আলোচিত খুন আলোচিত গুম আলোচিত ধর্ষণ ও আলোচিত খলনায়ক

মেজর সিনহাকে চারটা নাকি ছয়টা গুলি করেছে তা নিয়ে বিতর্ক করে কি লাভ এখন। তাকে নির্মম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে এটাই সত্য। আর এই হত্যা করেছে দেশের আইন শৃঙ্খলা যারা রক্ষা করে তারাই । গুলি করেছে এসআই পদবি লিয়াকত (যে কিনা ছাত্র জীবনে শিবির করতো বলে প্রচার করা হচ্ছে , আহ ! হাসি আর হাসি )। সিনহা গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে । ইস ! কি ভয়ানক কষ্ট করছে তখন। তার মুক্তিযোদ্ধা বাবার আত্মা তখন কেমন করেছে এতদিনে সিনহা হয়তো জেনে গিয়েছে । বাবা ছেলেকে কাছে পেয়ে হয়তো দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলছে এ কেমন অবিচার দেশটাতে অথচ এই দেশের জন্যই অস্ত্র হাতে মরণপণ লড়াই করেছি । ধর্মীয় লেবাস কাজে লাগিয়ে পাশের রাষ্ট্রে সম্পদ পাচারকারী প্রদীপ ( যে কিনা বিএনপি করে প্রচার করা হচ্ছে আবারও হাসি আর হাসি) মাটিতে পড়ে থাকা মেজরকে পা দিয়ে চেপে ধরে। ইস !এক ভয়ানক জালিমকে রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া হয়ছে আরেক — এসপি ডিজি হয়তো অন্য কারো সুপারিশে । সাবেক এসপি আল্লাহ বকস আবার সিনহাকে হত্যার পর আইনী পরামর্শ দিয়েছেন । এই আল্লাহ বকসের ভাই বিএনপির আমলে পুলিশের আইজি ছিলেন ।

তবে এবার বিচার হতে পারে কারণ প্রদীপ আর লিয়াকত বিরোধী দলের লোক। তারা আওয়ামী লীগকে ধোকা দিয়েছে এত দিন। আর সাক্ষী বাঘের মুখ থেকে ফিরে আসা সিফাত আর শিপ্রা। ভয়ের কোন কারণ নেই সিফাত ও শিপ্রা সত্য বলে মরণ হোক আরেকবার । তোমরাতো সিনহার সাথে ওইদিন রাতেই মরে গিয়েছো ।
মেজরের মা কান্না করে এবং ছেলের জন্য কাঁদবে মরণ পর্যন্ত । মাননীয প্রধানমন্ত্রী ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার করবে ওয়াদা করেছেন । প্রিয় মা এখন ধৈর্য্য ধারণ করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই আপনার , এই বাংলাদেশে। পিলখানায় ৫৭জন সেনা হত্যার বিচার হয়নি । আবরার হত্যার বিচার হয়নি। নারায়ণগঞ্জের ত্বকি ও টেন হত্যার বিচার হয়নি । তাইতো বিচার কাঁদে আকাশে বাতাসে।

প্রিয় মেঘ । ভালোবাসা তোমাকে । মা বাবা ছাড়া বড়ই কষ্টের জীবন তোমার । অল্প বয়সে মা বাবা খুন হতে দেখছো তুমি। জানি তাদের কথা মনে করে কান্না করো তুমি । তোমাদের মত এমন আরো হাজারো মেঘ কিংবা মা কেঁদেই চলেছে । তোমার মা বাবাকে খুনের পর ৪৮ ঘন্টার ভিতর আসামি ধরবে বলে ছিল রাষ্ট্র । এইটা এখন ইতিহাস । আশ্বাসের পর আশ্বাসে বছর ঘুরে বহু বছরে পড়েছে , তুমি এখন বড় হয়েছো সব বুঝতে শিখেছো । বিচার পাওনি বলে বাংলাদেশকে ঘৃণা করো না।

ইলিয়াস আলী বিএনপির নেতা । কে বা কারা ধরে নিয়ে যে গেল আজও ফিরে আসেনি । অবশ্যই অনেক খুন গুম হয় এবং হয়তো ভবিষ্যতে আরো হবে । তবে যেসব খুন গুম দেশকে নাড়া দেয় তাদের একজন ইলিয়াস আলী। তার স্ত্রী সন্তান অনেক দেনদরবার করলো জীবিত ইলিয়াসকে ফিরে পাওয়ার জন্য। রাষ্ট্র আশ্বাসও দিয়ে ছিল কিন্তু সেটাও বছর হতে বহু বছর হলো ইলিয়াস আলী ফিরে এলো না । আর সবচেয়ে বড় সত্য ইলিয়াস আলী বিএনপির প্রভাবশালী নেতা । তার ফিরে আসার সম্ভাবনা আদৌ কি ?

তনুকে আপনারা মনে হয় ভুলে গিয়েছেন । এই মেয়েটাকে কুমিল্লা সেনা নিবাসে কুমির খেয়ে ফেলেছে। তবে খাওয়ার আগে দেহের উপরে বিকৃত নৃত্য দেশবাসী দেখেছে । আমরা অনেক কাঁদলাম পেপারে ও সামাজিক সাইডে। কি লাভ হলো কিছুই হলো না । তার মা বাবা সন্তান হারালো বিচার ফেল না।

সিনহা , ইলিয়াস আলী ও সাগর রুনি আরো নাম না জানা মানুষের ভিড়ে অসংখ্য তনু যারা আকাশের তারা এখন। তনুর মা বাবা গ্রামের গরিব বলে ঢাকার রাজপথ অনেক আগেই নীরব হয়ে গিয়েছে । ইলিয়াস আলীর সন্তান আর সাগর রুনির সন্তান বড় হয়েছে সিনহার মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলতে পারবে বিচারের আশ্বাস আমরাও পেয়ে ছিলাম। যেই দেশে প্রদীপ লিয়াকত সেই দেশে ইলিয়াস কোবরা সিনামা বানাবে । আর আমরা তা চুপি চুপি দেখে যাবো ।

খল নায়ক ইলিয়াস কোবরা আসলে কিন্তু এই দেশের নাগরিকই না। মিয়ানমারের থেকে এসে কক্সবাজারে নিবাস গড়েছেন। মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোবরা পরিবারের প্রায় সব পুরুষই ইয়াবা কারবারে জড়িত। জেলও খেটেছেন অনেকে আবার মামলাও চলমান ।

আর এই ইলিয়াস কোবরা প্রচণ্ড দাপটের সঙ্গে আমাদের চলচ্চিত্রে কাজ করে গিয়েছেন ! মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই ইলিয়াস কোবরার নাম চলে আসায় এটি নিয়ে গভীর তদন্ত দরকার। সবচেয়ে আজব ও মজার ব্যাপার , যার পুরো পরিবার ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত সেই ইলিয়াস কোবরাকে কক্সবাজারের ওই এলাকার মাদক নির্মূল কমিটির সভাপতি বানিয়ে ছিলেন সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার!!

ছবি ফেসবুক ও কোবরার নিউজ কালের কন্ঠ হতে ।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৩ টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১২-০৮-২০২০ | ৯:৩৭ |

    আমরা যে কোথাও নিরাপদ নই; এই উদাহরণটিও অন্যতম। জীবনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে ভঙ্গুর এবং অসহযোগী একটি সমাজ ব্যবস্থায় আমরা বেঁচে আছি। Frown

    GD Star Rating
    loading...
  2. আলমগীর সরকার লিটন : ১২-০৮-২০২০ | ৯:৫৩ |

    ভাল একটা সংবাদ জানালেন মহী দা

    GD Star Rating
    loading...
  3. নিতাই বাবু : ১২-০৮-২০২০ | ১১:২০ |

    এদেশে কারোই জীবনের নিরাপত্তা নেই, দাদা। যে যত বাহাদুর, সে হঠাৎই নির্মম অত্যাচারে নিঃশেষ হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ দাদা, পাপের বিচার কিন্তু এই জীবদ্দশায় হয়ে যায়। এটা নিয়েও দেখা আছে অনেককিছু। খেলাও মাত্র শুরু।   

         

    GD Star Rating
    loading...