দৃশ্য – ১১
লোকেশনঃ ঘরের ভিতর খাওয়ার সময়
নাজির আর দাদা যেখানে খাওয়ার জন্য বসল তার সাথে ভাঙ্গা একটা চাটাই এর বেরা দিয়ে আলাদা করা হয়েছে দাদীর ঘরটা। আর সেখানেই রাখা রান্না ঘরের সব জিনিসপত্র। রীপা ঐ ঘর থেকে পানির জগ, গ্লাস, প্লেট, ভাত, তরকারি সব একে একে এনে নাজির ও দাদার সামনে রাখল। একটা বাটিতে দাদা ও নাজির হাত ধূয়ে সারতে সারতে রীপা তাদের প্লেটে ভাত দিয়ে দিচ্ছে।
নাজিরঃ এ… এই …. এ কী করছ!!! অল্প করে দাও। আগে অল্প করে খেয়ে দেখি তোমার রান্না কেমন?
রীপাঃ আমি তো ছোড মানুষ। আমার রান্না তো আপনার মজা লাগত না। [বলতে বলতে দাদার প্লেটে ভাত দেয় রীপা।]
দাদাঃ রীপা বইন….. আমরা নিজেরা নিয়া খায়। তুই এই ফাঁকে তোর দাদীরে একটু খাওয়াদে।
[রীপা একটা বাটিতে ভাত নিয়ে দাদীর কাছে চলে যায়। দাদীকে সে মুখে তুলে খাওয়ায়ে দেয়। দাদা নিরবে ভাত খায়। কোন কথা বলে না। তার চোখ দুটি ছল ছল করছে। তার চোখে পানি কেন বুঝতে পারে না নাজির। কয়েকবার তাকিয়ে দাদার চোখের দিকে লক্ষ্য করার চেষ্টা করে নাজির। কোন প্রকার কথা না বলে খুব দ্রুত খাওয়া শেষ করে উঠে নাজির।]
নাজিরঃ দাদা আমার খাওয়া শেষ। আপনি খাওয়া শেষ করেন। আমি বাইরে আছি।
[বলেই নাজির বাহিরে চলে আসে। আশপাশটা দেখে। হঠাৎ মনে হল হালকা একটা কান্নার আওয়াজ। নাজির একটু এগিয়ে যায় ঘরের দিকে। তারপর একটু উকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে ভিতরে কি হচ্ছে। নাজিরের চোখ জলে ভরে আসে। ঠোট দুটি কেপে উঠে। রীপা ভিতরে ভাত খাচ্ছে। পাশে দাদা দাড়িঁয়ে।]
দাদঃ কিরে বইন কান্দস কেরে?
রীপাঃ কেরে কান্দি বুঝনা!! [মুখে ভাত নিয়ে কথা বলে রীপা।]
[দাদার পা জড়িয়ে ধরে কাদঁছে। হঠাৎ দাদার পা ছেড়ে দিয়ে মুখে ভাত থাকা অবস্থায় মুখে আরো বড় এক লোকমা ভাত পুরে দেয় রীপা। কান্না তার থামতে চায়না।]
দাদঃকি অইছে আমারে ক।
রীপাঃ সুখে কান্দি। দাদা অমারা আজ কত দিন পর কউছে; পেট ভইরা ভাত খায়লাম। দাদা ভাত……
[রীপা ফুপিয়ে কাদঁছে আর ভাত খাচ্ছে। নাজির আর নিজেরে ধরে রাখতে পারছেনা। তার বুক ফেটে কান্না আসছে।]
নাজিরঃ [নাজির একা একা বলেতে থাকে…..] মানুষ ভাতের জন্য কান্দে!! মানুষ এক মুঠো ভাতের জন্য অপেক্ষা করে অনন্ত সময়। হায়রে জীবন। কেউ ভাত নষ্ট করে উল্লাস করে। আবার জীবনের অন্য পিঠে ভাতের জন্যই হা-হা-কার করে জীবনের অস্তিত্ত্ব। এটাই কি জীবনের অর্থ!!!!
নাজির চুপচাপ ঘরের একটা কোনায় এসে দাড়াঁয়। নাজিরের চোখে এখনো পানি। বুকের ভিতর একটা চাপা কষ্ট অনুভব করে। নেজের চোখ মুছতে মুছতে আকাশের দিকে তাকায়। বিরবির করে বলতে থাকে—
নাজিরঃ এটা তোমার কেমন বিচার খোদা!! একটা বাচ্চা মেয়েকে কেন এত কষ্ট দাও? এটাতো নিঃপাপ। বুঝিনা খোদা বুঝিনা……. তোমার খেলা বুঝিনা। [নাজিরের চোখের কোনা দিয়ে আবার পানি ঝরতে থাকে।]
________________________________
নাটকঃ এক খন্ড জীবন [ পর্ব-১]
নাটকঃ এক খন্ড জীবন [ পর্ব-২]
নাটকঃ এক খন্ড জীবন [ পর্ব-৩]
নাটকঃ এক খন্ড জীবন [ পর্ব-৪]
loading...
loading...
এই পর্ব পড়ে অশ্রুসিক্ত হলাম মি. ফেনা। ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা জানবেন। ধন্যবাদ।
loading...
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা।
loading...
খাবার ঘর এর দৃশ্যায়ণ। নিম্ন বিত্তের এই দৃশ্য সাধারণত মনখারাপির হয়। ভালোবাসা।
loading...
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।
loading...
ভালো দৃশায়ণ ফেনা ভাই। অভিনন্দন। ব্লগে অনেক পোস্ট আছে পড়ে দেখতে পারেন।
loading...
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। জি পড়ে নিব।
loading...
ভালো হয়েছে এই পর্বটিও।
loading...
ধন্যবাদ আপু।
loading...
আগের গুলোন পড়া আছে। চালিয়ে যান।
loading...
উতসাহ দিবার জন্য অনেক ধন্যবাদ। সাথে থাকুন।
loading...
ধারাবাহিক পড়ে চলেছি দাদা।
loading...
আপনার জন্য
ভাল থাকুন সতত।
loading...
৪টি পর্বই পড়া হলো।
loading...
অনেক ধন্যবাদ। সাথে আছেন বলেই চলছি..
loading...