: মিজাইন্যারে ইয়াদ আছে! আফসু মাহাজনের শাড়ীর দোকানের ম্যানেজার আছিলো। আমগো দোকানের উলটা দিকে বইতো।
: মিয়া, তুমি বিতলা মিজানের কথা কইতাছো! ঐ যে ইন্দুরের উতপাতের সময়ে এক দামড়া ইন্দুরের পুঁটকিতে সিলি কইরা দিছিল?
: হ, হ, বিতলা মিজান, এক ইন্দুরের পেরেসানীতে বেবাগ ইন্দুর ভাগছিল, আফসোস, বুঝলা মিয়া, আফসোস..
: কেলা! যুদ্ধ শ্যাষ, আফসোস কিয়ের! বিতলা হালার খবর কি!
: মিজানের চাচাতো ভাই তাইজু আইছিল কাইলকা, বহুত কথা কইলো ।
: কি কইলো? বিতলা হালায় যুদ্ধে গেছিলো না কি?
: না, বউ রাইখা বিতলা হালায় যুদ্ধে যাওনের নিওত করছিল। মাগার পর্থম বাচ্চা হইছে। তাও আবার পোলা। মায়া কাটায়া আর যুদ্ধে যাইতে পারে নাই।
: এইবার বিতলা হালার বিতলামী যদি কমে! ঢাকায় আইবো কবে- তাইজু কইছে?
: তাইজু কইলো মিজাইনা ওর দোস্ত ভূপেনরে বউ-বাচ্চাসহ নিজের বাড়িতে ছাপায়া রাখছিল। রেজাকাররা এই খবর মিলিটারিরে দেয়। মিলিটারি মিজানের বাড়িতে আয়ে।
: বিতলা হালায় বুঝি মিলিটারির পুঁটকিতে সিলি কইরা দিছিলো- ইন্দুরের মতন?
: দূর মিঞা, আগে কথা শুনো, মিলিটারি পরথমে মিজানের পাঁচ মাস বয়সের পোলাটারে বন্দুকের বেনেটে গাইথা বারিন্দায় ঝুলায়া রাখছে। তারপরে মিজানের বিবি শাহনাজ আর ভূপেনের বিবি দিপালীর ইজ্জত লুটছে।
: কও কি হালায়?
: হ, তারপরে বেরাশ ফায়ার কইরা বেবাকরে মারছে। মারনের আগে মিজানের সামনে বাচ্চা পোলার মাথাটা বুট দিয়া থেতলায়া দিছে।
: হালারা কি মানুস না খবিস!
বিজয়ের চারদিন পরে সদরঘাটে পুড়ে যাওয়া এক শাড়ীর দোকানে দুজন প্রবীণ মানুষ পরস্পরের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন। অকারণেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। তারা জানেন কোন কোন প্রশ্নের কোন উত্তর হয়না।
loading...
loading...
অসাধারণ উপস্থাপনা।
loading...
মারনের আগে মিজানের সামনে বাচ্চা পোলার মাথাটা বুট দিয়া থেতলায়া দিছে।
: হালারা কি মানুস না খবিস!
শ্রদ্ধা লেখক বন্ধু। একটি নতুন অবয়বের স্বাদ পেলাম।
loading...
আগের লেখার পরবর্তী এই লেখা। যুদ্ধ সময়ের গল্প। দারুণ উপস্থাপন।
loading...
মন্তব্য করেছেন : ০
নিজের পোস্টে : ০
অন্যের পোস্টে : ০
ভালো।
loading...