গত দেড় বছর ধরে, যে অরূপ দিনে অন্তত ১০/১২ বার ফোন না-করে থাকতে পারতো না, আজ ৫ দিন হলো, একটাও ফোন করেনি। সুনন্দা প্রথম ৩দিন অনেকবার ফোন করেছে। ফোন বেজে বেজে কেটে গেছে। তারপর আর ফোন করেনি।
অরূপের পাড়ার এক বান্ধবীকে সুনন্দা ফোন করে। সে যা’ বলল, তাতে সুনন্দার জীবনদর্শনটাই বদলে গেল।
——–
অরূপ তাহলে বিয়ে করছে! নিজের কানকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করল না। মাথা চক্কর দিচ্ছে। পা টলমল করছে। ঘরে ফিরে আবার ফোন করল ধরল না।
ভেতর থেকে কি যেন একটা উঠে আসতে চাইছে। অরূপ তুমিও! প্রেমের মন ভোলানো ডায়লগ। সব মিথ্যে। দেখা করা দরকার।
পাঁচটা বাজতে দেরি আছে। সুনন্দা চলল নাকতলা। সোজা উঠে গেল দোতলায়। দেখে অরূপের চেয়ার ফাঁকা। হাসি হাসি মুখে মনীশ জিজ্ঞেস করল – এবার তো বৌদি বলতে পারি? এখানে কেন? অরূপ তো পনের দিন ছুটি নিয়েছে।
কোন কথা না বলে সুনন্দা অফিস থেকে বেরিয়ে আসে। মনীশকে নীলু খোঁচা দিল – তখন থেকে বলছি চুপ কর। চুপ কর।
– কেন?
– আরে, অরূপ যাকে বিয়ে করছে এ সে নয়।
– এই কেলো করেছে। কি বলছিস?
এসব শুনে সুনন্দার ভেতরটা হু হু করে কেঁদে উঠল।
কলেজের প্রোজেক্ট কমপ্লিট করতে হবে তাও পরদিন গিয়ে উঠল অরূপের পাড়ার বান্ধবীর বাড়িতে।
সেই গিয়ে খবর দিতে অরূপ তখনি চলে এল – বলো, কেমন আছো?
মানুষ যে এতটা নির্লিপ্ত বেহায়া হতে পারে অরূপকে না দেখলে জানতে পারত না সুনন্দা। উত্তর দিল – কি শুনছি? আমাকে নিয়ে কেন এমন খেলা খেললে?
শান্ত গলায় অরূপ বলল – তুমি আমার কাছে সেই আগের মত আছো। আমার ফোন মণিহার নিয়ে নিয়েছে। না হলে তোমার সঙ্গে কথা বললে আমারও ভালো লাগত। তাছাড়া সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলে যাচ্ছে, সুনন্দা। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না এসব আর নেই। প্রেম তাকে রাস্তা দেখায়। তোমার সঙ্গে আমার তো শুধু সেই প্রেম সম্পর্ক। আর কিছু নয়। মণিহারকে নিয়ে একদিন আমি তোমাদের বাড়ি যাব। ভালো থেকো।
সুনন্দা অরূপের বেরিয়ে যাওয়া দেখতে পেল না। জানলা দিয়ে আকাশে এক টুকরো মেঘ দেখতে পেল।
loading...
loading...
অণুগল্পটি সুন্দর হয়েছে প্রিয় কবি। শুভ নববর্ষ।
loading...
গল্প ভাল হয়েছে বা লিখেছেন কবি দা।
loading...