মাসুদা ভাট্টি”!!!!!
সাংবাদিক মইনুল সর্বসমক্ষে মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রাহীনা বলেছেন- কেন বলেছেন ? কি জন্য বলেছেন? তা জানার দরকার নেই। একজন পুরুষ একজন মহিলাকে চরিত্রাহীনা বলেছেন ? -তাতেই পুরো সমাজ ক্ষেপে উঠেছেন? সাংবাদিক চুপিচুপি ক্ষমা চেয়েছেন কিন্তু তাতে বুদ্ধিজীবীদের কিছু যায় আসে না। তাঁরা ব্যাপারটাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মজা নিতে চান; তাই প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার প্রকট আবেদন রাখেন!
আচ্ছা একটা কথা বলুন তো- ওই সাংবাদিক ভাট্টি কে লুকিয়ে শ্লীলতাহানি করতেন; ভাট্টি যদি না মুখ খুলতেন তাহলে পুরুষ সাংবাদিকটার তহরম মহরম দেখার মতো থাকত, খবরটা উল্টো প্রচারিত হতো?- যেটা মধ্যবিত্ত এবং গরিব মহিলাদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে!
অশ্লীল গালি আর গায়ে হাত বশেদের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কটা মেয়ে আছে নিজেকে স্কুল কলেজ অফিস পেরিয়ে নিজেকে “ভার্জিন” রেখেছে দেখাতে পারবেন? আমাদের এইরকম অপমান লাথি লাথাজ গালি গালাজ খাওয়া—- নারীদের জীবনে নিত্যদিনের ঘটনা!
ভাট্টিকে পুরো সমাজের সামনে বলা হয়েছে- বলেই কি পুরুষদের টনক নড়েছে? না এর পিছনে পাবলিসিটি বা টিআর পি বাড়ানোর রাজনীতি চলছে। ভিতরের ব্যাপার তো সাধারণ মানুষের বুঝতে অনেক সময় লাগবে! তাছাড়া নেতা পলিটিক্যাল প্রেসার মিডিয়াগুলোকে চড়কের কাঁঠালগাছ বানিয়ে দিচ্ছে; প্রতি এক ঘন্টা অন্তর “বোমাফাটা” মশলাদার নিউজ চাই!
আমি নিজে লেখার জগতে এসে এইরকম “মশলা”র মুখোমুখি হয়ে দেখেছি। শিক্ষিত হোক আর মূর্খ পাবলিক হোক /জনতা র স্বভাব ন্যায় টা খুঁজে বের করা নয়? জলের গতিবেগ যেদিকে বেশী সেদিকেই ভেসে যাওয়া। এখানে “পাওয়ার” টাই মেন সুইচবোর্ড হিসেবে কাজ করে?
আমাকে নিয়েই পোষ্ট দেওয়া হয়েছিল -তখন নতুন লিখতে এসেছি – কেউ তেমন চেনেন না—আমি ভাবতে পারিনি মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত সম্প্রদায় যারা বুদ্ধিজীবি বলে পরিচিত তাঁরা নিজের সাথী কে বাঁচাতে বা তাঁর ভুল এড়াতে / তাঁর সম্মান উপরে তুলতে —এতটা নোংরা ভাষায় কথা বলতে পারে—?
আমার চোখ মুখ ঠোঁট শুকিয়ে গেছিল কিছু ক্ষণের জন্য। তারপর নিজেকে সামলে গায়ে মেখে নিতে বাধ্য হই। কারন আমি গরিব নতুন অচেনা মুখের সাধারণ লেখিকা? মাসুদা বা তসলিমা নাসরিন শ্রীজাত /মন্দাক্রান্তা নই।
আমার চোখ দিয়ে জল খুব কম বেরোয় কারন কি বলুন তো কষ্ট পেতে পেতে শুকিয়ে গেছে ? ছোটবেলা থেকে সমাজ যে কতটা জঘন্য নোংরা হতে পারে তা দেখতে দেখতে বড় হয়েছি? মা না থাকলে তাঁকে যেকোন দিক থেকে অপদস্ত করতে সমাজ ছাড়ে না—তারপর যদি হয় বাবা অসুস্থ!
আমার দিক থেকে বলব মাসুদা ভাট্টি র কাছে সাংবাদিক যদি ক্ষমা চান। তাহলে উনার ভালো মানসিকতার ই পরিচয় পাওয়া যাবে। যদি নাও দোষ থাকে তবুও একজন নারীকে সর্বত্র সম্মান দেওয়া উচিত। শুধুমাত্র ভাট্টি নয় সবার ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য। নারীদের বিশেষ করে মধ্যবিত্ত গরিব নারীদের জীবন কুকুরের মতো! এদের চরিত্রহীনা বলতে হয় না পরিবেশের চাপে সমাজ এদের চরিত্রাহীনা বানিয়ে দেয়। লোকলজ্জার ভয়ে চুপচাপ সহ্য করে যায়।
এবারে মূল কথায় আসা যাক:
১. মিডিয়ার অহেতুক লাফালাফি বন্ধ করা হোক।
২. সাংবাদিক প্রকাশ্যে ক্ষমা চাক আর ভাট্টি যাই থাকুক না কেন উনার নামে কুৎসা বন্ধ হোক।
৩. তসলিমা নাসরিন সর্বদা ই উনার রাগ টাই প্রকাশ করেন। স্বাভাবিক উনার অবস্থায় থাকলে যে কেউ এরকম করতেন। ভাট্টির উচিত উনার কথায় কিছু মনে না করা।
৪. প্রকৃতপক্ষে নারী সমাজের মর্যাদা দিন ভালোবাসুন। সম্মানের নামে টরচার করবেন না
৫. আমি নিজে ভুক্তভোগী। তাই যন্ত্রণাটা ঠিক কোথায় হয় সবার সামনে অপমান করলে… প্রচণ্ডভাবে অনুভব করতে পারি।
________________
অরুণিমা মন্ডল দাস
কাকদ্বীপ, পশ্চিমবঙ্গ।
loading...
loading...
প্রকৃতপক্ষে নারী সমাজের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর বদল এবং মর্যাদা দিতে জানতে হবে। মানুষ হিসেবে সম্মান ভালোবাসা দিতে হবে। সম্মানের নামে টরচার নয়।
___ যা ঘটছে দুঃখজনক।
loading...
আমি নারীবাদী পুরুষবাদী কোনটাই নই। আমি মানুষবাদী। বাংলাদেশে হঠাৎ গজিয়ে উঠা এই ঘটনাকে কোন ভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। যা কিছু ঘটছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ঘটছে। চমকপ্রদ সব ঘটনাই সেখানে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। একনায়কতন্ত্রের যে হোলিখেলা চলছে সেটা ভারতে চললে যুক্ত ভারতবাসী অনেক আগেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো।
loading...
নারী স্বাধীনতা বলি আর বাক্ অথবা চলার স্বাধীনতা বলি; আমরা যেন আমাদের কথা বলতে পারি। আমরা সম্মান চাই।
loading...
আমি যা বলতে চেয়েছিলাম, তা সম্মানিত সৌমিত্র দাদা বলেছেন। সৌমিত্র দাদাকে অজস্র ধন্যবাদ। আর একটা কথা না বললে হয় না। সেটা হলো, সেদিন যদি সম্মানিত মঈনুল সাহেবকে সরাসরি কেউ জিজ্ঞেস করতো যে, বলুন তো সাহেব 'চরিত্রহীন' কাকে বলে? আর চরিত্রহীন কত প্রকার ও কী কী?
তাহলেই সম্মানিত মঈনুল সাহেব হয়ত থমকে যেত।
কিন্তু তার আর কেউ জিজ্ঞেস করেনি । দুঃখ শুধু এখানেই রয়ে গেল।
loading...