তিয়া কিংবা ফিরে আসা তেতুল গাছ

তিয়া তার মায়ের উপর রাগ করেছে, খুব কঠোর রাগ। অকারণে মা তাকে বকেছে। ম্যাক কে শুধু চুমু খেয়েছে, ফিজিক্যাল হয়নি; এতেই মা ম্যাডের মত ব্যবহার করেছে।

তিয়া জানে সে সতেরো, পুরোপুরি এডাল্ট নয়। মায়ের নিষেধ আঠারোর আগে কোন ছেলের সাথে ফিজিক্যাল হওয়া যাবে না। সে এডাল্ট নয় মনে ছিল, তবুও ম্যাকের অনুরোধ না করতে পারেনি। শুধুমাত্র ওয়ান লিপকিস, তাও কয়েক সেকেন্ডের জন্য।

মা তার প্রতি অতিরিক্ত কঠোর, সব সময় চোখে চোখে রাখে। সে আঠারো নয় এজন্য তার যেন কোন স্বাধীনতা নেই। তার বয়সের অন্য মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের সাথে অনেক আগে ফিজিক্যাল হয়েছে, সে এখনো ভার্জিন।

তিয়া মন খারাপ করে বসে আছে। সে অপেক্ষায় আছে কবে আঠারো হবে, কবে মায়ের পিঞ্জর থেকে মুক্ত হবে।

তিয়ার বাবা সামাদ এতো রক্ষণশীল নন, তিনি কারো ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ঘোর বিরোধী তবু স্ত্রীর সামনে তিয়ার পক্ষ নিতে পারেন না। আঠারো পর্যন্ত তিয়ার স্বাধীনতা সীমিত। মা-বাবার কথা শোনা ছাড়া অন্য উপায় নাই।

বাবা ফিরলে তিয়া মায়ের অভিযোগ করে। বাবাকে বলে ‘আমি তোমাদের চাকর নই, তোমাদের মেয়ে, আমার সাথে চাকরের মত ব্যবহার করতে পারো না। আই হ্যাভ নট ডান এনিথিং রং, শী শুড নট হ্যাভ সাউটেড অ্যাট মি, ইফ ইউ ডোন্ট ওয়ান্ট মি হিয়ার আই ক্যান লিভ, আই ক্যান স্টে উইথ ম্যাক, হিজ প্যারেন্ট ওন্ট মাইন্ড’।

বাবা তিয়াকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। বুঝাবার চেষ্টা করেন মা তাকে ভালবাসে, তার ভাল চায়। এইজন্য একটু কঠোর হয়। বাবা বলেন ‘ইউ নো শী ওয়ান্ট দা বেস্ট ফর ইউ, শী ওয়ান্টস ইউ টু আন্ডাস্ট্যান্ড গুড এন্ড ইভল’। তিয়া বলে ‘আই নো হোয়াট ইজ গুড ফর মি’। বাবা বলে ‘সিওর ইউ ডু, বাট প্যারেন্টস ডিউটি ইজ টু বি কন্সার্ন’। মেয়েকে কোন রকম শান্ত করে স্ত্রীর কাছে যান।

দুপুর বেলা ম্যারি স্কচ হাতে নিয়ে বসে আছে, তার মুখ থমথমে। সামাদ ভয়ে ভয়ে বলে ‘ডোন্ট বি টু হার্স অন হার ম্যারি, শী ইজ অনলি এ চাইল্ড’। ‘একজ্যাক্টলি শী ইজ অনলি এ চাইল্ড, শী শুড নো হার লিমিট’।

‘বাট’ সামাদ আরো কিছু বলতে চাইলো। ম্যারি তাকে থামিয়ে বলল ‘উড ইয়োর সোসাইটি এক্সেপ্ট ইট’? ‘উই আর নট ইন আওয়ার সোসাইটি ম্যারি’। সামাদ বলে। ‘বাট শী ইজ স্টিল ইয়োর ডটার’ ম্যারির উত্তর। ‘হোয়াই ডাজ নট শী আন্ডারস্ট্যান্ড শী এজ ফ্রম এ ডিফরেন্ট কালচার, আই নো উই লিভ ইন ওয়েস্টার্ন ওয়াল্ড, উই ক্যান নট পুট টু মাচ প্রেসার অন হার, বাট শী ক্যান নট ডু হার উইল আনটিল শী ইজ এইটিন, দ্যাটস ফাইনাল’।
ম্যারির সাথে কথাবার্তা আর এগুনো যাবে না ভেবে সামাদ পুনরায় মেয়ের কাছে আসে, মেয়েকে বুঝায় আর মাত্র এক বছর। তারপর সে পূর্ণ স্বাধীন। তিয়া বলে সে যদি ম্যাকের সাথে ফ্লেক্সিবল না হয় ম্যাক অন্য কারো কাছে চলে যাবে। ‘প্লিজ বি প্যাসেন্স মাই ডটার’। সামাদ বলে।

ম্যারি প্রায় বলে ‘ইউ হ্যাভ ফরগটন ইয়োর রুটস সামাদ’। সামাদ কিছু বলে না। একচল্লিশ বছরের মাঝে একবারও দেশে যায়নি, ম্যারি মিথ্যা বলে না। সামাদের কোন রুটস অবশিষ্ট নেই। গ্লাসে স্কচ ঢেলে বসার ঘরে চলে যায় সামাদ। অনেককাল আগে সে যখন দেশে থাকত তখন সতেরো বছরের একটা মেয়ে তেতুল গাছে ঝুলে ছিল, আত্মহত্যা না মেরে কেউ ঝুলিয়ে ছিল জানতে পারেনি। সে তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার বয়স তখন আঠারো হয়নি।

সামাদ পালিয়ে ইংল্যান্ড চলে এসেছিল, রিয়াকে তার বাবা চাচারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তার লাশ ঝুলেছিল তেতুলের গাছে।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
তিয়া কিংবা ফিরে আসা তেতুল গাছ, 5.0 out of 5 based on 1 rating
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২৪-১২-২০২২ | ১১:০০ |

    পড়লাম প্রিয় কবি আবু মকসুদ ভাই। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...