আলোকচিত্র » বাংলাদেশের ল্যাভেন্ডার ফুল

ZoXTbp0

এবার শ্বশুর বাড়ীতে এই বেগুনি বুনোফুলের দেখা পেলাম। নাম দিয়েছি বাংলাদেশের ল্যাভেন্ডার। ফসলের ক্ষেতজুড়ে এই ফুল ফুটে আছে। এখানে সেখানে থোকা থোকা বেগুনি ফুল দেখে মনটাই আনন্দে ভরে উঠেছিলো।

একটি ক্ষেত তো পুরাই এই ল্যাভেন্ডারের দখলে। শ্বশুরবাড়িতে এবার মাত্র চার দিন ছিলাম। তাই কোনো ছবিই সুন্দর করে সময় নিয়ে তুলতে পারিনি। ক্যামেরা আর মোবাইলও আমার কথা শুনেনি। সকালে শিশির ভেজা ঘাসে বসতে ভয় লাগছিলো। কোথা দিয়ে আবার জোঁক এসে যায়। আবার দুপুর বেলা গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড, এত মৌমাছি আর ভোলতা প্রজাপতি সর্বনাশ। আওয়াজে মাতোয়ারা আমি। ভয়ের চোটে বেশী কাছে গিয়ে বসে ছবি তুলতে পারিনি। ভোলতাদের ভয় বেশী লাগছিলো। তাছাড়া ক্ষেতটা বাড়ী থেকে একটু দূর হওয়াতে আরও সমস্যা। কে কী মনে করে আবার। ক্যামেরা নিয়ে একাই বের হইছি। আশে পাশে কেউ নেই। মানুষজন কেমনে চাইয়া থাকে। লজ্জাও লাগছিলো।

এত সুন্দর একটা ফুল অবহেলায় রয়েছে ইশ এগুলো চাষ করতে পারলে ভালোই হইতো। আবার গেলে এই ফুলের গাছ ঢাকায় নিয়ে আসবো যদি পাই। গ্রামের মানুষ এসবের ধার ধারে না। এসব তাদের মনকে মুগ্ধতা দেয় না। তারা জানে কেবল কাজ করতে। আমি হলে এগুলো বাড়িতে এনে লাগাতাম। যেহেতু শ্বশুর বাড়ীতে থাকি না তাই আর ফুলগাছও লাগানো হয় না।

ক্যানন ক্যামেরায় তুলেছিলাম ছবিগুলো। অনেক ছবি আছে …….. আবার মোবাইলেও তুলেছি। সেখানে এই ফুলের পাশেই একটা ক্ষেতে শুকনোর মধ্যে কচুরী পানা ফুল ফুটেছিলো। সেগুলোর ছবি অন্য দিন দেবো। যদি দেখতে আগ্রহী হন আপনারা।

আমি তুলে আনি মনের ঝুড়িতে কিছু মুগ্ধতা। মুগ্ধ হতে জানি বলেই, পথে প্রান্তরে ছুটে বেড়াই। কেউ কিছু বলুক, কেউ তাকিয়ে থাকুক এগুলো এড়িয়ে যাই বলেই সময়গুলো শুধু আমার হয়ে থাকে। এই যে বেগুনি রঙ ফুলে মৌমাছিদের গুঞ্জন, কেউ কী কান পেতে শুনেছিলো, কেউ দেখেছিলো প্রজাপতিরা মধু নিতে হামলে পড়েছে ফুলেদের উপর।

এখানে কারো সাথে কারো নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নেই হেরে যাওয়ার ভয়। ভিন্ন প্রজাতি অথচ এক সঙ্গেই ওদের বাস, স্বার্থ নিয়ে কেউ জড়িয়ে পড়ে না তুমুল সংঘর্ষে। এখানে যে যার মত খাদ্য আহরণে ব্যস্ত। একের খোরাক অন্যে নিয়ে নিলেও এরা ক্রোধে পড়ে না ফেটে।

ওদের বসন ভূষন, গায়ে রঙবাহারী রঙ, কেউ কারো চেয়ে নয় কম সুন্দর। এখানে সাদা কালো ভেদাভেদ নেই। এখানে রূপের অহংকারে কেউ কারো প্রতি ঈর্ষা করে না পোষন। এদের বসবাস মিলেমিশে ভালোবেসে। এখানে সবার ডানা আছে তবুও দম্ভ নেই একফোঁটা।

আর পার্পল বুনোফুল নিজেকে উজার করে দিয়ে ফুটে আছে পাপড়ির ডানা মেলে। সে নিজেকে সুখী করে অন্যকে সুখে আচ্ছন্ন করে। কিছু মুহুর্ত কেবল আমার হয়েই আসে। আমি অনুভব করি স্রষ্টার সৃষ্টির সৌন্দর্য। মহান আল্লাহ তাআলা এত শত নেয়ামত ঢেলে দিয়েছেন আমাদের জন্য। অথচ আমরাই তার নিয়ামত ঠেলে অহংকারী হই, পাপে হই লিপ্ত।

এই যে মৌমাছিরা মধু নিয়ে যাচ্ছে, যতটুকু সঞ্চয় সে কার জন্য। আমাদের জন্য। আল্লাহ তাআলাই ঠিক করে দিয়েছেন কোথা হতে কার হবে অথৈ উপকার। মানব জাতির কল্যাণে মহান আল্লাহ তাআলা গাছ পালা বৃক্ষ তরুতে করেছেন তার আহারের জোগাড়।

©কাজী ফা‌তেমা ছ‌বি।

=আমা হতে মুগ্ধ হতে শিখো বন্ধু=

চোখ বন্ধ করে হাঁটো বন্ধু, কখনো বলোনি এই দেখো দেখো প্রজাপতি,
তুমি সোজা পথে হেঁটে যাও, কী চিন্তা বুকের ভিতর, বুঝিনা মতিগতি;
তুমি হাঁটো আর আমি মুগ্ধ হই চলার পথে চলতে চলতে,
আমারও তো ইচ্ছে হয় ফুল পাখিদের সাথে কথা বলতে!

দূরে বহুদূরে হেঁটে চলে যাও,
আমি ভোঁ দৌঁড় দেই তোমায় ধরতে পারি না তাও,
দূর্বাঘাসে রাখো না চোখ, দেখো না পথে পথে স্নিগ্ধতা ছড়ানো ,
প্রকৃতির মায়ায় তোমাকে গেলো না আর জড়ানো।

ছোটো ঘাসের পাতায় বসে থাকে যে প্রজাপতি,
তার পানে মুগ্ধতার দৃষ্টি তাক করলে কীই বা হবে ক্ষতি?
দাঁড়াও বন্ধু
দিয়ো না মনে ব্যথা এক সিন্ধু।
কিছু মুগ্ধতা স্মৃতি করে রাখবো, শাটারে করতে দাও ক্লিক,
এক মিনিট অপেক্ষায় রও, আমি জানি জিতে যাবে তুমি তার্কিক!

বন্ধু আমায় এনে দাও প্রজাপতি প্রহর,
প্রজাপতির ডানায় যত রঙ, ছড়িয়ে দাও মন শহর,
মুগ্ধতা দাও, হও অল্প সহনশীল,
আকাশের মত প্রশস্ত করো তোমার দিল।
মুগ্ধ হতে শিখো, মুগ্ধ হও, এসো শিখাই, শিখবে,
প্রজাপতি ফড়িঙ নিয়ে ছন্দে দু’কলম লিখবে?

চোখ তুলো দেখো, উড়ছে প্রজাপতি ডানা মেলে,
দেখো পিঁপড়েরা ধুলোর সাথে গড়াগড়ি খেলে,
স্রষ্টার সৃষ্টি কত অপরূপ, দেখো তাকিয়ে মুগ্ধ হও,
প্রকৃতির ঘ্রাণ নিতে এবেলা সুখে উতলা রও।

এত সুন্দর মুহুর্তগুলো বন্দি করে রাখি স্মৃতি ঘরে। কখনো বিষাদ মনে উঁকি দিলে। খুলে বসি অতীত স্মৃতির ঝাঁপি। আমার দীর্ঘশ্বাসগুলো উড়িয়ে নেয় স্মৃতির হাওয়ায়। আমার মহানুভবের সৃষ্টির সৌন্দর্য আমি উপভোগ করি একাগ্রচিত্তে। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতায় পড়ি নুয়ে। তাঁর দেয়া এত সুন্দর মন, যে মনে মুগ্ধতারা করে খেলা অনবরত। তাঁর তরেই সঁপে দেই প্রাণ। তাঁর রহমত নিয়ে বেঁচে আছি এই ধরায়। ভালোবাসি তোমায় ও করুণাময়। পাপগুলো আমার করো মার্জনা।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৫ টি মন্তব্য (লেখকের ২টি) | ২ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ০৭-০২-২০২১ | ১৩:৪৪ |

    বিষয়ভিত্তিক ছবি একত্রিত করাটা এককথায় অসম্ভব এবং দূরহ একটি কাজ। ভাগ্যিস অসাধারণ এই ছবি গুলোন আপনার হাতের নাগালে ছিলো !! ছবির চরিত্র-চারণ প্রায়ই একই ঘরানার হওয়া সত্বেও দেখতে কিন্তু ক্লান্তি লাগেনি। Smile

    অভিনন্দন প্রিয়বরেষু প্রিয় ছবি রাণী। কবিতাকে জুড়ে দিয়ে পুরো পোস্টের স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্প্রসারিত করেছেন। ধন্যবাদ। এবং ধন্যবাদ। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    GD Star Rating
    loading...
    • এই মেঘ এই রোদ্দুর : ০৭-০২-২০২১ | ১৪:১৫ |

      সুন্দর মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহ খাইরান ভাইয়া

      ভালো থাকুন অনেক

      GD Star Rating
      loading...
  2. ফয়জুল মহী : ০৭-০২-২০২১ | ১৪:৪৮ |

    ভীষণ মুগ্ধকর লিখনিশৈলী 

     

    GD Star Rating
    loading...