টিকর বাড়ির টিলা কিংবা জিন্দাপীর

‘টিকর বাড়ির টিলা’য় জিন্দা পীরের
মাজার আছে; জাগ্রত পীর। মানতের মহারাজা;
তেত্রিশ বছরের বাজ নারী পীরের
দয়ায় পেয়েছিল মাতৃত্বের স্বাদ।

উনচল্লিশের নপুংসক দ্বিতীয় বিবাহের পরে
তৃতীয় সঙ্গমেও তৃপ্ত, অতৃপ্তির কানাঘুষা
বিবাহের তৃতীয় বছরেও শোনা যায়নি।
সবই পীরের কারসাজি, আঠারো টাকার
মোমবাতি নপুংসক কে পুরোদস্তুর মানবে
রূপান্তরিত করে ফেলেছে।

তালেবুল এলেম পরকীয়ার ফাঁদে পড়েছিল
ধরা পড়ে প্রায় গায়েব হওয়ার যোগার।
পীরের মানতে পরকীয়ার স্বামী খালাস,
‘টিকর বাড়ির টিলা’র কবরে তালেবুল
ঢেলে ছিল শপথের মাটি; প্রেমিকা কে এবার
স্ত্রীর মর্যাদা দিতে ভুল করবে না।

এক বছর আগে যে অন্যের রিক্সায়
ভাড়া খাটত, আজ সে চারখানা রিকশার
মালিক। টং দোকানদার মার্কেটে দোকানের
স্বপ্ন দেখছে। আব্বাস গরু চোর হিসাবে
এলাকায় খ্যাত ছিল; পীরের মহিমায়
সে আজ নির্বাচিত। সবাই সমীহে
আব্বাস মেম্বারের নাম নেয়।

পীরের খ্যাতি দিনদিন বর্ধিত হচ্ছে, শত শত
মানুষ মানতের আশায় মাজারে ধর্না দিচ্ছে।

‘টিকর বাড়ির টিলা’র পীরের মালিক ধনী থেকে
ধনশালী হচ্ছে, এখনই একজোড়া পাজেরোর মালিক।

নতুন লালসালুতে আতর ছড়ানো শেষ হলে
একজোড়া খাসি, সাতটা মোরগ, আড়াই জোড়া
হাঁস, কয়েক ডজন লাউ, কুমড়া, পেপে,
দুইখানা শাড়ি একখানা লুঙী, নগদ উনিশ হাজার
সাইত্রিশ টাকা পাজেরোর উদর ভর্তি করে
পীরের মহিমা গাইতে গাইতে ফিরে যায়।
পীরের আশীর্বাদে তার রোজকার আয় মন্দ না।

কয়েক বছর আগে জিন্দা পীরের অস্তিত্ব ছিল না
স্বপ্নে স্থাপিত পীর এখন ‘টিকর বাড়ির টিলা’র পরিচয়।

‘টিকর বাড়ির টিলা’র জিন্দাপীর, মানতের মহারাজা
‘কেউ ফিরে না খালি হাতে’ বিফলে মূল্য ফেরত।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ২৩-০৮-২০২১ | ১১:০৭ |

    ধারাবাহিক এই কবিতার প্রতিটি দৃশ্যপট যেন ভীষণ রকমের উপলব্ধিময়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    GD Star Rating
    loading...