আমার আব্বা তাঁর দশ সন্তানকে কী কিছু শিখিয়ে যেতে পেরেছিলেন! সেরকম চেষ্টা করেছেন বলে মনে হয় না। প্রথাগত সদুপদেশ হয়তো শুনিয়েছেন অনেকবার কিন্তু আমল করার জন্য জোর করেননি। আমার আব্বার স্বভাবে জোর জবরদস্তি ছিল না।
তবে একটা কথা মন্ত্রের মত সবসময় আওড়ে যেতেন সেটা হচ্ছে ‘ভাল থাকা’। বলতেন ‘নিজে ভাল থেকো, অন্যকে ভাল রেখো’। তিনি সারাজীবন তাই করেছেন চরম দরিদ্রবস্থায়ও তিনি ভাল থেকেছেন, তাঁর ছেলে-মেয়েরা যখন যোগ্য হয়ে উঠেছে তখনো তাঁর ভাল অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ তিনি উচ্ছ্বসিত হননি, দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাননি।
আমার আব্বা অল্পে তুষ্ট মানুষ ছিলেন। জীবনের প্রতি তাঁর তেমন চাওয়া ছিল না। উচ্চাকাঙ্ক্ষার পিছনে দৌড়াতে হয়নি বলেই তিনি সৎ থাকতে পেরেছিলেন। আল্লাহ এবং তাঁর নবীর (সাঃ) প্রতি আব্বার ছিল শর্তহীন বিশ্বাস, আমাদের জানামতে কখনো কোন নামাজ কাযা করেননি। আল্লাহ যতটুকু নিয়ামত তাঁর জন্য বরাদ্দ রেখেছিলেন আব্বা তাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন। তাঁর জীবনে কোনদিন দুঃখবোধ ছিল না, নিজের প্রতি হতাশা ব্যক্ত করতে কোনদিন দেখিনি।
আব্বার অনেককিছু আমরা পাইনি কিন্তু ভাল থাকার মন্ত্র আমাদের দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। আমরা ভাই-বোনেরা নিজেদের মত ভাল থাকি, অন্তত নিজেদের ভালোর জন্য অন্য কারো মনোবেদনার কারণ হই না।
loading...
loading...
আল্লাহ যতটুকু নিয়ামত তাঁর জন্য বরাদ্দ রেখেছেন তিনি তাতে সন্তুষ্ট থাকুন। আমীন।
loading...