আঠাশ (ক)
বাবার ঘরে ঢুকতেই হাতে একখানা থিন বিস্কুট আর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ইশারা। চাঁদ দেখল, তর্জনীর সমান্তরালে বাবার দু’গালে জলের দুটো সোঁতা। মা গাইছে “যে জানে না পথ কাঁদাও তারে”। কোন পথ? ফস ক’রে মনে পড়ে, গত বছর রেশনবাড়ির রথের মেলাতে সে
আরশি কদম আলীর ছোট মেয়ে। তিনজনের মধ্যে তৃতীয়। বয়স মাত্র পাঁচ বছর। বলা চলে একটি সুবাসিত ফুলের কুঁড়ি। মুখে গুটিকয়েক দাঁত উঁকি দিয়েছে। সেই দাঁত মেলে যখন হাসে তখন কদমের ঘর আলোকিত হয়ে উঠে। আর যখন কাঁদে তখন আষাঢ়ে বৃষ্টির মতো আঁধার নেমে আসে।
আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন না আমাদের খেজুরতলার লোকজন বেশ কুকুরভক্ত। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অঞ্চলে কুকুর সংখ্যা লক্ষনীয় এবং রাস্তার পাশে তাদের বিষ্ঠাও সমান দর্শনীয়। মানুষের আদরে এরা খেয়ে-দেয়ে বেশ হৃষ্ট-পুষ্ট, চমৎকার লম্ফ-ঝম্প দিতে পারে। দিনের বেলা আরামসে ঘুমায় আর রাতের বেলা গলা ছেড়ে ঘেউ
তেইশ
“হৌত লেখা কপালে আর মৌত লেখা পা’য়
যার যেখানে মৃত্যু আছে, পায়ে হেঁটে যায়
ধরো, এখুনি আমার মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মিত্তু হল। আমি তো নিজিই পায়ে হেঁটে এয়েছিলাম তোমার বাড়ি। আসিনিকো?
এবার ধরো, প’ড়ে যেতে দেখে তুমি ছুট্টে এসে আমার মাথাটা কোলে তুলে নিলে। হাঁ
ক’দিন ধরেই মা’র জ্বর। সারাদিন জ্বরকে সামাল দেন, রাতে হেরে যান। শরীরের তাপ বাড়ে। বিছনায় নির্জীব হয়ে পড়ে থাকেন। চোখ সামান্য খোলা, চোখের মণি মাঝে মাঝে চঞ্চল হয়ে ওঠে। কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুমোন। না, ঘুমোন না। মা ঘুম আর জাগরণের মাঝে পেণ্ডুলামের মত দোল খান।
কুড়ি
রাইটার্স বিল্ডিংয়ে হইচই, আলোড়ন, তোলপাড়। একে তো সরকারি অস্ত্র খোয়া গেল, তারপর বাঘের হাতে বন্দুক, সে গুলিও চালাচ্ছে। রোবটরা যদি রাইফেলের জোরে একটা বিদ্রোহমতো ক’রে গোসাবা বা কুলতলির দখল নিয়ে বসে? যুদ্ধের বাজারে তখন এক্সট্রা গৃহযুদ্ধের চাপ; জিনিসটায় রাজনৈতিক রঙও লেগে যাবে, পশ্চিমবঙ্গে
সতেরো
নারকোলগাছের গাব্ড়ো দিয়ে ব্যাট বানিয়ে ক্রিকেট চলছিল উঠোনে, হঠাৎ খেলা ভেঙে শুরু শিশুকিশোর নাচ। সঙ্গে গান এক লাইনের — আজ মাংসো খাবো। আআজ মাংসো খাবো। তখন নির্মল স্তব্ধ ও সুচিন্তিতভাবে বাজারের ব্যাগ তুলে দিচ্ছে মায়ার হাতে।
কলোনির কোনও ঘরে মাংস রান্না হলে আশপাশের বাড়িগুলোর
পনেরো
— ক্রেস্টেড সারপেন্ট ঈগল সম্পর্কে কিছু জানা আছে?
— কেষ্টর শালা কি পাগল? না, বলতে পারব না।
— বাদ দে, বাংলাই ভালো। মোট একুশ জাতের কেশরওলা সাপখেকো ঈগল হয়। এদের মুন্ডুটা বড়, মাথায় পেছনে ব্যাকব্রাশ করা চুলের মতো একগোছা ঘন পালক আর চোখে কালো মণির
এক ছিলো টোনা আর এক ছিলো টুনি। একদিন টোনা আহ্লাদ করে টুনিকে বলে,
— টুনি, ও টুনিইই
টুনি হাই তুলে,
— হ্যা, বলো।
— আমার খুব ভাপা পিঠা খেতে ইচ্ছে করছে। খুব ইচ্ছে করছে।
টুনি রাগে চোখ পাকায়,
— তোমার কি খেতে
গল্প|
১টি মন্তব্য
| মন্তব্য বন্ধ রাখা আছে
|
৯৪ বার দেখা
| ১০৫২ শব্দ ১টি ছবি
বারো
মাঠের নাম রঘুনাথ। রেল কোম্পানির জমি, রঘুনাথ নামের ঝাড়েবংশে একা এক বিহারি গ্যাংম্যান তার কোণে ঝুপড়ি তুলেছিল। সকালে উঠে লোটা হাতে চলে যেত বাতিল কেবিনের কাছে গরুভাগাড়ের দিকে। তারপর প্রান্তরের পাশের ডোবায় ডুবকি লাগিয়ে স্টেশান-লাগোয়া হোটেলে রুটিতরকারি খেয়ে ডিউটিতে। রাতে তার তাঁবুর হারিকেন-আলো অন্ধকারের
সাত
ননীবালা উঠোনে ব’সে খেজুরপাতার পাটি বুনতে বুনতে ঘরের দিকে মুখ বাড়াল : ও ভাই, ও দিদি, গলার আওয়াজ পাচ্ছি না যে? না পড়লি কিন্তু চাকরি পাবা না, বাকরি পাবা না, শেষে মস্সোবাসার মুখ্যু জামাই হয়ে থাকতি হবে।
শুধু মহেশ্বরবাসা কেন, ননীবালার আমলে পুব-পাকিস্তানে অনেক পুরুষই
অনেক হয়েছে। আর না।
সেই পরশু রাত থেকে। এক-দুই-পাঁচ-দশবার নয়। তিরাশি বার ! হ্যাঁ, তিরাশিবার ঈশিতার নাম্বারে ডায়াল করেও কোনো রেসপন্স পায় নি অলক।
ওপাশ থেকে একটা নারীকণ্ঠ শোনার অপেক্ষায় এপাশে একটা যান্ত্রিক শব্দ বেজেই যাচ্ছে। সেই পরশু রাত থেকে। বাজছে তো বাজছেই।
ওপাশে কেউ ফোন তুলছে
গল্প|
২ টি মন্তব্য
| মন্তব্য বন্ধ রাখা আছে
|
৭১ বার দেখা
| ১৬১১ শব্দ