রূপকথার পাতা থেকে:
রাজপথের দু’ধার উপচে পরছে, উত্তেজিত প্রজাবৃন্দ অপেক্ষমান,
ঐতো রাজহস্তিশালের পাগলা হাতি হয়েছে ধাবমান !
গণনা মতে মানুষের ভীড়ে লুকিয়ে আছে রাজ্যের ভাবী কাণ্ডারী,
পাগলা হাতি খুঁজে নেবে আজ মৃত রাজার সুযোগ্য উত্তরসুরী।
পাগলা হাতি তুলে ছিল পিঠে এক কান্তিমান যুবক,
অতঃপর সুখে শান্তিতে রইলো তারা পেয়ে সুযোগ্য অভিভাবক।
বাংলাদেশ ২০১৮:
স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আজও
রূপকথার সেই রাজ্য হয়ে আছে বুঝি এই দেশ।
মাথাভারী সরকারি সমাবেশে আছে নখদন্তহীন রাষ্ট্রপতি,
প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী,অনির্বাচিত একশো তিপ্পান্নজন সাংসদ!
অনুগত প্রশাসন,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ তবুও
গুম,খুনের অবিরাম রক্তস্রোত আর অশ্রুজলে প্লাবিত এই সমতল।
স্তাবক গোষ্ঠীর সরকারি ব্যাংক, শেয়ার বাজার লুণ্ঠনের কালো কালিতে
লেখা হয় সর্বস্ব হারানো কোনো অনেক মফিজের আত্মহত্যার ঠিকানা।
দলবাজির নীলদংশনে ধ্বংস শিক্ষা ব্যবস্থা, শাসন ও প্রশাসন,
ধ্বংস নিরপেক্ষ নির্বাচন,জনমুখী প্রশাসনের স্বাপ্নিক চাওয়াগুলো।
ধ্বংস এই দেশে বাক, ব্যক্তি স্বাধীনতার সকল অবশিষ্ট,
কে এই সবুজে শ্যামলে অক্লান্ত বাজায় নিরোর ধ্বংস বাঁশি?
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া একাত্তরের বাংলাদেশে
আজ শোনা যায় কোন পরাজিত স্বৈরশাসকের কলহাস্য?
গণতন্ত্র, বাক ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রত্নতত্বে গড়া বাংলাদেশ যেন
আজ স্বৈরাচারের শ্বাপদসংকুল এক বিচ্ছিন্ন ব-দ্বীপ।
মৃত্যুর আল্পনা আঁকা এই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপই কি আমার দেশ?
এ’দেশেই কি শহীদের রক্তে ভেজা শিমুল ফুটেছিলো কোনো ফাগুনে?
কুয়াশা বেলা শেষে আলোর মিছিল হয়েছিলো কখনো এই পৌষেই?
ভোট স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা কি ছিল বীরশ্রেষ্ঠের স্বপ্ন?
না,যাও তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনো রূপকথার সেই পাগলা হাতিটাকে।
এই অগণতান্ত্রিক, অনির্বাচিত সরকার বাতিল করে,
জনসংখ্যার ভারে নুব্জ্য ষোলো কোটি মানুষের মেলা থেকে-
খুঁজে নিক সে দেশ পরিচালনার কোনো সুযোগ্য উত্তরসুরী।
(আমি ভেবেছিলাম একবার আমার কবিতাটা উৎসর্গ করি প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। কিন্তু ভরা জ্যোস্নার একটা পূর্ণিমা পেতেওতো একটা উজ্জ্বল চাঁদ লাগে ! তাঁকে উৎসর্গের করার মতো কবিতা লেখার হাত কোথায় আমার ? তাই ইচ্ছেটা চেপেই রেখেছিলাম।কিন্তু আজ বড়োদিনে তার চলে যাবার খুব কষ্টের খবরটা পেলাম। তাই আমার সব লজ্জ্বা চেপে রেখে এই কবিতায় মনে করছি শ্রদ্ধাভাজনেষু প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে।)
**এই কবিতার মতো একটা কবিতা বছর তিনেক আগে অন্য একটা ব্লগে লিখেছিলাম। অনেকটা একই শিরোনামে। অনেক পরিবর্তন করে আবার এই কবিতাটা লিখলাম। খুবই কম কিন্তু তবুও অল্প কিছু অংশ একই থাকলো।
loading...
loading...
"জনসংখ্যার ভারে নুব্জ্য ষোলো কোটি মানুষের মেলা থেকে-
খুঁজে নিক সে দেশ পরিচালনার কোনো সুযোগ্য উত্তরসুরী।"
___ এমন প্রত্যাশা আমাদের চিরকালের। অসাধারণ লিখাটি উপহার দেবার জন্য অভিনন্দন মি. খন্দকার ইসলাম।
loading...
মুরুব্বী,
খুব খুশি হলাম মন্তব্যে ।দেশের রাজনৈতিক অবস্থাটা এতোই খারাপ যে আর ভালো লাগেনা । সেই কষ্ট থেকে লেখা কবিতা । সেই কবিতা অসাধারণ বললেন তার মানে কস্টটাও কিন্তু অনেক । সদয় মন্তব্যে আবারো ধন্যবাদ ।
loading...
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং সমবেদনা রাখছি।
কবিতায় বেশ লম্বা এবং ডিটেইল একটি ইতিহাস স্পষ্ট হয়ে উঠে এসেছে।
loading...
রিয়াদি,
হ্যা অনেক শ্রদ্ধা প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে ।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
loading...
পশ্চিম বাংলায় থাকলেও বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে আমরা গর্ব করি। ভালোবাসি সে দেশের ঐতিহ্য সংস্কৃতি। অন্তত আমাদের দেশের ত্রিধা সংস্কৃতির প্রচলন বাংলাদেশকে এখনও গ্রাস করেনি। আমরা মনে প্রাণে চাই বাংলাদেশ ভালো থাকুক।
বাংলাদেশ খুঁজে নিক দেশ পরিচালনার কোনো সুযোগ্য উত্তরসুরী।
loading...
সৌমিত্র দা,
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালোলাগা মন্তব্যে ।
হ্যা আমাদের সবারই চাওয়া দেশটা সুন্দর করে চলুক ।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একটু জনমুখী ও জবাবদিহিতা মূলক একটা শাসনের সূচনা করুন । একটা সুশাসনের ভিত্তি প্রস্তর গড়ে দিক দেশে ।
সবাই ভালো থাকুক ।
loading...