আমরা আল্লাহর গুনাহগার বান্দা। গুনাহ করে ফেলার পর, মহান আল্লাহ আমাদেরকে দয়া করে সেসব গুনাহ মাফ করে নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আজকে গুনাহ মাফের ২টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিঃ
০১) নামায আমাদের গুনাহকে মিটিয়ে দেয়। তাই ফরয নামাযের পাশাপাশি বেশী করে নফল নামায পড়ুন। এই সংক্রান্ত হাদীছটি হচ্ছেঃ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জনৈক মহিলাকে চুম্বন করে বসে। পরে সে আল্লাহর রাসূল (ছা) এর নিকট এসে বিষয়টি তাঁর গোচরীভূত করে। তখন আল্লাহ তায়া’লা আয়াত নাযিল করেনঃ “দিনের দু’প্রান্তে- সকাল ও সন্ধ্যায় এবং রাতের প্রথম অংশে সালাত কায়েম করো। নিশ্চয়ই ভালো কাজ পাপাচারকে মিটিয়ে দেয়” – (হূদ ১১/১১৪)। লোকটি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! একি শুধু আমার বেলায়? আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেনঃ আমার সকল উম্মতের জন্যই।
[বুখারী ৫২৬, ৪৬৮৭ ।। মুসলিম ১৪০৮ ।। আহমাদ ৩৬৫৩]
০২) তাওবাহর মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়। এমনকি পৃথিবী পরিমান গুনাহও ক্ষমা করা হবে, যদি শিরক না করেন। এই সংক্রান্ত হাদীছটি হলোঃ
রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ
‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান! যতদিন তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখবে আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন। আমি কারো পরওয়া করি না। আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্তও পৌঁছে অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। আমি ক্ষমা করার ব্যাপারে কারও পরওয়া করি না। আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার দরবারে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কোন শরীক না করে আমার সামনে আস, আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব’।
[তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩৩৬।]
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
আমরা অনেকেই একনিষ্ঠভাবে তাওবাহ করতে পারি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি সাজেশান দিবো। শেষ রাতে বা দিনের নিরিবিলি সময়ে একটি নিরিবিলি স্থান বেছে নিন। খুব সুন্দর করে ওজু করুন। পরিস্কার কাপড় পড়ে ২ রাকাত নফল (তাওবাহর) ছালাতের নিয়্যত করুন (নিয়্যত মানে নামায পড়ার ইচ্ছা পোষণ করা, মুখে কিছুই বলতে হবে না)। গভীর মনোযোগে নিজের গুনাহর জন্যে অনুতপ্ত হৃদয়ে ২ রাকাত নামাজ ধীরে সুস্থে ও সময় নিয়ে আদায় করুন। নামায শেষে দুরুদ পড়ুন (দোয়া কবুলের জন্যে দুরুদ পড়া জরুরী)। কিছুক্ষন তাসবীহ পড়ুন (ছোবহ্বান আল্লাহ, আলহ্বামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার… ইত্যাদি)। তারপর দু’হাত তুলুন, প্রথমে আল্লাহর কাছে অকুণ্ঠচিত্তে আপনার গুনাহর স্বীকৃতি দিন, মাথা নত করে স্বীকার করুন সেসব গুনাহগুলি, যেসব গুনাহ আপনি করেছেন। অনুতপ্ত হৃদয়ে প্রাণখুলে কাঁদুন, চোখের পানি ফেলুন (সেই চোখ জাহান্নামে যাবে না যে আল্লাহর ভয়ে কেঁদেছে)। আল্লাহর প্রশংসা করুন, তিনি দয়াবান সেটি উল্লেখ করুন, তিনি উৎকৃষ্ট আর আপনি নিকৃষ্ট অপরাধী স্বীকার করুন। দৃঢ়চিত্ত হোন যে, এধরনের গুনাহ আর করবেন না। আল্লাহর কাছে অতীতের সকল পাপের জন্যে ক্ষমা চান। কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চান। প্রাণখুলে কাঁদুন, মনে রাখবেন আল্লাহ আপনাকে দেখছেন। ইন শা আল্লাহ, আশা করা যায়, তিনি আপনাকে ক্ষমা করবেন।
তাওবাহর সময় বিশেষভাবে এই দু’আটি পড়তে পারেনঃ
‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’য়ফু আন্নি’।
অর্থঃ ‘‘হে আল্লাহ! তুমি তো ক্ষমার আধার, আর ক্ষমা করাকে তুমি ভালবাস। কাজেই তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিযী : ৩৫১৩)
loading...
loading...
‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’য়ফু আন্নি’।
সুবহান আল্লাহ। আল্লাহতাআলা বান্দাদের জন্য যথেষ্ঠ সুযোগ রেখেছেন। আমীন।
loading...
আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুন। আমীন।
loading...
অনেক সুন্দর করে সাজিযে লিখেছেন,
শুভকামনা থাকলো।
loading...
loading...