা মানুষের কাজ। ইকবাল ছিলেন বাঁ হাতি। সেখানেই শুরু এবং পুলিশ এক বিন্দুও ছাড় দেয়নি।
সাংবাদিক
সাংবাদিকরা পত্রিকার প্রথম পাতায় ছোট করে হলেও প্রতিদিন খবর ছাপিয়ে গেছে ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত, দেশবাসীও ছাড়েনি। এই ফাঁসির পেছনে বড় অবদান সাংবাদিকদের ছিল বিধায়, ফাঁসির পরে সাংবাদিকরা ইকবালের পরিবারের সাক্ষাতকার নিতে গেলে লাঠি দা নিয়ে ইকবালের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের তাড়া করেছিল।
প্রেসিডেন্ট
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তাররা গেলে, তিনি তাদের তিরস্কার করে বের করে দেন।
বাড়তি প্রাপ্তি
এই হত্যাকাণ্ডের ফলেই ১৯৮০ সালে বাংলাদেশে যৌতুক বিরোধী আইন পাশ হয়।
সাল ১৯৮৯ (আমার দেখা)
বাংলাদেশের দুই কিংবদন্তী ডাক্তার দম্পতি গাইনির মেহেরুন্নেসা ও ঢাকা মেডিকেলের প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাশেমের কুলাঙ্গার পুত্র মুনির জড়িয়ে পড়ে খুকু নামের এক বিবাহিতা মহিলা ও মায়ের বয়সী নার্স মিনতির সাথে অবৈধ সম্পর্কে। এই সম্পর্কের কথা স্ত্রী জেনে গেলে মুনির ও খুকু পরামর্শ করে স্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। মুনির খুন করে স্ত্রী-
– মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিক নিজাম উদ্দিনের কন্যা শারমীন রিমাকে।
দেশ আবার ফুঁসে উঠে। কম্পিউটার তখনও সেভাবে আসেনি। ইন্টারনেট মোবাইল নেই। আবার প্রতিবাদে ফেটে পড়ে দেশ। পত্রিকার কাভারেজ, জনতার একাত্মতা, রীমা হত্যা নিয়ে ধারাবাহিক চটি বই, ক্যাসেটে গান, পথে ঘাটে ট্রেনে বাসে শিল্পীরা রীমার পক্ষে গান গায়। সেই গান শুনে যাত্রীরা কাঁদে, গান অপছন্দ করা মুরুব্বীরা শিল্পীদের সেলামি দেয় – আমার সোনার বাংলায়।
মুনিরের ফাঁসির আদেশ হয়। জনগন তাতেও খুশী নয়, খুকুরও ফাঁসি চাই।
একাত্মতা
আওয়ামীলীগ, বিএনপি বলে কিছু ছিল না। ছিল, সাধারণ জনগণ। আমি নিজে দেখেছি ১৯৯১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা (আরিচা মহাসড়ক) ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এক হয়ে বন্ধ করে দেয়। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। বাধ্য হয়ে মুনিরের সাথে খুকুরও ফাঁসির আদেশ হয়। যদিও উচ্চ আদালতে খুকুর ফাঁসির আদেশ পরবর্তীতে বাতিল হয়। তবে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের পুত্র মুনিরের ফাঁসি কেউ ঠেকাতে পারে না। ফাঁসি হয়।
এই ছিল আমার সোনার বাংলা। সোনার বাংলায় সব ছিল । আর এখন নেই কিছুই, আছে ফেসবুক। আমরা সবাই মিলে চাইলে কি অপরাধী গুলো কে শাস্তি দিতে পারিনা? আইন আর বিচার ব্যবস্থার সার্বিক উন্নতি কামনা করতে তো দোষ নেই। চলুন বদলে যাই, বদলে দেই, আমাদের প্রিয় দেশটাকে। গড়ে তুলি স্বপ্নের বহু আকাঙ্খিত সেই সোনার বাংলা। ধর্মে নয়, কর্মে হোক মানুষের পরিচয়। সবার একটাই পরিচয়। আর সেটা হলো আমরা মানুষ।
loading...
loading...
চলুন বদলে যাই, বদলে দেই, আমাদের প্রিয় দেশটাকে। গড়ে তুলি স্বপ্নের বহু আকাঙ্খিত সেই সোনার বাংলা। ধর্মে নয়, কর্মে হোক মানুষের পরিচয়।
সবার একটাই পরিচয়। আর সেটা হলো আমরা মানুষ।
loading...
Thank you dear brother for comment
loading...
হু ঠিক বলেছেন মহী দা এখন ভিন্নরুপ —————-কতদিন চলবে জানা নেই
loading...
Right, thank you dear brother
loading...