আপনি লিখতেই পারেন। যা আপনার লেখা। কিন্তু সেই লেখা যখন অন্যকে পড়তে দেবেন তখন আপনাকে খেয়াল করতে হবে তাকে ঠিক বোঝাতে পারছেন তো। যে পড়ছে সে কি বুঝেছে সেটাই আসল ব্যাপার। সে যতটা বুঝতে পারবে অর্থাৎ আপনি তাকে যতটা বোঝাতে পারবেন সেটুকুই আপনার সার্থক লেখা। বাদ বাকী আপনি লিখতেই পারেন তা আপনার কাছে প্রয়োজনীয় হলেও পাঠকের জন্য পাঠ হবে কি না বলা মুশকিল।
এ তো গেল একটা দিক। আর একটা দিক হল পাঠককে আপনি শুধু পাঠ করালেন না কি ভাবালেন। শুধু পাঠ করালাম এক আর ভাবালাম আর এক। শুধু পাঠেরও সরল বিন্দু থাকে। তার চারপাশে মাঝে মাঝে ঘুরতে বেশ লাগে। আর ভাবাতে গেলে কিছু রহস্যময়তা ছেড়ে দিতে হয়। সেখানে পাঠক তার নিজস্ব কৌশলে ভাববে। ডান না বাম। কিংবা একদম সোজা। বা কোথাও না, যেমন আছি তেমন।
এই জায়গাতে লেখকের মুন্সিয়ানা। লেখা খুবই সহজ। যা দেখলাম পটাপট লিখে ফেললাম। দেখা না-দেখা, ভাবা না-ভাবা লিখে পাঠককে কিছু দেওয়া যায় না। দেখা না-দেখা, ভাবা না-ভাবার উপলব্ধিকে লিখতে শেখাটাই আসল ব্যাপার। এই উপলব্ধি ব্যাপারটাই আসল ব্যাপার। উপলব্ধিতে খামতি থাকলে লেখা প্রায় অসম্ভব।
যে কোন ঘটনা আপনি যত সহজে বুঝে নিতে পারবেন ততটাই তার উপলব্ধ সমীকরণ আপনার লেখায় যদি ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলেই সার্থক লেখা হয়ে উঠবে। লিখতে গেলে এটুকু অন্তত রপ্ত করতে হয়। জীবনের সরল উপলব্ধি সাধারণকে কবি করে তুলতে পারে। উপলব্ধিতে পলাশ রাঙা আগুন ঝরানো যায়।
এবার পাঠকের দিক বিবেচনা করলে দেখবেন। বই পড়ার নেশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। বইয়ের মজা হারিয়ে যাচ্ছে। তা কিন্তু নয়। বই বা লেখা পাঠককে কতটা টানছে, সেই ব্যাপারটা ভাবা দরকার।
এই ভাবনার রাজত্বে শাসন শুরু করতে আসছে অণুকবিতা অণুগল্প। একটা দোহাই থেকেই যায়, সময় কম যা বলার তাড়াতাড়ি বলতো বাপু। যদি অল্প কথার মধ্যে কল্প থাকে তাহলে তাকে টানতে বাধ্য। কোন মেদ কোন আকডুম কোন উপদেশ কোন ফিরিস্তি কোন অযাচিত কোন দোষারোপ কোন গুণকীর্তন কেউ শুনতে চায় না। স্বচ্ছ অথচ কিছু বলব না বলব করেও বলতে চাওয়া বা বলিয়ে নেওয়া পাঠককে দাঁড় করিয়ে রাখবে। তাহলে অল্পে কল্প আঁকতে বলতে লিখতে দেখাতে শেখাতে যে মুন্সিয়ানা দরকার সেটা আমরা রবীন্দ্র সুনীল শক্তি জয় শ্রীজাতের পরে কতটা শিখেছি সেটা ভাবা দরকার।
সাহিত্য আসলে একটা ধারা তাকে প্রবাহিত করাতে হয়। বাটন ধরার মত হাত বদল করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। হাজার দৌড়বে দু একজন সামনের মুখ হয়ে উঠবে। কিন্তু সবাইকে দৌড়তে হবে। চেষ্টা চালিয়ে যেতে ভাষা মর্যাদায় আপন গরিমা। পেছনের জন সামনের জনের এক অংশীদার। সবার ক্ষেত্রে একটাই ভাবনা হওয়া উচিত সঠিক উপলব্ধি। ভাবনার জগতে পাঠককে টেনে টুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা আমাদেরকেই করতে হবে। ভাল শিক্ষক তিনি যিনি ছাত্র ফ্রেণ্ডলি। অর্থাৎ ছাত্র কতটা শিখল তার উপরে শিক্ষকের মর্যাদা। না হলে বড় ডিগ্রী বিশাল পণ্ডিত কোন কাজেই লাগবে না। কারন ছাত্রের মনন উপলব্ধি করেই বিষয়ের পাঠাভ্যাস ভাল শিক্ষার অগ্রবর্তী।
আবার লেখক নিজের জন্য লিখতেই পারেন। লেখা নিজস্ব উপলব্ধিতে রাঙা হতেই পারে। সব পাঠক যে তাতে সম্পৃক্ত হবেন তা নাও হতে পারে। কিন্তু লেখার বৈশিষ্ট্য যে সীমা পেরিয়ে সীমাতে সীমাবদ্ধ থাকে। মন উড়ানের পাখনায় কোন বাঁধন নয় কিন্তু জীবনের ছোঁয়া অপরূপ হয়ে যেন থাকে।
অণুগল্প লেখা তেমনি একটি ধারা। অণুসন্ধানে একক থেকে ভিন্নতরের দিকে উৎক্ষেপন হল অণুগল্প। বিষয়ের মাঝে সহজ সংক্ষেপ স্বতন্ত্র স্বরক্ষেপন করার বিস্তৃত আকাঙ্ক্ষা, যেটা বলতে চাই সেটা না বলেও বলার বিন্দু উল্লেখ করার মুন্সিয়ানা, সঠিক উপলব্ধির পাঠক ভাবানুবাদ, সঠিক উপলব্ধির জারিত রসবিন্দু, যা দেখছি বা দেখেছি তা তোমাকে দেখিয়েও কিছু না-দেখা চেনানোর আপ্রাণ প্রয়াস, অনেক ভাবানার জারিত সমগ্রের সংক্ষেপ অথচ স্পষ্ট বৃত্তের কেন্দ্র আঁকাই হল অণুগল্প।
loading...
loading...
সাহিত্য আসলে একটা ধারা তাকে প্রবাহিত করাতে হয়। বাটন ধরার মত হাত বদল করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। হাজার দৌড়বে দু একজন সামনের মুখ হয়ে উঠবে। কিন্তু সবাইকে দৌড়তে হবে। চেষ্টা চালিয়ে যেতে ভাষা মর্যাদায় আপন গরিমা। পেছনের জন সামনের জনের এক অংশীদার।
প্রবন্ধে আলোচিত বিষয়গুলোনের সাথে দ্বিমতের কোন সুযোগ নেই দাদা।
অতি প্রাসঙ্গিক ভাবেই মূল্যবান বিষয়টি সামনে এনেছেন। সহমত।
loading...
ধন্যবাদ দাদা
ভাল থাকবেন।
loading...
সুন্দর পোষ্টের শুভেচ্ছা।
loading...
অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন
loading...
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লিখা। শুভেচ্ছা রইলো দাদা।
loading...
অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন
loading...
অনেক কিছুই শিখলাম ধন্যবাদ আপনাকে।
loading...
অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন
loading...
কবিতার কথাই যদি বলা হয় এখন বলুন কত আগে শেলী কি লিখলেন তিনি তো এসে বুঝিয়ে দেবেন না বা বোঝানোর দায় নেই । তাই কবিতা বোঝার জন্য পাঠককেও শিক্ষিত হয়ে উঠতে হয় । এ যেমন সত্যি আবার পাঠক তার মতো বুঝে নেবার স্বাধীনতাও কিন্তু আছে ।
ভালো লাগলো আপনার লেখা । শুভকামনা জানবেন ।
loading...
একেবারে ঠিকই বলেছেন। সাধারণ এভাবে কাছাকাছি হতে শিখলে সেও ঋদ্ধ পাঠক হবে।
ভাল থাকবেন।
loading...
বেশ ভাল লাগল আপনার আলোচনা। আশা করি ভাল আছেন। শুভেচ্ছা নিবেন
loading...
ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।
loading...
যেটা বলতে চাই সেটা না বলেও বলার বিন্দু উল্লেখ করার মুন্সিয়ানা,…
*

loading...
ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।
loading...