প্রখর রোদের দাপট গেলেই সিক্ত হয় এ আঁখি,
সেই যে তুমি চলে গেলে পত্র লিখে রাখি –
’যতোই ভাবো মোহের কাছে গেলাম আমি হেরে
আসবো কোন আষাঢ় মাসে হয়ে শালিক পাখি!’ কদম কেয়া উঠলে জেগে রয় কি আজও হেলা!
অবাক চোখে চেয়ে দেখি কিশোর

সময় এখন পানির সাথে
যুদ্ধ হচ্ছে- আমরণ যুদ্ধ;
জীবন্ত লাশ পানির উপরে
ভাসছে- অনাহারী কষ্ট
পাতিলে অনল জ্বলে না;
মাদুর পারা খাবার বসে না
-আর্তনাদ সময়ের ঘড়ি-
অথচ বুকের নদে বালুচর
বর্ষা কে ভয় করি না- না!
যুদ্ধ করি প্রতি বছর- এমন কি
ক্ষণে- ক্ষণে, রাক্ষসী বানের
বন্দুকের নলে- রক্তাক্ত ঢেউ
ভেসে

মা, কোথায় আছে বাবা? সেই যে কবে মাথায় হাত রেখে বলেছিল
ভাল থাকিস বাপ, মাকে কাঁদাস নে।
আমি কি একবারও তোমাকে কাঁদিয়েছি? বল মা। তুমিইতো দেখি গোপনে কাঁদ;
আমাকে দেখে লুকানোর চেষ্টা কর,
আমার কি দোষ বল? কত দিন হলো বাবা নেই, ঘরটা খালি,
এখনও আসে না কেন?
আমাদের

মানুষ মরছে মরুক না,
কিসের এতো চিন্তা করা-
আমিতো আর মরছি না আজ,
এই দিব্যি বেঁচে থাকা। জলে ডুবছে ডুবুক না,
কেন এতো আহাজারি,
ব্যাটারা দেখ সাঁতার না জানা,
মরবেইতো মরুক না। উন্নয়নের জলস্রোতে গা ভাসিয়ে বেড়াক না,
কিসের এতো চিন্তা বলো,
শ’খানেক মরুক না-
সবাইতো আর মরছে না। তোমরা বাপু বেজায় রসহীন ,
একটু-আধটু

ভালোবাসা মন রাঙা পুণ্য তীর্থ গড়া
প্রেম পুষ্পে গাঁথা মালা বুকে থাকে ধরা,
ছলে বলে অধিকারে যদি তাকে চাও
তাহলে চোখের জল শুধু ফেলে যাও। হৃদয় অপার মর্ম পরস্পর পাশে
বাঁধনে জড়িয়ে থাকে অগাধ বিশ্বাসে,
একে অপরের কাছে শুধু হাতে হাত
এগিয়ে চলার পথে থাকে সাথে সাথ। অন্তরে চির সবুজ বন পাখি

আঙুলের টিপে মেরে ফেলি তারে
ভেবেছিলাম সে বুঝি দেবী
সমস্ত আরাধনা তাঁরই প্রাপ্য
অথচ শূন্য হতে হতে এখন আমি নাই হয়ে গেছি। কোন কোন ভবিষ্যৎ ডুবে থাকে তরল নীরবতার মাঝে
যা হয়েছে গত আমরা তাকে ধরে নিই ঈশ্বর হিসেবের খাতায় কলম চালিয়ে হই মহাজ্ঞানী
যতটুকু আয়োজন তার সবটুকু সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার

যে কথাটি হয়নি বলা;
তা রেখেই দিতে সংগোপনে,
এত দিন পর কেন সুপ্তাগ্নিকে জাগালে প্রজ্জলনে? সে দিন জ্বালিয়েছ নিরবতায়
আজ জ্বলছি ব্যাকুলতায়,
সেটা কি শুধুই ভুল ছিল, নাকি অন্য কিছু;
ছুটে ছিলে কোন আলেয়ার পিছু পিছু?
এই ভুলের মাশুল কি আজও গুনে যাবে?
বেলা অবেলা সারা বেলায়! পাষাণে

আগুনে যখন ঝলসে যাচ্ছে গায়ের চামড়া
আমি নানা বাড়ির পুকুরে সাঁতার কাটছি। পুকুরের জলে শৈশব ভেসে থাকতো
আড়াই ঘন্টা সাঁতারেও ক্লান্তি নেই, ঘাট থেকে
মা ডাক দিত ‘উঠে আয়, জ্বর এসে যাবে’
তবু উঠতাম না দেখে মামা পুকুরে নেমে
তুলে আনত। পরের দুদিন জ্বর। তখন অন্য আহ্লাদ। আগুনে চামড়া ঝলসে যাচ্ছে,

বুইলেন মোয়াই আমরা একা কিছু খাই না
আমরা দিয়ে থুয়ে খাই।
চারদিকে যত ল্যাংড়া লুল্লু
চারদিকে যত আগাছার ঝুণ্ড
কাজে লাগে পাঁচ বছর পর
তবুও
বুইলেন মোয়াই আমরা একা কিছু খাই না
আমরা দিয়ে থুয়ে খাই। ছড়িয়ে রেখেছি বঁড়শিতে গেঁথে
লক্ষ্মী – বিধবা – কন্যা – সাইকেল
ছড়িয়ে রেখেছি

জীবন সংসার মানে পূর্ণিমা রাতেই
চাঁদের সাথে উঠতি ফুর্তি প্রেমেই!
কিছুই করা ভাল না,খাই আর ঘুমাই
জগত সংসার শুধু আবেগে উড়াই-
ভাল আর মন্দ মসজিদ মন্দিরে ঘুরাই স্বার্থের বালুচরে জল দিয়ে সাঁতরাই;
মরা গাঙ্গে ঘাসফুলের মালা সাজাই-
মাটির আইলপাথারে ঠিকানা গড়াই
এই না হলো ভাবের পায়জামা সিলাই
এ ছাড়লাম

হর্সরেস শেষ হয়ে গেছে বেশ আগেই। যারা দেখতে এসেছিল ঘোড়দৌড়
তারা সবাই ফিরে গেছে নিজ নিজ গন্তব্যে। আমি একা দাঁড়িয়ে আছি।
আমার নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য না থাকায়— পথ থেকে পথে দীর্ঘদিন বড়
সুখে বাজিয়েছি সানাই। উৎসব নয়, তবু আনন্দে নেচেছি নদীর মতো।
আর আকাশের সীমানা থেকে ধার নিয়ে

বিলম্বিত ঠাণ্ডা কফির ধোঁয়া-সিঁদুরের মতো
স্রোত ধরে কী যে মহুয়া ঠোঁটের উপত্যকায়-
আশ্রিত স্বপ্ন ভাসে। ঘনশীল সবুজ পাতার
সন্ধ্যায়-বেঁচে থাকা কল্পনার নিঃশ্বাসে
তুমি পালানো-হরিণ, মাংসাশী বাতাস-
এক সঙীন জীবন নিয়ে ছুটছে। ঘরানার শহরে-
কেবল লুডুর গুটির মতো-অলীকবন,
গল্পের নিচে-কাপহীন পিরিচের শব্দ,
ঋষিঋদ্ধ সবুজ সমুদ্রে আশাবাদী মানুষ,
জিততেই হবে। এমন তো শিকারি মুহূর্ত
তোমাকে কেন্দ্র

তোমার পায়ের পাতা মুছে নেয়া এই ঢেউ
আর কক্ষনো ফিরবে না
ভাঙা ভাঙা বুদবুদ্ আর উদ্বেল হবেনা ওই দূরে গাঙচিল পাখা ছুঁয়ে
দুএক টুকরো বাতাস তবু ছুটে আসে
এমনই এলোমেলো চুলে বারবার পায়ের চাপে ফুটেছ যে বালুচিহ্ন
তার নাম গোলাপ সাগর হতে পারে
হতে পারে বুনো ঝাউয়ের ঝাঁঝালো দুর্নাম এতকিছুর পরেও তুমি
সমুদ্র

তুমি যেন বৃষ্টির আকাশে এক টুকরো মেঘ,
ছুঁয়ে ফেলো সহজেই আমার আবেগ,
তুমি যেন রঙধনূ রঙে আঁকা নীল আকাশ,
ভালোবেসে কেড়ে নাও আমার যত দীর্ঘশ্বাস। চাই এমন আবেগী আহলাদী এই মনটারে
বেঁধে রাখো প্রেমের সুতায়, বাজাও হরদম
সুখের সুর মনের তারে!
মেঘের মত মন আমার, অল্প কষ্টেই