রাত বাড়ছে, বিদঘুটে অন্ধকার, আলোর চুকেছে পাঠ;
মাস্টার, ও মাস্টার—
তোমার উপরে ফিটফাট, ভিতরে সদরঘাট।
হা হা হা
বাতাসে আসে বিদ্রুপের ধ্বনি,
অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে; চারদিকে শব্দের খিল খিলানি। ভেসে উঠে এক নারীর ছায়া
পিছনে তাড়া করে বেড়ায় অতীত স্মৃতি,
কণ্ঠটি বড়ই চেনা
হাতছানি দেয় নিষ্ঠুর নিয়তি।
সেই যে,

একসময় ভারতের মাটিতে পা রেখেছিলাম, ১৪০০ বঙ্গাব্দ। তখন বৈশাখমাস। বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দালাল মারফত অতি কষ্টে সীমান্ত পেরিয়ে বনগাঁ রেলস্টেশন পৌঁছেছিলাম। আমার সাথে ছিল, আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ওর দুই বোন। যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল, জীবনটাকে একটু পরিবর্তন

১
এক বর্ষায় সব পালটি খেয়ে গেছে হুতাশন।
পাতায় পাতায় এমন প্রফুল্ল গাঁট
সমস্ত পাখির মুখ খুলে গিয়ে;
নারকোলডাঁটির দুপাশে ঘন দুর্গাভুরু তোলা,
তাতে জলকুহেলি।
এমন নবরত্ন কারাদণ্ড সবুজ চেপে ধরেছে

যাকে হারিয়েছো ভেবে এত কান্না
তুমি তো জানোনা তারও মনে
ঢুকে বসে আছে কিছু গভীর অন্ধকার
তুমি দুই হাতে সরাচ্ছো শুকনো পাতা
অরন্যের বুক থেকে চাইছো বইয়ে দিতে ঝর্ণা
অন্যদিকে সেও করছে পরিখা খনন
বন্দুকের গুলিগুলো পুরনো হয়ে আসে তারও
অথচ তোমার কথা ভাবলেই বৃষ্টি মনে আসে
মনে উঠে আসে ছবি ছেলেবেলার

আজকাল আমার, আমাকেই মনে পড়ে খুব-
আর মনে পড়ে সেই সড়ক, যে তার নাম ভুলে
গেছে অনেক আগেই। সবুজ শুশ্রূষা পেয়ে সেরে
উঠেছে যে নগর, তার চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে একাকী
বেহালা বাজায় যে বিবাগী বাউল,মনে পড়ে তার
চাহনীর দূরমালা,কীভাবে স্পর্শ করে আকাশের মেঘ। আজকাল নিজের নাম লিখে বর্ণিল অক্ষরে সাজাই তার
চারপাশ।

আজকাল নিজের থেকে নিজেই যখন পালিয়ে বেড়াই
তখন দেখি হাঁচি লুকানোর মত জায়গাও নেই
অথচ সবকিছু আগে যেমন ছিল, এখনো সেই! তবুও শুন্যতা দিয়ে শুন্যতা ভরাই
তেলাপোকার মতো নিজেকে সান্ত্বনা দিই
নিজেকে ছাড়া আমি আর কাকে ডরাই! তথাপি মাঝে-মধ্যে কবিতায় জেগে উঠি
রাতদুপুরে নিজেই চেপে ধরি নিজের টুটি!
তখন অভিধানের সব অপয়া

তুই কি হবি শান্তির পায়রা
বসবি এসে মনের শাখে
দিবি সাড়া সকাল সাঝে
তুই কি পায়রা আমার ডাকে? মনের বাড়ী বিষণ্ণতা
উড়ে নিত্যা বৈরী হাওয়া
একটু শান্তি আসবি নিয়ে
এটুক ছিল আমার চাওয়া। হবি নাকি পায়রা আমার
মনের শাখে খাবি কি দোল
তোর ডানাতে নিয়ে উড়বি
হেথায় সেথায় ভুলে বেভোল? সাদা পায়রা

একটি রণ বাহিনীর গোড়াপত্তন চলছে। শুরু হয়ে গেছে যাবতীয় কলা কৌশল আয়ত্ত করন প্রক্রিয়া। অচিরেই মাঠে নামবে সোমত্ত জোয়ান।যাদের অন্তরে দীর্ঘকালের লালিত বাসনা, রক্তে লহরিত সুর, তীব্র তারানা; বলয়ের সম্মোহিত ছন্দে তারা উঠে আসছে মহান দর্পণে! পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাঞ্জল শ্লোগানে। সমুচ্চারে। শৌর্যের গানে।
যাবত কালের নিবিষ্ট

সন্ধ্যায় ডালিমদানার সাক্ষাতে সেসব হাসছে
কবিতার কাগজে মোড়ানো শীতল শিরোনাম
আর তুমি স্থির জমে থাকা রক্তজবা ব্যঞ্জনায়
নাকফুলের অভিজ্ঞানে পড়েই চলেছ। কাউতালি শব্দ কখন ট্রেন হয়ে ছুটে যাচ্ছে
ঈশ্বরদী জংশন-পথের গায়ে ভাঙাচোরা গ্রাম-
শাদাকালো টিভির এন্টেনা ঘোরানো হাত
সুতোর ববিনে ঘুড়ি উড়তে থাকা সহজিয়া দিন
বোধহয় নিজের যত্ন ভুলে সন্তপ্তয় চেপে বসেছ
তুমি

মা, ওরা এখনো টিকে আছে যত্রতত্র, ভালো মানুষের বেশে-
সুযোগ পেলে তোমার সর্বনাশ করার স্বপ্ন দেখে নীরবে নিভৃতে
এখনো বেহায়ার মতো সুযোগ বুঝে তোমার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ে
‘‘এমন দেশে তো এমনই ঘটনা ঘটবে! জানে, সর্বজনেই জানে।’’ তোমার আলো-বাতাস কি তারা ভোগ করছেনা কভু!
তোমার বুকের দুগ্ধ

মনের যত দৌড়
আকাশ সীমা-
রঙ ছুঁয়ে যায়
মাটির কায়া; মেঘের ঝড় বৃষ্টি
চোখে নেই মায়া!
বট বৃক্ষ, বাঁশ
চাটাই বুঝে না-
কার কেমন ছায়া; রঙধনু জোছনা রাত
প্রেম যমুনায়
আসে না চাঁদ-
চাঁদের গায়ে রঙিন বাড়ি
শূন্য মনে কত আড়ি;
কার কি এসে যায়-
মাটির স্পর্শ ছোঁয়া; ১৭ শ্রাবণ ১৪২৯, ০১ আগস্ট ২৩

ক্রমশ আইসিইউ তে চলে যাচ্ছে গোটা বাংলাদেশ!
দীর্ঘতর সন্ধ্যায় গালে হাত দিয়ে বসে আছেন মা,
একটি গামছা দিয়ে জড়িয়ে ছোটবোন’টিকে নিয়ে-
হাসপাতালের দিকে ছুটছেন অগ্রজ!
এম্বুলেন্স ছুটছে,
সাইরেন বাজানো ভুলে গিয়ে শুধুই
আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন চালক ;
ঠাঁই নাই – ঠাঁই নাই
ক্লিনিকের করিডোরে কাঁদছে বিষণ্ণ কাক! মৃত্যু

বৃত্তের বাইরে আসতে কড়িকাঠ পুড়িয়েছি
ঘোলা করেছি কতো কতো জল
পরিণামে কিছুমাত্রও ভয় পাইনি
তবুও ক্ষণে ক্ষণে বেড়েছে কেবল সাধের অনল! কবিতার হাত ধরে চায়ের স্টলে উড়িয়েছি ঘুড়ি
তবুও ধোঁয়ার আস্তর ভেদ করে হয়েছে মন চুরি
দিনশেষে দেখি ঝিঁঝিঁ ডাকে ভারিভুরি! তবুও পাইনি কাঁহাতক বৃত্তরেখার নাগাল
তবে কি আর সবার মতো

নতুন করে প্রমান হলো
আমি তোমাদের কেউ নই, আগেও ছিলাম না
এখনো নই কখনো হবো কি-না; জানি না!
যেভাবে জ্যোৎস্না পেরুতে পারে না রাত
অথবা গোধূলি অমানিশার নদীও তো বয় শব্দ, রাশি রাশি পদাবলী
তবুও নদী তো কবি নয়,
কবি – নিরবধি
বয়ে বেড়ায় খরস্রোতা নদী! অন্তর্জাল
কলকল ধ্বনি-

স্বর্ণচ্ছায়া দুপুর ম্লান হতে বিকেলদৃশ্য নেমে এল
অপারেশন টেবিলে শোয়ানো জেব্রাদের দৌড়
ধূলোয় ডুবে যাচ্ছে সেসব পাখিদের প্রান্ত-গাছ
কোনো এককালে সকালের রোদ এনে তুলে দেয়
দূর ব্যঞ্জনার মুখোমুখি সমুদ্র ভাসানো কুয়াশা-
ডুমুরফুলের নিচে অবধারিত এক বসন্ত;
তোমার হাতের বনপিরিচে বিস্কুট হয়ে হাসছে
জলজ্যান্ত হলুদ গমের খেত, দূরের গান ছড়ায়া-
হাঁটতে থাকে সন্ধ্যামণির