এ বছরে যেন বরষা খুব বেশী রকমের এগিয়ে এলো। ফি বছরে এমনটা হয়নি। দিন কি দ্রুত বদলে যাচ্ছে !! ঋতুকাল বলে কি আর কিছু অবশিষ্ট আছে ?
বলা নেই কওয়া নেই, ঝরঝরিয়ে মুষলধারে বর্ষণ !! তাও আবার ফাল্গুন মাসে। আনমনা হয়ে

শুরু হয়েছে নষ্টামি
দ্রুত পায়ে খুনের সঞ্চালন
আপাদমস্তক। এক নিমেষেই মস্তিস্ক বিকৃত
সর্বাঙ্গে সর্বশক্তি সঞ্চারিত
নয়ন মাঝে পিশাচ চাহনি
আত্মাস্পরে নারকীয় ভর। কি ভয়াল বুভুক্ষের রূপ
কতকালের দূর্ভিক্ষ
দীর্ঘকায় জিহ্বা, বিষাক্ত লালা
মানবতা নিস্তব্ধ
শুরু হলো নষ্টামি। বিষাক্ত নখের আঁচড়, ক্ষতবিক্ষত
সারা দেহে

সখি, আমি জানতাম না যে এই কার্তিকেও গঙ্গাস্রোত বয়ে যায়। তোমার স্রোত দেখার আশায় নীড় বেঁধেছিলাম গঙ্গারই কিনারায়। তুমি সর্বভুক গঙ্গানারী, তোমার স্রোতে ভেঙ্গে নিয়ে আমার নীড়, আমার বাড়ি। কি দোষ ছিলো সখি !! আমি দিয়েছিলাম আমারই প্রেমভরা বক্ষ আর তুমি সেই

আমি স্বপ্ন লালন করি
আবার আসবে ভেবে
ধরে রাখি মস্তিস্কের কোঠায়।
দিন বয়ে যায় দ্রুত
দীর্ঘ হয় সূর্যের ছায়া
যেন এক নারী বিছায় আঁচল
ভিজে এলো চুল আকাশ আড়াল
করে নামায় আঁধার। বাতাস ছড়ায় দীর্ঘশ্বাস
রাত এলেই স্বপ্নেরা ভীড় করে
দূরে কোথাও বাজে একতারা
উদাস বাউল এক ভাঙ্গা গলায়
সুর ভাঁজে। ছড়ায় হাহাকার
আমি

ঘুমের মধ্যে কড়া নাড়ার শব্দ
কে আমাকে এমন করে ডাকে
গোটা পাড়া নিঃসাড়, নিস্তব্ধ
সম্পূর্ণিমা স্বপ্নে বিঁধে থাকে জ্যোৎস্নার কাছে রাত্রি সমর্পিতা
মহার্ণবে অলৌকিক আল্পনা
কল্পনা নয় শিল্পের আশ্রিতা
অন্ধ বনে নিঃশর্ত মুর্চ্ছনা শরীর জুড়ে রূপোলী বৈভবে
নিশুতি রাত বিমুগ্ধ, বিষ্মিত
নগ্নিকারা

কেবলই পিছিয়ে যায় নীলিমারা দূর থেকে দূরে
গ্যালাক্সির ঘুরপথে পথ খোঁজে অমোঘ কুয়াশা
অসহ্য বদ্বীপ ডাকে ব্যর্থতাকে শূন্য অন্তঃপুরে
পোকা- মাকড়ের চোখে ছায়া ফেলে নীরক্ত পূর্বাশা ঈষদুষ্ণ অন্ধকারে বৃষ্টি ঝরে নিরর্থক মন্ত্রে
চন্দনের বনে ব্যর্থ গবেষণা ফেলে দীর্ঘশ্বাস
আমিষের সারবস্তু পাক খায়

কবে দেখেছি ফুল মনে নেই
কবে শুনেছি গান ভুলে গেছি
মনের ভেতরে এখনও ভাসে
মতিহার। সবুজ ঘাসের ডগায়
চোখ রেখে কেটেছে সময়।
ধীর পায়ে নেমেছে সন্ধ্যা
আঁধারে পেয়েছে অন্যের শরীর। এখন সকাল হয় সময় ঘোড়দৌড়ে
দ্রুত আসে রাত। স্বপ্নে আলোকিত
হয় না প্রহর প্রলম্বিত। মাঝে

সেই যে দেখা হয়েছিলো মেলায়
কি তুমুল ভিড় ছিলো
ধূলোয় চোখমুখ সমস্ত শরীর
ছিলো একাকার। পাশাপাশি একেবারে গা ঘেঁষে
চলেছিলাম আমরা
শরীরের ভিতর একটা
আদিম শিহরণ তুলে। পাতায় কান রেখে শুনেছি বৃক্ষের কথা
তার বেড়ে ওঠা আহার নিদ্রা
সব। গাছেরা উদার হয়
অহংকার থাকে না কোন। বাতাসে শরীর ডুবিয়ে
বাড়ায় শাখা প্রশাখা
কাকেরা শাখায় ঘর বাঁধে
পরম বিশ্বাসে-
তার শেকড়

আমার কথায় একদিন তুমি সাগর
মন্থন করে আনতে পারতে অমৃত
ঝাঁপ দিতে পারতে আগুনে।
তোমার যাত্রা সমুদ্রের দিকে
তুমি চেয়েছো পূর্ণতা। রাতের আকাশ থেকে প্রতিদিন
শব্দ ভেসে আসে, আমি আপ্লুত হই
নক্ষত্রেরা চুপি চুপি কথা বলে
বলে রাতের মোহনীয় রূপের কথা। আমি নক্ষত্রের কথা শুনে ঘুমের মধ্যে
হাঁটতে থাকি –
হাঁটতে হাঁটতে

[একসময় খোলা পোস্ট কার্ডে চিঠি পাঠানো হতো, দু পাশে ছোট ছোট করে লিখে ভরে ফেলা হতো হলুদ ছোট্ট একটা কার্ড। জানিনা আজ আর কেউ এমন করে খুলে মনের কথা লিখেন কিনা। খোলা চিঠি একসময় খামের ভিতর বন্দি হলো, এরপর মোবাইলের এসএমএস

কখনো দু’চোখ ভরে দেখেছো
শ্রাবণের বৃষ্টি ? দেখেছো কিভাবে মেঘের
বুকের ভেতর লুকিয়ে থাকে
জল। কখনো দেখেছো
রাতের আকাশ ? ভোরের চুমুতে কিভাবে
লুকায় স্বপ্ন, বৃক্ষ বিলায়
প্রেম। রাতের দীর্ঘ
খোয়াবের পর এসো বুকের
দরজা খুলে খুঁজি
ফুল- মাটি- শস্য। কখনো দু’চোখ ভরে দেখেছো
শ্রাবণের বৃষ্টি ?

আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর,
আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ,
শোঁ শোঁ করছে হাওয়া।
আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন
একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে। কেউ চিনতে পারেনি আমাকে,
ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকে
আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহকুমা স্টেশনে

হঠাৎ বৃষ্টি উড়ে এসে
ভেজালো চুল
কোন কিছু না বুঝেই
ফেরালাম চোখ;
দেখি দাঁড়িয়ে আছো তুমি
অপলক দেখছো আমায় –
দৃষ্টিতে লোভ নেই
আছে বিষণ্ণতা।
ওষ্ঠরেখায় নেই কৌতুক
জানি তুমি ভুলে গেছো
বর্ষা এলে যেমন
সবাই ভুলে যায় চৈত্রকে। বৃষ্টির জন্য আকুল ছিলে তুমি
বৃষ্টি এলো।
সবুজের জন্য আকুল হলে তুমি
বসন্ত এলো।
তোমার জন্য আকুল হলাম

তুমি যে ভূখন্ডের সাজানো ঘরে বসে
ভালোবাসার ঠোঁটে চুমু খাচ্ছো
আমি তারই সীমান্তে এসে পৌঁছেছি আজ সকালে। এখন মধ্য প্রহর
মাথার উপর সুকান্ত সূর্য সোনা রং তার আলো,
কানে সমুদ্র গর্জন, গাংচিল পাখার মায়াবী কথন। পাঁজরের হাড় যেনো সেতারের চিকন তার
সেই তারে তোমারি বিরহের সুর বাজে বার