পঠন বিষয়ক পত্রাবলী
প্রকৃত পঠন আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। তবুও আমাকে পড়তে হয়েছে। এক
জীবনে সবকিছুই পড়া হয় না। দেখে গেলেও তুষ্ট হয় না মন। তবু তাকিয়ে
থেকে আকাশ পড়েছি, পাহাড় পড়েছি, পড়েছি ঝরণার অসমান্তরাল
ঢেউসূত্র। কোথা থেকে ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে খড়ের স্তুপ। নিজেকে খড়ের
চেয়েও তুচ্ছ
ক্ষতচিহ্ন
কত ক্ষত লুকিয়েছ
শারদীয় কাপড়ের ভাঁজে?
যেখানে ঝোলানো থাকে
মিথ্যে গোলাপী হাসি
সেই ঠোঁটে ক্ষত ছাপ
ফেলেনা কখনো।
বহু ক্ষত চাপা পড়ে
লিউকোপ্লাস্টে,
বহু খোলা হাওয়াতেই
প্রান্তদর্শণ।
যেখানে রক্ত ঝরে
চুঁইয়ে নাছোড়-
যেখানে ঝড় শেষ হলে
মৃতবিষাদ থাবা গেড়ে বসে-
সেখানেই নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে
একে একে ক্ষত মাথা তোলে
বিষ পার্থেনিয়াম বেশে,
সেখানেই জন্ম নেয়
অকথ্য নীল রূপকথা।
মধ্যরাত্রির কিছু ছেঁড়া অংশ
রাতের কিছু ছেঁড়া অংশ জোড়াতালি দিয়ে একটি
আহত কবিতার বীজ বুনতে চেয়েছিলাম
কিছুক্ষণ আগে তিনি বললেন, অল ডিলিটেড!
এখন হাত-পা ভেংঙে আমি আচানক দাঁড়িয়ে আছি
আমার চারপাশে মাথাব্যথা
খুচরা যন্ত্রাংশের মতো দু’একটি ভালোবাসার কথা!
আমি কিছু বলিনি অর্ধেক ছল
একবার কসমসের কথা বলেছিলাম
দুর্বাসা মুনির কোপানল!
এতো টিনি সাগরজল তবুও
দৃশ্যতঃ
আজ তোমাকে সাগর দেখাতে নিয়ে যাব
বাড়ীর পাশে যেমন দেখছ তেমন নয় মোটেও
সিগারেটে আচমকা হাত লেগে যাওয়া অনুভুতির মত
তোমার চোখেও ভয় জাগবে
এ জন্যেই গুরুজনেরা বলেন, সাগর দেখে খুশি হবার কিছু নেই
ও তো এক লহমায় উড়িয়ে নেবেই সব
কেবল ডুববে তুমি—
না হয় চলো তোমাকে পাখির পালকে লুকানো
বেহিসাবি
এক তুই ছিলি আর এক তুই তুই রাত
এক বুক ভালোবাসা ছিল আর বেহিসাবি চাঁদ
একদিন হিসেব কষে মেঘ করলো
মেঘটা বড্ড কালো ছিল আর কালো কালো রাত;
যেদিন জিজ্ঞাসা করেছিলি কতটুকু ভালোবাসি তোকে
সেদিন থেকে ভালোবাসা কেমন ঘুমিয়ে গেছে
হিসেব কষে স্বার্থান্বেষী
আমি শুধুই ভালোবেসেছি;
তুই বড্ড বেশী হিসেবি
ভালোবাসা বেহিসাবি।
গণসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত আর অরিজিৎসিংগীত
চার
গান কিন্তু শুরুতে এমন ছিল না যা সে এখন হয়েছে। গৈ ধাতুর অর্থ বলা, মানে সুর ক’রে পাঠ। গৈ থেকে আসছে গায়ত্রী — একটা ছন্দ, গান নয়। আসছে গীতা, কৃষ্ণার্জুন সংলাপ। ঋকবেদের সূক্তগুলো সুরে আবৃত্তি হবে, ওইটুকুই পারমিশান ছিল।
ক্ষিতিমোহন সেন লিখেছেন,
এক শুদ্র কিছু কিছু লিখতে শিখেছিল। অবিরাম লিখেই যেত সে। তবে জাতে সব থেকে নিচু হওয়াতে উঁচুতলার মানুষেরা তার লেখা পড়ত ও না, কোথাও ছাপত ও না। একদিন চলার পথে এক ব্রাহ্মণ লেখককে ভুলবশত ছুঁয়ে দেয় শুদ্র। তাকে চিনতে পেরে ছিটকে সরে গিয়ে ব্রাহ্মণ
তিন পেগ হুইস্কি গিলে সোমনাথবাবু মোবাইলে ফোন করলেন-
: হ্যালো, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলছেন?
: না, রং নাম্বার।
: আপনি কি শিওর রং নম্বর?
: শিওর, আমি কামাল চৌধুরী।
সোমনাথবাবু আরও দু’পেগ পেটে চালান দিলেন। একটা সিগারেট ধরালেন, লম্বা টান দিয়ে কল করলেন-
: হ্যালো, এটা কি শান্তি নিকেতন?
: না।
:
আকাশের পকেটে কোন ডাকবাক্স আছে?
চিঠি উড়ে যাচ্ছে একটা প্রগাঢ় নীল অভিযাত্রার দিকে
শূন্যের সাথে শূন্যের দ্বন্দ্বজ কোলাহলে কে বেশী বেগবান
নির্ধারিত হোক।
হিপনিক জার্কসে ঘুম ভেঙ্গে গেলে
বুকের মাঝখান থেকে এক জোড়া সারস উড়ে যায়
অন্তহীন মেঘের বাড়ির পথে……
একটি প্রবল ঘুম দ্রুত পতনোন্মুখ
অভ্রংলিহ পাহাড়ের চূড়া থেকে নিতল গহ্বরে।
আহা স্বপ্ন!