টিকর বাড়ির টিলা কিংবা আভিজাত্য

‘টিকর বাড়ির টিলা’র গণকবরে
একদিন নিজের কবর দেখেছিলাম;
অনাদরে পড়ে থাকা কবর।

মিউনিসিপাল কর্মী বছরে একবার
সংস্কারের জন্য আসে; বেছে বেছে
মোটাতাজা কবরগুলো মোটাতাজা
করে যায়। জীবিতকালেও দীন ছিলাম।
মৃত্যুর পরেও দরিদ্র রয়ে গেলাম।

একবার বন্যায় সারা শহর তলিয়ে
গেলেও ‘টিকর বাড়ির টিলা’ তার
মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখেছিল। শহরের
সবচেয়ে উঁচু টিবির গৌরবে সেদিন
অগুনতি শরীর তার মাটিতে স্থান
দিয়েছিল। বানভাসি অসহায় লাশের
সারিতে আহসান উল্লাকে আবিষ্কার করে
অবাক হয়েছিলাম। ‘টিকর বাড়ির টিলা’
তার জায়গা নয়। সুগন্ধিযুক্ত অভিজাত
পোশাকে সে যখন শহরের রাস্তা দিয়ে
হেঁটে যেত, লোকজন সমীহে সরে দাঁড়াত।

জীবিতকালে কোনদিন তার সারিতে
দাঁড়াতে পারেনি; মৃত্যু তাকে গণকবরে
নিয়ে এলো। আমার কবর দিনদিন শ্রীহীন
হচ্ছে, মিউনিসিপাল কর্মী যথেষ্ট মনোযোগ
দিচ্ছে না। মৃত্যুর পরেও মনোকষ্ট আমাকে
ছেড়ে যাচ্ছে না, আহসান উল্লার মনের খবর
জানতে ইচ্ছে করছে। আমার সারিতে তার কবরেও
উল্লেখযোগ্য উন্নতি নেই, তার কবরও আমার
জীবিত জীবনের মতো শ্রীহীন।

জীবিত কালে সাম্যের গান গেয়েছিলাম;
কিন্তু কোনদিনই সমতায় দাঁড়াতে পারিনি। মৃত্যু
সমান অধিকারের স্বপ্ন মুছে দিয়েছে
ভেবে হাপিত্যেশ করেছি; কিন্তু না,
মাটির নিচে আভিজাত্য কাজে আসে না
মাটির নিচে আমি এবং আহসান উল্লাহ
এক সমতায় শুয়ে থাকি।

GD Star Rating
loading...
GD Star Rating
loading...
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের,লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১টি মন্তব্য (লেখকের ০টি) | ১ জন মন্তব্যকারী

  1. মুরুব্বী : ১৪-০৮-২০২১ | ১১:১৫ |

    যাপিত জীবনে ভাবনা বিশেষের খণ্ডাংশ পড়লাম। ভালো থাকুন প্রিয় কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    GD Star Rating
    loading...