সাজ্জাদ হোসেন একটা কর্পোরেট হাসপাতালে চাকুরী করেন, একাউন্টস বিভাগের জুনিয়র এক্সিকিউটিভ। ভালো বেতন পান, ওভারটাইমও পান- তাই ডিউটি টাইম আর সাপ্তাহিক ছুটির ঠিকঠিকানা নাই।
বাড়ির বাজার সাজ্জাদকেই করতে হয়। তিন মাস আগে বাজার করতে গিয়ে ব্যাপারটা প্রথম ঘটে। সে তিন কেজি ফার্মের মুরগি কিনেছে। দোকানী মুরগী জবাই করে ড্রেসিং করছে। অন্য মুরগিগুলো নির্বিকার। সাজ্জাদের মনে হচ্ছে এগুলো মুরগি নয়, কর্পোরেট হাসপাতালের সাদা বিছানায় সাদা চাদর গায়ে জড়িয়ে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষমান রুগি। যারা প্রতিদিন মৃত্যু দেখে দেখে প্রতিক্রিয়াহীন, নিজে বেঁচে আছে এই আনন্দেই ককক্ক..ক্ক..ক..ক..ক।
সাজ্জাদ রোগীদের মুরগি ভেবে প্রথম ক’দিন খুব মজা পেয়েছিল। কিন্ত সময়ের সাথে সাথে সমস্যা প্রকট হয়েছে। একমাস যাবত সে মুরগির মাংস খেতে পারেনা। মনে হয় কর্পোরেট হাসপাতালের রোগীদের মাংস খাচ্ছে- নাড়িভুড়ি উল্টে বমি আসে। আবার হাসপাতালে মুরগীর ফার্মের বিশ্রী গন্ধটা পায়। নিজের গায়ে পায় ড্রেসিং করা মুরগির গন্ধ। বহুকষ্টে বমি আটকায়। তার মনে হয় হাসপাতাল একটা আদম-মুরগির খামার। এমডি স্যার খামারের মালিক। রোগিরা মুরগি আর ডাক্তাররা মালিকের নির্দেশে তাদের পরিচর্যা করছে জবাইয়ের জন্য। জবাই শেষে কেউ বাড়ি ফিরে যাবে, কেউ গোড়ে।
সাজ্জাদ প্রতিদিন ভাবে হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের প্রখ্যাত কোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবে। কিন্তু ফার্মের ব্রয়লার মুরগিতে পরিণত হয়ে যাবার আতংকে দোতলার একাউন্টস সেকশন থেকে তিন তলায় বিশেষজ্ঞের চেম্বারে যাচ্ছি যাচ্ছি করে যাওয়া হয় না- শরীরে মুরগির বোটকা গন্ধটা প্রতিদিন বেড়ে যায়।
loading...
loading...
অ সা ধা র ণ।
loading...
*ঈদ মোবারক প্রিয় গল্পকার।
loading...