ভণিতা না করেই

ভণিতা না করে যা বলব সত্য বলব বলে গোপলা মানে আমি, খুব রেগে মেগে জ্বলে পুড়ে জ্বলে উঠেও কিছু করতে পারি না। কারণ ও চুপচাপ ঘরের কাজ নিজের আত্মভোলা মনে করতে লাগল। আমি যত বলি, এটা কি একটা সংসার কেউ কারো কথা শোনে না। যত সব অনিয়মে ঘর বাঁধতে গেলে সংসার কিন্তু ভেসে যাবে। ও হাসল। বলল – চা দেব। পেট গরম হয়েছে।
সমস্যায় পড়লে বিকৃত মুখ করে বসে থাকি। বলব নাকি বলব না। ভাবতে ভাবতে বলে ফেলি। ও সব শুনে টুনে এত সহজ সরল এবং প্রাঞ্জল সমাধান করে দেয় যা এক কথায় বললে বলতে হয় এক্সসেলেন্ট। যা শুনে আমি বুঝলাম ভালোবাসা কারে কয়।
ও রান্না করতে কিছুতেই পছন্দ করে না। কিন্তু যখন সামনে পরিবার এসে পড়ে। বলে, নিজের ছেলে, নিজের স্বামী, নিজের মা, নিজের বাবা তখন তারা কি খাবে সকালে কি খাবে বিকালে কি খাবে ইত্যাদি ভেবে ভেবে নিজের হাতে রোজ রান্না করে। আমি কিছু সাহায্য করি। অবে তা নামমাত্র। তখন কোন কষ্ট কোন রাগ কোন অভিমান থাকে না। বরং রান্নার মধ্যে মিষ্টতা ঝরে পড়ে।
সন্তান মানুষ করার ব্যাপারে ওর সমস্ত দায় দেখে আমি অবাক হই। কেন না একটানা পেছনে লেগে পড়াশুনা কিভাবে ছেলেকে করাতে হয়। কিভাবে পড়াশুনা করিয়ে নিতে হয় তা আমি বার বার শিখি। যা আমার পক্ষে কখনই সম্ভব হত না। তবু তার মাঝে সন্তানের প্রতি মাতৃত্বের বিন্দুমাত্র ভালোবাসা কম হয় না।
এর পর আসি কিছু না না। রেগে গেলে চুপ করে থাকা যে মানুষের এক বৃহৎ গুণ এবং তার ফলে ফল সন্তোষজনকভাবে নিজের দিকে এসে পড়ে তা আমার অর্ধাঙ্গিনীর কাছ থেকে আমি শিখেছি। ফলে ও নিজে রাগলেও যেমন পরিস্থিতি অনুকূল হয় তেমনি আমি রাগলেও তাও অনুকূল হয়। কিন্তু রাগ ষোলআনা থাকে।
আমি বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে তবু ইত্যবসরে বলে ফেলাই ভাল যে বিয়ের পরে প্রেমই আসল প্রেম। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমার ও। সংসারে পা দিয়ে তারপর একসাথে পায়ে পায়ে চলার নাম প্রেম।
ও, আর একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি পড়াশুনায় কিন্তু বি সিরিয়াস। নিজের এবং অন্যের। অফিসে যখন যায় তখন ঘর পরিপাটি করে নিরাপদের দরজা জানলা খোলা রেখে তবে যায়। আর অফিসে কারো আঙুল তোলার পর্যন্ত সুযোগ দেয় না। আসলে যে পারে সে সব পারে। বিন্দাস পরিপাটি চুল বাঁধতে পারে আর ঘরে বাইরে সামলাতেও পারে। এমনি কি দ্রৌপদীর মত রাঁধতে।
রমণীর গুণ আমি আমার মাকে দেখেছি এবং পত্নী রূপে তেমনি পেয়েছি।
এ পর্যন্ত ও ও করেই শুরু এবং শেষ করলাম। কেন না শুধু লেখা হোক বা সাহিত্য। ঘরের কথা যেমন বাইরে বলতে নেই তেমনি বাইরের লোকের কথায় আমিও সাহিত্য করতে রাজি নই। তাই যা বলব তা বলার জন্য বললাম। এ আমি নয় আর ও ও নয়। ঠিক আছে? হয়তো বা সবাই ঠিক নেই শুধু আমি ঠিক আছি।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৬ টি মন্তব্য (লেখকের ৩টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. ফয়জুল মহী : ২০-০৮-২০২০ | ২৩:৫০ |

     একরাশ ভালো লাগার ভালোবাসা ।

    GD Star Rating
    loading...
    • দীপঙ্কর বেরা : ২১-০৮-২০২০ | ১২:০৪ |

      অনেক ধন্যবাদ 

      ভালো থাকবেন 

      GD Star Rating
      loading...
  2. মুরুব্বী : ২১-০৮-২০২০ | ১২:০৩ |

    ধন্যবাদ কবি। শব্দনীড়ে আপনার উপস্থিতি আশংকাজনক ভাবে কমে গেছে। Frown

    GD Star Rating
    loading...
    • দীপঙ্কর বেরা : ২১-০৮-২০২০ | ১২:০৪ |

      এবার লিখব। 

      ভালো থাকবেন 

      GD Star Rating
      loading...
  3. নিতাই বাবু : ২১-০৮-২০২০ | ১৮:৫৪ |

    ও রান্না করতে কিছুতেই পছন্দ করে না। কিন্তু যখন সামনে পরিবার এসে পড়ে। বলে, নিজের ছেলে, নিজের স্বামী, নিজের মা, নিজের বাবা তখন তারা কি খাবে সকালে কি খাবে বিকালে কি খাবে ইত্যাদি ভেবে ভেবে নিজের হাতে রোজ রান্না করে। আমি কিছু সাহায্য করি। অবে তা নামমাত্র। তখন কোন কষ্ট কোন রাগ কোন অভিমান থাকে না। 

    আমার মনে এরকম সবার রমণীরাই এমন হয়। তা আমার সংসার কি আর অন্যের সংসার-ই-বা কি । 

    শুভকামনা থাকলো।  

    GD Star Rating
    loading...
    • দীপঙ্কর বেরা : ২২-০৮-২০২০ | ১৯:১৬ |

      অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে 

      ভালো থাকবেন 

      GD Star Rating
      loading...