প্রিয়তমা……
আমার প্রতিটি বিকেলের মত আজো পশ্চিমা আকাশ লালিমায় ছেয়ে আছে, খরস্রোতা নদীটি হা করে আছে অস্তমিত সূর্যকে গিলে নিতে, আয়েশি ভঙ্গিতে পাখিদের নীড়ে ফেরার আয়োজন কিংবা বাতাসে কুয়াশার ধূম্র মিলেমিশে প্রকৃতিতে ফেলছে শান্ত অবয়ব…এই সবই ঠিক আছে, কেবল একটাই ব্যতিক্রম আজ আমার বুকের অন্দর মহলে চলছে অসম তাণ্ডব লীলা।
হৃদপিণ্ডের দপ দপ বেড়েই চলেছে; আমি জানি এসব ক্ষয় অবক্ষয়ের গল্পে তোমার মন বিচলিত হবে, অস্থির হবে, জানি শিকল বাঁধা হরিণীর মতন তুমি ছটফট করবে। তবু তোমাকে জানাতে হবে … সহস্র মন খারাপ রাত্রির নিঃসঙ্গ দহন সয়ে সয়ে আমি দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছিলাম জীবন। কারণ দহন তাপে তোমার উষ্ণতা খুঁজে পাই;
বিনিদ্র যন্ত্রণায় আমি সয়ে গেছি কারণ যন্ত্রণার অভ্যন্তরে তোমার সহিষ্ণু প্রেম অনুভব করি। পোড়া মাটির গন্ধে আমার অভিযোগ নাই; কারণ মাটি পুড়ে আমি নির্মাণ করি তোমারই প্রতিমা……তুমি জানতে আমি যেই ভাবেই হোক বেঁচে রবো, যেমনই হোক হার না মানার মানুষ আমি।
তুমি জানতে আঘাতের ভয়ে আমি পেছনে তাকাবো না, কটাক্ষের মুখে আমি বিব্রত হবো না! আর জানতে যে প্রলয়ের তাণ্ডবে সুনামির সাথে যদি তলিয়েও যাই তবে যেমন করেই হোক আমি উঠে দাঁড়াবো………
পাবোনা জেনেও
ছোঁবোনা জেনেও
আমি বার বার হাত বাড়াবো তোমারই পাণে…
আর-
এসব জানতেই বলেই তুমি মুক্ত বিহঙ্গীর মতো উড়ে বেড়ানোর নেশায় বুদ হয়ে গেলে। বৃক্ষ হতে বৃক্ষে, প্রান্ত হতে প্রান্তরে উড়ে বেড়ানোর নেশায় ডুবে রইলে…
শুধু জানতে না যে নেশায় ডুবছো তার থেকে উঠে আসার কোন রাস্তা নাই, ফেরার কোন পথ নাই।
অথচ আমি নিজেকে সাজাতেই ধরেছিলাম তোমার হাত। অসহায় ডানা ভাঙ্গা পাখির মতো তোমার চোখে চোখ রেখেছিলাম সুন্দর দিক নির্দেশনার আশায়। সহস্র শব্দের আশ্রম ভেবে নিজের সমস্ত কবিতা বুকের আগল থেকে তুলে তোমার হাতে দিয়েছিলাম…।
অথচ মানুষ হবো বলে সে দিন আমি কবি হতে চাইনি, আমি চাইনি যে বহুদূর উড়ে এসে প্রজাপতিরা আমার আঙ্গুলের ডগায় আশ্রয় নিক, তুমিই আমাকে কবিত্ব দিলে, প্রজাপতির আশ্রমের ডাল বানালে!
তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
যে দিন ঝর্না স্নানে সিক্ত হতে হতে নিজের বুকের কপাট উন্মুক্ত করে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলিঙ্গনে আমাকে নিবিষ্ট করেছিলে, আমি সে দিনই পরিপূর্ণ জীবন পেলাম। বসন্তের স্ফুটিত তাবৎ পুষ্প গুলোয় বিলিয়ে দিয়েছিলাম আজন্ম ভালোবাসা। তোমার অমর্ত্য চুম্বনে পেয়েছিলাম পরিতৃপ্ত জীবনের স্বাদ, দুনিয়ার মায়া মমতা, কোমলতা …আর পেয়েছিলাম এক অনবদ্য স্পন্দন !
তুমি ফিরও বা না ফিরো
আজকের এই বিকেল এই সন্ধ্যা তোমার জন্য উৎসর্গ করলাম!
আর অনন্তের আক্ষেপে ছুঁড়ে দিলাম জ্বলন্ত দিয়াশলাই……
ভালো থেকো।
ইতি
– তোমারই আমি।
loading...
loading...
কত আবেগ কত লুকোনো শব্দের অনুচ্চারিত বোধন একটি চিঠিতে থাকে
কখনও একাকী নিরালায় পড়তে থাকলে অনুভব হৃদয়ে গাঁথে।
স্যাল্যূট স্যার। সালাম জানবেন।
loading...
অভিব্যাক্তির বণনাতীত প্রকাশ! আঙ্কেল আসসালামু আলায়কুম।
loading...