আজ আরশে আসেন মোদের নবী কামলীওয়ালা

আজ আরশে আসেন মোদের নবী কমলীওয়ালা

আসিছেন হাবীবে খোদা, আরশ পাকে তাই উঠেছে শোর,
চাঁদ পিয়াসে ছুটে’ আসে আকাশ- পানে যেমন চকোর,
কোকিল যেমন গেয়ে উঠে ফাগুম আসার আভাস পেয়ে,
তেমনি করে হরষিত ফেরেশতা সব উঠলো গেয়ে,-
দেখ আজ আরশে আসেন মোদের নবী কামলীওয়ালা
হের সেই খুশীতে চাঁদ- সুরুজ আজ হল দ্বিগুন আলা।।

ফকির দরবেশ আউলিয়া যাঁরে
ধ্যানে জ্ঞানে ধরতে নারে,
যাঁর মহিমা বুঝতে পারে
এক সে আল্লাহতালা।।

বারেক মুখে নিলে যাঁহার নাম
চিরতরে হয় দোযখ হারাম,
পাপীর তরে দস্তে যাঁহার
কাওসারের পেয়ালা।।

মিম হরফ না থাকলে যে আহাদ
নামে মাখা যার শিরীন শহদ,
নিখিল প্রেমাস্পদ আমার মোহাম্মদ
ত্রিভুবন উজালা।।
[নজরুল]

আজ পবিত্র মে’রাজ রজনী।
মে’রাজ আরবী শব্দ, বাংলায় এর শাব্দিক অর্থ করা যায় ঊর্ধ্বারোহণ। ব্যাপকঅর্থে মে’রাজ বলতে বুঝায় সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন ও ধনুক কিংবা তার চেয়ে কম দূরত্ব পরিমাণ আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য পর্যন্ত ভ্রমণ।

পারিভাষিকভাবে নবুওয়াত প্রকাশের একাদশ সালের ২৭ রজবের রাতের শেষ প্রহরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) হযরত জিব্রাঈলের (আ.) সঙ্গে আল্লাহর নির্দেশে ও তাঁর খাস রহমতে বায়তুল্লাহ হতে বায়তুল মুক্বাদ্দাস পর্যন্ত ‘বোরাক্বে’ ভ্রমণ, অতঃপর সেখান থেকে অলৌকিক সিঁড়ির মাধ্যমে সপ্ত আসমান পেরিয়ে আরশে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন ও পুনরায় বায়তুল মুক্বাদ্দাস হয়ে বোরাক্বে আরোহন করে প্রভাতের আগেই মক্কায় নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের ঘটনাকে মে’রাজ বলা হয়।

মে’রাজের পুরো ভ্রমনে জীবরাঈল আমীন রাসূলে করীমকে (দঃ) সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত সঙ্গ দিয়ে ছিলেন। এরপরে জীবরীল আমীনের আর যাওয়ার অনুমতি ছিল না। সিদরাতুল মুনতাহা অতিক্রম করলেই জীবরাঈলের পাখা পুড়ে যেত। সিদরাতুল মুনতাহা থেকে আরশ পর্যন্ত নবীজী একাই ভ্রমন করে আল্লাহর দীদার লাভ করেন। মে’রাজের পুরো ঘটনাই অলৌকিক এবং নবীজীর অনন্য বৈশিষ্টে সমুজ্জ্বল। মহানবীর (দঃ ) অনন্যসাধারণ মু’জিজা এবং রাসূলে করীমের শ্রেষ্ঠত্ত্বের অন্যতম প্রমান।

মানব ইতিহাসে এটা চরম আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা। তৎকালীন অবিশ্বাসীরা এই অনন্য সাধারণ ঘটনা প্রথমেই অস্বীকার করে। সিদ্দীকে আকবর হযরত আবু বাকার (রাদিআল্লাহু আনহু) শোনামাত্রই নিঃসংকোচে ও নিঃসন্দেহে এতে বিশ্বাস স্থাপন করেন।

অন্যান্য নবীগণ আল্লাহর দিদার লাভের প্রার্থী হয়েও ব্যর্থ হন। কিন্তু আমাদের নবীজীকে আল্লাহ নিমন্ত্রণ করে দেখা দেন। এটা উম্মত হিসেবে আমাদের জন্যও চরম সৌভাগ্যের বিষয়। এরাতে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বন্ধুকে সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ জ্ঞান দান করেন। বেহেশত দোজখ পরিদর্শন করান।

এ রাত্রিতে উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতিদিন ৫ ওয়াক্তের নামাজ ফরজ হয়। ফলে এটা খুবই ফজিলতের রাত্রি। অতএব এই রাত্রিতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আসকার, কুরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিবাভাগে রোজা রাখা ভাল।

মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এই মে’রাজের রজনীর ফজিলত ও বরকত দানে ধন্য করুন। এটাই প্রার্থনা।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

৮ টি মন্তব্য (লেখকের ৪টি) | ৩ জন মন্তব্যকারী

  1. দীলখুশ মিঞা : ২৪-০৪-২০১৭ | ১৮:১০ |

    লাইলাতুল মেরাজ
    উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ।

    লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী, যা সচরাচর শবে মেরাজ হিসাবে আখ্যায়িত হয়, হচ্ছে ইসলাম ধর্মমতে যে রাতে ইসলামের নবী মুহাম্মদের (সা.) ঐশ্বরিক উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং স্রষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন সেই রাত। মুসলমানরা এবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে এই রাতটি উদযাপন করেন। ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে, কেননা এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক অর্থাৎ (ফরজ) নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।

    ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী হযরত মুহাম্মদের (সাSmile নবুওয়াত প্রকাশের একাদশ বৎসরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাSmile প্রথমে কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় গমন করেন এবং সেখানে তিনি নবীদের জামায়াতে ইমামতি করেন। অতঃপর তিনি বোরাক বিশেষ বাহনে আসীন হয়ে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন। ঊর্ধ্বাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় তিনি আল্লাহ’র সাক্ষাৎ লাভ করেন। এই সফরে ফেরেশতা জিবরাইল তার সফরসঙ্গী ছিলেন।[১] কুরআন শরিফের সুরা বনি ইসরাঈল এর প্রথম আয়াতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে :

    “ سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنْ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّه هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ
    উচ্চারণ: সুবহানাল্লাজি আস্রা বিআবদিহি লাইলাম মিনাল মাসিজদিল হারামী ইলাল মাসিজদিল আকসা
    বঙ্গার্থ : “পবিত্র সেই মহান সত্তা, যিনি তাহার এক বান্দা (মুহাম্মদ)-কে মসজিদে হারাম (কাবাঘর) হইতে মসজিদে আকসা (বাইতুল মোকাদ্দাস) পর্যন্ত পরিভ্রমণ করাইয়াছেন। ইহার মধ্যে তাহাকে অসংখ্য নিদর্শনাবলী দেখান হইয়াছে।

    GD Star Rating
    loading...
    • দীলখুশ মিঞা : ২৪-০৪-২০১৭ | ১৮:১২ |

      পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

      মন্তব্যের ঘরে অতিরিক্ত কেদ্দারী করার জন্য দুঃখিত।

      GD Star Rating
      loading...
      • আনু আনোয়ার : ২৪-০৪-২০১৭ | ২১:৩১ |

        বহুদিন পরে কেদ্দারী শব্দটি শুনে মজা পেয়েছি।

        GD Star Rating
        loading...
    • আনু আনোয়ার : ২৪-০৪-২০১৭ | ২১:২৯ |

      প্রিয় মিঞা ভাই, সালাম ও খোশ আমদেদ।

      মন্তব্য দিয়ে পোস্টটি সমৃদ্ধ করেছেন। উদ্ধৃত আয়াত শরীফ আমি আমার পোস্টে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। পরে এডিট করে যোগ করে নেব এই ধরনের ভাবনা ছিল। আপনি তা যোগ করে পোস্টের ওজন বৃদ্ধি করেছেন। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই পোস্ট সমৃদ্ধ হয়। নিজেদের জ্ঞান অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি হয়।

      আমি তাই সব সময় এই ধরনের মন্তব্য প্রতিমন্তব্য ইতিবাচকভাবে দেখি। আমি চাই আমাদের শব্দনীড়ের পোস্টগুলো মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠুক।

      তাই দুঃখ প্রকাশ করার প্রশ্নই উঠে না। আপনার মন্তব্যে আমার পোস্ট হয়েছে সমৃদ্ধ আর আমি হয়েছি অনুপ্রানিত। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_smile.gif

      GD Star Rating
      loading...
  2. মোঃ খালিদ উমর : ২৪-০৪-২০১৭ | ১৮:২৭ |

    খোশ আমদেদ শব-ই-মেরাজ! https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...
  3. মুরুব্বী : ২৪-০৪-২০১৭ | ২১:৫১ |

    মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এই মে’রাজের রজনীর ফজিলত ও বরকত দানে ধন্য করুন। এটাই প্রার্থনা। আমীন।

    GD Star Rating
    loading...