প্রতিদিন কিছু না কিছু হারিয়ে যায়
গত বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীর উপহার
হাতঘড়ি, সময়ের বেখেয়ালে
কোথায় যে হারিয়ে গেল।
ঘড়ির জন্য কাতর ছিলাম
তবু স্ত্রীর তীর্যক তীর থেকে
রক্ষা পেলাম না। অবহেলা।
তার, তার উপহারের প্রতি
ব্যাপক অবহেলা।
জন্মদিনে মেয়ে ছাতা উপহার
দিয়েছিল, বাবার মাথায় বৃষ্টির
ফোটা দাপট দেখায়। তীব্র রোদে
চামড়া ফেটে যায়। বাবার
বিড়ম্বনায় মেয়ের মায়ার উপহার
সেও হারিয়ে যায়। যত বলি
নিয়ে যাইনি ঘরে কোথাও আছে।
বিশ্বাস করে না, হারানো বাতিকের জন্য
বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যের কোঠায়।
ছেলেকে নিয়ে চার লাইনের পদ্য
লিখেছিলাম, খুশি হয়েছিল।
প্রথম রোজগারে লেখক বাবার জন্য
কলম কিনেছিল, দামি কলম।
লেখকের জন্য গৌরবের উপহার
কলম কপালের ফেরে হারিয়ে যায়।
ছেলের কাছে মুখ দেখাতেও
লজ্জা লাগে। ছেলে অবশ্য মহৎপ্রাণ
পুনরায় লেখক বাবার মর্যাদা
রক্ষায় অবতীর্ণ, পুনরায় দামি কলম।
প্রতিদিন কিছু না কিছু হারিয়ে যায়
তেরশ কবিতার পাণ্ডুলিপি হারিয়ে গেছে।
রবীঠাকুর, জীবনবাবুর পরে জানান দিতে
তৈরি পাণ্ডুলিপি হারিয়ে গেছে। পাড়ার
সাহিত্য আড্ডায় পঠিত হবে বলে
নিয়ে গিয়েছিলাম, প্রশংসা উত্তর
বেলুনের মত ফুলতে ফুলতে ঘরে
ফিরে দেখি পাণ্ডুলিপি হাপিস।
তন্ন তন্ন করে খুঁজেও হদিস পাইনি।
পাড়ায় নতুন কবি আবির্ভূত হয়েছে
নতুন ধারার কবিতা প্রসব করে সবার
নজর কাড়ছে। পড়ে মনে হয়
কবিতা গুলো আমার লিখনি।
প্রমাণের অভাবে হাত কামড়ানো
ছাড়া কিছুই করতে পারি না।
প্রতিদিন কিছু না কিছু হারিয়ে যায়
হারিয়ে ফেলেছি বেদনার কবি জীবন।
loading...
loading...
অনুপম কাব্যসুধা,
loading...
অসামান্য অনুভবের অমিয় শব্দ প্রকাশ। ভালো থাকুন প্রিয় কবি প্রিয় মকসুদ ভাই।
loading...