‘আমার দেশের মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছাড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন…’
গুনগুন সুরে মন ক্ষণে ক্ষণে গেয়ে ওঠে। কখনো সে সুর আনমনা করে। মন চলে যায় সুদূর অতীতে – দুঃসহ দিন রাত্রির রক্ত রাঙ্গা ডায়রির পাতায়। সেই ডায়রির নাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ ………… বাংলাদেশ ! ‘আমার বাংলাদেশ পাখীর পালক হয়ে স্মৃতির ভিতর ঝরে… স্মৃতির বুকে খোদাই হয়ে আছে এ মাটির শ্রেষ্ঠ সময়ের ইতিহাস।
আগুন…বারুদ… আর্তনাদ…রক্ত…বিচ্ছেদ …অশ্রু … হাহাকার… ক্ষোভ … ঘৃণা … আক্রোশ … জেদ … প্রত্যয় … প্রতিজ্ঞা … যুদ্ধ … বিজয়… সৃষ্টির প্রেরণা …
তীরহারা সেই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিয়ে যারা ভালোবাসার স্বদেশকে স্বাধীনতার সূর্যের দিনের কাছে, সুখী নিরাপদ রাতের কাছে পৌঁছে দেবার স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলেন; ঝর্ণা থেকে হয়ে উঠেছিলেন এক একজন আগ্নেয় গিরি, কঠিন শপথে সহজ হাসি মাখা স্বচ্ছ চোখের জলে জীবন দিয়ে গেছেন, কিম্বা দিয়েছেন খুব প্রিয় কিছু, দিয়েছেন সোনালি সময়, ইতিহাসের পাতায় স্বাক্ষর করেছেন সেরা মানুষ হিসাবে – তাঁদেরকে সালাম। সর্ব শক্তিমান দয়াময় স্রষ্টার কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ। তিনি এই মাটিতে যুগে যুগে পাঠিয়েছেন স্বপ্নচারী সাহসী মানুষ।
’৭১ এবং এর পূর্ববর্তী, পরবর্তী দুঃসাহসী যোদ্ধাদের জন্য আমাদের এই শ্রদ্ধাঞ্জলি!!!
পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে যারা চলে গেছেন তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি। অন্য পৃথিবীতে তাঁরা সম্মানিত হয়ে থাকুন। যারা এখনো আমাদের মাঝে আছেন তাঁদের সম্মানিত জীবনের সুখ দুঃখের সাথী হবার আশা রাখি। মহান আল্লাহ আমাদের মনের এই একান্ত ইচ্ছা পূরণ করুন। আমরা যেন আমাদের কৃতজ্ঞতা টুকু প্রকাশ করতে পারি, নিজেদের বিবেকের কাছে নিরপরাধী হয়ে ভোগ করতে পারি সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং সুখ।
কিন্তু আমাদের অনেকের ভিতরেই দেখতে পাই কৃতঘ্ন বৈশিষ্ট্য। মাঝে মাঝে মনে হয় বাঙ্গালী স্বাধীনতা চেয়েছিল না সোনার খাঁচা। না হলে স্বাধীনতার সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেও তারা ‘পাকিস্থানী’ হতে চায়!!! তারেক মাসুদের ‘মুক্তির কথা’ ছবির একটি দৃশ্যের কথা বলতে পারি। সেখানে এক সামান্য মানুষের জবানবন্দী বিধৃত হয়েছে। তার গ্রামে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে এক রাজাকার। সামান্য মানুষটি বলছেন, ‘ যদি আমরা রাজাকার নির্বাচিত করে থাকি, তাহলে আমরা নব্বই ভাগই তো রাজাকার হয়ে গেছি। কুত্তার মতো হয়ে গেছি, না হলে রাজাকার চেয়ারম্যান বানাই।’ এই উপলব্ধিটা এখনো আমাদের মত সাধারণ মানুষদের ভিতর আছে।
থার্মপলির যুদ্ধে গণতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে সব গ্রীক সৈন্য নিহত হয়েছিল – তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে যে ফলকটি প্রোথিত হয়েছিল, তার গায়ে প্রাচীন গ্রীক ভাষায় যা লেখা আছে তার ইংরেজী তর্জমা-
“let it not be forgotten, for your to-morrow we have given our to-day”
“ভুলে যেও না, তোমাদের আগামী দিনের জন্য, আমরা আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে গেলাম।”
আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ গন ও অগনিত নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জন্য তাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে গেছেন। আজ তাদের জন্যই আমার মায়ের ভাষায় আজ বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আমি এই লেখাটি লিখে যেতে পারছি। আমার এই শ্রদ্ধাঞ্জলি তাদের জন্য এবং যারা বীরত্তের সাথে যুদ্ধ করে এখনো বেঁচে আছেন তাদের জন্য ও। আজ শ্রদ্ধাবনত চিত্তে আমরা সবাই তাদের স্মরণ করছি!!! তোমরা আমাদের জন্য একটি মানচিত্র… ভু-খন্ড … গর্ব করার মত জাতিসত্তা দিয়ে গেছ। এটা রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল আমাদের। জানি না আমরা কতটুকু পারছি? কিন্তু দেশপ্রেমের শক্তিতে উন্মত্ত হয়ে ব্যক্তিসবার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে প্রাণ বিসর্জন দেবার দৃঢ় অঙ্গীকারের ঘোষণা দেবার সময় এসে গেছে। বিজয় দিবসের এই প্রহর থেকে আসো সবাই প্রতিজ্ঞা করি…
‘… এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পীঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব-তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি –
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। …’
বীরদের কাহিনী থাকুক আমাদের প্রতিদিনের জীবন যুদ্ধের প্রেরণা হয়ে , বিজয়ের আশা হয়ে।।
loading...
loading...
’৭১ এবং এর পূর্ববর্তী, পরবর্তী দুঃসাহসী যোদ্ধাদের জন্য আমাদের এই শ্রদ্ধাঞ্জলি!!! বাংলাদেশ স্বৈরতন্ত্রমুক্ত হোক; জগদ্দল মুক্ত হোক। বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।
loading...
বাংলাদেশ চিরজীবি হোক- আমীন।

loading...
‘আমার দেশের মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন

শ্যামল কোমল পরশ ছাড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন…’
loading...
ধন্যবাদ রিয়াদি'
মাতৃভূমি সব সময়ে ভালো থাকুক।

loading...
মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি। শুভেচ্ছা মহ. আল মামুন ভাই।
loading...
ধন্যবাদ প্রিয় কবিদা'
শুভেচ্ছা…

loading...