কবি তাড়াতাড়ি মরে যাক
দুই
আপনার হার্ট আপনাকে অ্যাটাক করার আগে যেমন একদুবার শাসিয়ে দিয়েছে বুকের মাঝখানে ব্যথার চিউয়িংগাম লাগিয়ে, তেমনি নিজেই নিজের সেকেন্ড-হ্যান্ড হয়ে ওঠা কবিকুল প্রচুর গদ্য লিখতে শুরু করে, ছোটদের জন্যে গল্পছড়া, আর স্বপ্ন দ্যাখে উপন্যাস ছাড়ব বাজারে। ভাবে কিন্তু লেখার সাহস পায় না; ভালোরকম জানা আছে, কবিতা কাঁচি মেরে দেবে বাকি লাইফের মতো। আর লিখেই ফেললে উপন্যাস?
“আমার বিচার তুমি করো”।
[অ্যানেক্সচার টু-এ: আলোচনা থেকে বাদ যাচ্ছে সেই সেই কবি যাদের গুরুতর বীভৎস বেকায়দা মাল্টিপারপাস প্রতিভা, হুইচ ইনক্লুডস রবীন্দ্রনাথ]।
মুশকিল হল, পৃথিবীতে কাউকে এক্স-পোয়েট বলার চল নেই। একবার কেউ কবি, তো চিরকাল এক্সপ্লয়েট করবে তোমাকে।
কবি মরে যাওয়ার দ্বিতীয় লক্ষণ, সে পত্রিকা সম্পাদনা করতে থাকবে, নিজের প্রকাশনীও খুলে ফেলতে পারে। [অ্যানেক্সচার টু-বি: বাদ যাবে ওই ওই কবির নাম যাদের গুরুতর বীভৎস বেকায়দা সাংগঠনিক প্রতিভা, হুইচ ইনক্লুডস রবীন্দ্রনাথ]।
কবিদের তিনটে দশা আছে ব’লে আমার ধারণা। এক: শুধু কবিতা লেখা (সৃষ্টি)। দুই: কবিতা লেখা আর ছাপানো (স্থিতি)। তিন: শুধু ছাপানো (প্রলয়)।
এই প্রলয়কালের আগেই কবিকে রুখে দিতে হবে। সে তো মরা নক্ষত্র। আলো ছড়াচ্ছে মানে বেঁচে আছে ভাবলে এত চরম ভুল হবে, আপনি সর্বোচ্চ পরিমাণ জিভ কেটে গোটা বাংলাদেশ খেপিয়ে দেবেন। ধরুন, কবি তিনটে কবিতার বই লিখে ফতুর হয়ে গেছে। কিন্তু সুবুদ্ধি করে থামে আর কে? ফুরিয়ে যাওয়ার সিকি শতাব্দী পরে তার প্রথম কবিতার বই নিয়ে নাড়াচাড়া। ওই মরা তারার আলো আসা শুরু হল। কবি উৎসাহিত হয়ে বাইশ নম্বর কাব্য প্রকাশ করে দিলেন, তাতে সবক’টা অপদার্থ কবিতা। জনমনস্তত্বের নিয়মে সেই কিতাব নিয়েও হইচই পড়ে যাবে। ইতিমধ্যে এতদিনে তার দু’নম্বর কবিতার বইও পাঠকদের মনে ধরতে লেগেছে। ব্যস, মরা তারার তেইশতম কাব্যগ্রন্থ পেয়ে গেল অ্যাকাডেমি/জ্ঞানপীঠ/নোবেল, যেকালে একটা পদের পদ্য লেখার ক্ষমতাও তিনি হারিয়ে বসে আছেন।
সার্ত বেনি লেভিকে বলেছিলেন, পুরস্কার কমিটি লেখকের সেই বইটা বেছে নেয় যেখানে লেখকের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারপর সেটাকে পুরস্কার দিয়ে লেখকের কফিনে পুঁতে দেয় শেষ পেরেক।
একশো বছর হয়ে গেল, সাহিত্য সমাজকে আর প্রভাবিত করতে পারে না। সফটঅয়্যার-বিনোদনের যুগে তার অবস্থা সুকিয়া স্ট্রিটের দোতলার লেটারপ্রেস। সাহিত্য-পুরস্কার কথাটারও তাই মানে হয় না কোনও। তবু আমি যদি “বউ নেই শ্বশুরবাড়ি যাই পূর্বের সম্বন্ধে”, তবে ওই বাচ্চা ছেলেটা-মেয়েটাকে তাদের প্রথম বা দ্বিতীয় বইয়ের জন্যে পুরস্কার দিই না কেন? দিয়ে দেখি গলার মালা নিয়ে আর কী গুলদস্তা সে তৈরি করতে পারে, নাকি মালাটি হয়ে ওঠে মালা-ডি? আর তা-নয়তো মরা বডিতে কোরামিন মারো, সাহিত্য অ্যাওয়ার্ড-এর নাম পালটে সাহিত্যগ্র্যাচুইটি রেখে দাও…
যত্তো ঝামেলি!
( চলতিছে… )
loading...
loading...
এক কথায় অসাধারণ!
ভাবছি, অামি ঠিক কোন শ্রেণির কবি!
আমিও কী তবে মৃত নক্ষত্র!
–
শুভকামনা জানবেন, হে…..
loading...
অসাধারণ প্রিয় চন্দন দা। লা-জবাব।
loading...