একদিন হঠাত করে শিহাবকে খুজে পাওয়া যায় না। মা এবং বউকে ঘিরে চলছিলো দ্বন্দ। মাঝখানে শিহাব। হারিয়ে যাচ্ছিলো জীবনের ছন্দ।
সবাই থমকে গেলো। মা এবং বউ একই বাড়িতে থেকেও মুখ দেখাদেখি নাই। আলাদা পাক। আলাদা বলতে শিহাবের বউ বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খায়। মা একাই রান্না করেন।
কিন্তু শিহাবের নিখোঁজের পরে ২২তম দিনে মা এবং বউয়ের মধ্যে হাল্কা সমঝোতা হলো। শিহাবকে খুজে পেতে যৌথ অপারেশন সার্চলাইট চালাতে ওনারা এক হলেন।
থানা পুলিশ, পরিচিত আত্মীয়স্বজন, বোর্ডিং হাউস, হোটেল এমনকি একটা পতিতালয়েও খোঁজ নেয়া হলো।
নেই। শ্রেফ নাই হয়ে গেছে শিহাব। মা নিরবে কাদেন। বউ বোবা হয়ে থাকে। মায়ের চোখের জল বউ মুছে দিতে পারে না। মা বউকে দু’একটা কথা বলেও শান্তনা দিতে যান না।
একদিন বউয়ের নামে একটা চিঠি এলো। প্রেরকের জায়গায় নিজের পরিচিত মানুষটির নাম সামান্য আশার আলোকরশ্মির উজ্জ্বলতায় বউয়ের হৃদয় আলোকিত করেছিলো কিনা তা আজ আর জানা যাবে না। তবে সে যখন অধোঃবদনে মায়ের সামনে চিঠিটা পড়তে দিয়ে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো- তখন আমরা সবাই জানতে পারলাম শয়তানের মাছি সম্পর্কে!
অবাক হচ্ছেন?
হ্যা, ঠিকই ধরেছেন আপনারা। বউকেই শিহাব চিঠিতে শয়তানের মাছি সম্বোধন করেছিলো।
অপরের চিঠি পড়াটা অশোভনীয়; কিন্তু আমরা একটা হারিয়ে যাওয়া লোকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করছিলাম, তাই এই চিঠিটা পড়া যেতেই পারে।
“প্রিয় শয়তানের মাছি”
আমি জানতাম শেষ পর্যন্ত মায়ের কাছেই নিয়ে যাবে তুমি চিঠিটা। সেই গেলেই যখন, আমি থাকা অবস্থায় একটু সমঝোতা করলে আজ এটা লিখতে হতো না। যাইহোক, আমি নাই, কোথায় আছি তাও জানি না।
আমি দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে, গৌতম বুদ্ধের মতো নিরবে নিভৃতে ধ্যান এবং সাধনা করে একটা বিশেষ জিনিস পেয়েছি। সেটা হলো- একজন পুরুষের তার জীবদ্দশায় তিনবার সুন্নতে খতনা করা উচিত।
প্রথমতঃ বাবা-মা নিজেদের মতো করে সামাজিক ভাবে যখন করান। সাধারণত প্রাক-প্রাথমিক যুগেই আনন্দ-হুল্লোরের ভিতরেই এটা করা হয়। বালকের ভয়ংকর একটা ব্যাপারে আত্মীয় স্বজনের আনন্দ এবং আয়োজন করে খানাপিনা।
দ্বিতীয়তঃ বালক যখন যৌবনপ্রাপ্ত হয়, তখন আরো একবার পুং দন্ড নির্দিষ্ট পরিমান কেটে ফেলেই দেয়া উচিত।
সর্বশেষঃ যখন তোমার মতো ‘শয়তানের মাছিকে’ বিয়ে করা হয়, তখন তৃতীয় দফায় দণ্ডটির অবশিষ্ট দুই- চতুর্থাংশের অর্ধেক কেটে ফেলে দিতে হবে।
প্রিয় মাছি! তুমি তো গণিতে খুব ভালো ছিলে জানতাম। আমাকে বলো, তাহলে দণ্ডটির বাকী রইলো কতটুকু?
গুড! ঠিক ধরেছ। এক চতুর্থাংশ রইলো। তোমার মতো শয়তানের মাছি পরিবারে প্রবেশের পরে ক্রমাগত ভন ভন শব্দের তাড়নায় যেটুকু রইলো তার অর্ধেক আবার খসে যাবে আপনাতেই। এরপর যেটুকু থেকে যাবে, তা মাছিদের কোনো কাজে লাগবে না বিধায় মাছিরা আগ্রহ হারিয়ে অন্য দিকে ডাইভার্ট করবে চিন্তাধারা। মা এবং বউয়ের মাঝে থাকতে হবে না পুরুষকে। সে তখন না মায়ের দিকেই, আর না বউয়ের দিকে- দুদিকেই ভারসাম্য বজায় রেখে বাস করতে পারবে।
দন্ড সম্পূর্ণ থাকলেই শয়তানের মাছির দিকে সম্পূর্ণ হেলে পড়ার প্রবণতা একশো ভাগ অধিকাংশ পুরুষের। মা তখন হয়ে পড়ে অচেনা কোন অজানা কল্পলোকের চরিত্র, যাকে না পারে শয়তানের মাছিরা সহ্য করতে; আবার মা চান না উড়ে এসে জুড়ে বসা তার দৃষ্টিতে অন্য বাড়ির এক মেয়ে, যার সাথে তার নাড়ি ছেড়া ধন একশো ভাগ হেলে পড়ুক।
এজন্য মায়ের নাড়ি ছেড়া ধনের আসল ধনই কমপক্ষে তিন কাটা দেয়া উচিত।
জগতের সকল অশান্তি পুরুষদের একটি বিশেষ মাংসপিণ্ডের কাটাকাটির উপরে…।।”
___________________________________________
#শয়তানের_মাছির_হাতে_এক_চতুর্থাংশ_পুংদন্ড_অণুগল্প_৪৪০
loading...
loading...
হাহাহা গল্প দা। আপনি রসিক মানুষ নিঃসন্দেহে।
loading...
*সুন্দর…
loading...
বেশ আলাদা মানের লিখা। গুড জব মি. মামুন।
loading...
বাহ! চমৎকার লিখেছেন প্রিয় লেখক! মনে হলো পুরুষদেরও "বউ বনাম মা" এর মাঝে অভিনয় করে টিকে থাকতে হয়।
অসাধারণ

loading...